E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

৫১ সদস্য দ্বারা ভোট প্রয়োগে মাছপাড়ার ঘরে ঘরে পৌঁছাতে পারে সহিংসতা

২০২১ মার্চ ২৯ ২৩:০৭:২৮
৫১ সদস্য দ্বারা ভোট প্রয়োগে মাছপাড়ার ঘরে ঘরে পৌঁছাতে পারে সহিংসতা

আবুল কালাম আজাদ, রাজবাড়ী : সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। এ লক্ষ্যে ইউনিয়ন পরিষদ আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনও ইতিমধ্যে আচরণবিধি চূড়ান্ত করে ফেলেছে বলে শোনা যায়। তবে ইউপি সদস্য পদে নির্বাচন করতে সংশয় বোধ করছে রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার মাছপাড়া ইউনিয়নের একাধিক নবীন ও প্রবীণ ইউপি সদস্য প্রার্থী।

স্থানীয় সরকারব্যবস্থা, বিশেষত ইউনিয়ন পরিষদ হলো জনগণের দোরগোড়ার সরকার। তাই এর মাধ্যমেই ‘গ্রাস রুট ডেমোক্রেসি’ বা তৃণমূলে গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। আর নির্বাচনের মাধ্যমেই তা ঘটে থাকে। তবে এ ক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য পদে এই অধিকার কতোটা কার্যকর হবে সেটা নিয়েই প্রশ্ন জেগেছে মাছাপাড়ার সাধারণ ভোটার ও ৯টি ওয়ার্ডে সম্ভাব্য একাধিক ইউপি সদস্য (মেম্বার) প্রার্থীর মধ্যে।

গণতন্ত্র হলো জনগণের সম্মতির শাসন এবং এই সম্মতি অর্জিত হয় জনগণের ভোটের মাধ্যমে। কিন্তু মাছপাড়াতে জনগণের ভোটের এই অধিকার প্রতিষ্ঠিত হতে রয়েছে একাধিক বাঁধা। এছাড়া শৃঙ্খলা আরোপের অভিজ্ঞতাও ইতিবাচক নয়। এই ইউনিয়নটি ভোট হয় ৫১ সদস্য বিশিষ্ট ইউনিয়নের ওয়ার্ডে থাকা আওয়ামী লীগের কমিটিতে থাকা সদস্যদের মাধ্যমে। তাদের ভোটেই নির্বাচিত হয় ইউপি সদস্য।

কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, দলের পক্ষ থেকে এসব অপকর্মের হোতাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার দু-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া তেমন কোনো দৃষ্টান্ত নেই। বরং রাজনৈতিক দলের আশ্রয়-প্রশ্রয়েই অধিকাংশ দুর্নীতি ও অপকর্ম হয়ে থাকে। গণতান্ত্রিক, স্বচ্ছ ও দায়বদ্ধ রাজনৈতিক দলই গড়ে ওঠেনি এখানে। এই ইউনিয়নের রাজনীতিবিদরা অনেকটা ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটের মতোই আচরণ করে।

সাধারণত জয়-পরাজয়ের উত্তাপে নির্বাচনের দিনেই সহিংসতা ঘটে থাকে, কিন্তু বিগত দিনে এই ইউনিয়নের নির্বাচনে অনেক আগ থেকেই ছিল তার শুরুটা।

৫১ সদস্য বিশিষ্ট আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড কমিটি দ্বারা ভোট প্রয়োগ ও ইউপি সদস্যদের জন্য উক্ত ইউপি চেয়ারম্যানের তৈরি মনোনয়নের কারণে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতা এবার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে।

ক্ষমতাসীন দল থেকে চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুল ইসলাম ব্যুরো একাধিকবার নির্বাচিত হয়েছেন মাছপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। আর তিনি ক্ষমতায় থাকা কালীন প্রতিটি ইউপি নির্বাচনে ইউপি সদস্যদের ভোট হয়েছে ৫১ সদস্য দ্বারা। আর এবার এই জাতীয় কোনো প্রকার কার্যকলাপ ঘটলে ও এই ভাবে নির্বাচনের কারণে সহিংসতা ঘরে ঘরে পৌঁছাতে পারে, যা নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত কঠিন হবে বলে ইউনিয়নের একাধিক জনসাধারণের ধারণা।

এব্যাপারে আসছে আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাওয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন জানান, আমরা রাজনীতি করি কিন্তু এক্ষেত্রে চেয়ারম্যানের পছন্দ না হলে আমরা প্রার্থী হতে পারবো না। আর প্রার্থী হলে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির ভোট প্রয়োগের মাধ্যমে যোগসাজশ রেখে হারিয়ে দেওয়া হয় আমাদের। এখানে জনগণের পছন্দের প্রার্থী কিংবা ভোট প্রয়োগের কোনো প্রকার অধিকার দেওয়া হয়না। এবার আমরা এই ৫১ সদস্যের ভোটের প্রার্থী হতে চায়না। তাই নির্বাচন কমিশন যেন বিষয়টিকে আমলে নিয়ে এই বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে জনগণের ভোট প্রয়োগের অধিকার শতভাগ নিশ্চিত করে।

(একে/এসপি/মার্চ ২৯, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test