E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরে পূজা দিলেন মোদি

২০২১ মার্চ ২৭ ১২:৩২:৪৬
সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরে পূজা দিলেন মোদি

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাতক্ষীরার শ্যামনগরের ঐশ্বরীপুরের যশোরেশ্বরী মন্দিরে পূজা দিয়েছেন 

নরেন্দ্র মোদী শ্যামনগরের যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরে ৪০ মিনিট অবস্থান করেন। শনিবার সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে তিনি হ্যালিকপ্টারযোগে ঈশ্বরীপুর এ সোবহান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে হেলিপ্যাডে নামেন। এরপর মোটর শোভাযাত্রার মাধ্যমে পৌনে এক কিলোমিটার দুরে যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরে প্রবেশ করেন।

এসময় মন্দিরের সেবাইত পরিবারের সদস্য কৃষ্ণা চট্রোপাধ্যায় মন্দিরে ফুল, চন্দন ও মঙ্গল প্রদীপ জালিয়ে দিয়ে তাকে বরণ করে নেন। মন্দিরের সেবাইত জয়ন্ত চট্রপাধ্যায় কিছুক্ষণ মন্দির সম্পর্কে নরেন্দ্র মোদীকে অবহিত করেন। এরপর সবার সাথে কুশল বিনিময় শেষে মন্দিরে প্রবেশ করেন তিনি। সনাতন ধর্মাবলম্বী নারীরা তাকে পুষ্প বৃষ্টি, উলু ধ্বনি, শঙ্খ ধ্বনি, ঢোল ও কাঁসর বাজনার মধ্য দিয়ে তাকে স্বাগত জানান। পরে পুরোহিত দিলীপ মুখার্জী তাকে মন্ত্র পাঠ করান ও পুজা দিতে সহায়তা করেন।

নরেন্দ্র মোমি ৭মিনিট ধরে পূজা দেন। এর আগে তিনি মন্দিরটি তিনবার প্রদক্ষিণ করেন। পরে তাকে মন্দিরের পক্ষ থেকে উত্তরীয় পরিয়ে দেয়া হয়। তিনি উত্তরীয়টি উপহার হিসেবে সাথে নেন। এছাড়া তিনি মন্দিরের রীতি অনুযায়ি প্রতিমায় সোনার মুকুট,শাড়ি ও ফুলের মালা পরিয়ে দেন। পরে তিনি মন্দির ঘুরে দেখেন এবং বিশ্রামাগারে কিছুক্ষণ বিশ্রাম করেন। বিশ্রাম শেষে ১০.৩৫ মিনিটে তিনি হ্যালিকপ্টারে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশ্যে রওয়না দেন।

মন্দির ত্যাগের আগে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে আলাপকালে নরেন্দ্র মোদী জানান, যশোরেশ^রী কালীমন্দিরে আগত পূণ্যার্থীদের জন্য কোন বিশ্রামাগার নেই। তাই ভারতের অর্থায়নে সেখানে একটি ভবন নির্মাণ করা হবে,যাতে পূণ্যার্থীরা সেখানে থাকতে পারেন।

তিনি আরো জানান, মা কালীর কাছে প্রার্থনায় করোনামুক্ত পৃথিবী চেয়েছেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ঠ নাট্যকার ও মন্দিরের সেবাইত জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় জানান, বংশানুক্রমিকভাবে ৪১ পুরুষ ধরে মন্দিরের সেবাইতের দায়িত্ব পালন করছেন তারা। নিরাপত্তার স্বার্থে শুধু তাদের পরিবারের ৫জন ও জেলা কর্মকর্তারা ৫জন মন্দিরে প্রবেশ করতে পেরেছেন। এছাড়া জেলার ৪জন সংসদ সদস্য মন্দিরে উপস্থিত ছিলেন। তবে নরেন্দ্র মোদী চলে যাওয়ার পর মন্দিরে জনতার ঢল নেমেছে বলে জানান তিনি।

তিনি আরো জানান, নরেন্দ্র মোদী মা কালীর ভক্ত। এটা মাতৃশক্তিপীট। সতীর যে ৫১ খন্ড পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া হয়েছিল,তার মধ্যে ৪পীঠ জাগ্রত। জাগ্রত পীঠগুলো হলো, কোলকাতার কালীঘাট, কামরুপের কামাক্ষা,পাকিস্থানের হিংলজ ও সাতক্ষীরার যাশোরেশ্বরী কালীমন্দির। একারণেই তিনি এই শক্তিপীঠে পূজা দিলেন।

পুরোহিত দিলীপ মুখার্জী জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পূজার কাজে পুরোহিত হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পেরে তিনি গর্বিত। তবে ব্যক্তিগতভাবে প্রণাম জানানো ছাড়া কোন কথা হয়নি তার সাথে।

তিনি আরো জানান, অনাদিকাল থেকে যশোরেশ্বরী কালীমন্দির। সতির ৫১ পীঠের এক পীঠ এখানে। এটা শক্তি পীঠ। ৫টি দেশে ৫১পীঠ ছড়িয়ে আছে। প্রথমে অনারী নামের এক ব্রাহ্মণ মন্দিরটি খুজে পেয়ে সংস্কার করেন। পরে ধেনুকর্না নামের এক নৃপতি,পরে লক্ষণ সেন সংস্কার করেন। এরপর রাজা প্রতাপাদিত্য মন্দিরটি সংস্কার করেন। নরেন্দ্র মোদী এখানে আসার পরে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এর গুরুত্ব আরো বেড়ে গেল।

প্রসঙ্গত, যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরে নরেন্দ্র মোদীর আগমনকে নিশ্চিদ্র নিরাপদ করতে ৪ স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সদস্যরা। এক হাজার ৩০০ পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ২০০ পুলিশ সদস্য সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করেন। সিসিটিভি’র আওতায় ছিল পুরো দু’কি:মি: এলাকা। হেলিপ্যাড থেকে মন্দির পর্যন্ত সড়ক বর্ণিল সাজে সাজানো হয়,দু’দেশের জাতীয় পতাকা,দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর ছবি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ছবি দ্বারা।

(আরকে/এসপি/মার্চ ২৭, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test