E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সুদের কারবারিদের ভয়ে সাড়ে ৩ বছর ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছে পাটনী পরিবার!

২০২১ মার্চ ৩০ ১৬:৫৮:১৪
সুদের কারবারিদের ভয়ে সাড়ে ৩ বছর ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছে পাটনী পরিবার!

স্টাফ রিপোর্টার : রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে বাড়ী-ঘর, জমিসহ সর্বস্ব বিক্রি করে টাকা পরিশোধ করার পরও অব্যহত চাপের মুখে সাড়ে ৩ বছর ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছে পাটনী পরিবার। পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। এলাকায় ফিরতে চাইলেও ভয়ে ফিরতে পারছে না।

জানা গেছে, উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের বাকসাডাঙ্গী গ্রামের মনোরঞ্জন সিকদার। পাটনী পরিবার হওয়ায় নারুয়া খেয়াঘাট ইজারা নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সহায়তায় জীবন যাপন করে আসছিলেন। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে কয়েকজন সুদে কারবারীর নিকট থেকে টাকা গ্রহণ করে। টাকা পরিশোধ করতে একমাত্র বসত ভিটা ও ঘরবাড়ী বিক্রি করে দেয়। পরে সাহাপাড়া বাসা ভাড়া করে থাকে। টাকা পরিশোধ করার পরও সুদে কারবারীদের অব্যহত চাপের মুখে সাড়ে ৩বছর আগে মনোরঞ্জন সিকদার, তার প্রতিবন্ধী স্ত্রী পুষ্পরানী সিকদার, ছেলে রতন সিকদার, পুত্রবধু অসিমা সিকদার রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যায়। পালিয়ে থেকে এখন মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। এলাকায় ফিরতে চেয়ে বিভিন্ন মানুষের কাছে ফোন দিয়ে অসহায়ত্ব প্রকাশ করছেন।

রতন সিকদার মুঠোফোনে বলেন, আমরা অসহায়, টাকা পরিশোধ করার পরও এখন পিতা-মাকে নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। আমরা এলাকায় ফিরতে চাই, আমাদের সহযোগিতা করেন।

মনোরঞ্জন সিকদার বলেন, সামান্য কিছু টাকা নিলেও তার জন্য আমি বাড়ী-ঘর, বসত ভিটা হারিয়েছি। টাকা পরিশোধ করলেও সরল বিশ্বাসে কাগজ ফেরত না নেওয়ায় এখনও তারা টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। আজ সাড়ে ৩ বছর পালিয়ে বেড়াচ্ছি। প্রতিবন্ধী স্ত্রী, সন্তান ও পুত্রবধুকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। আমি আমার জন্মস্থান নিজ গ্রামে ফিরতে চাই। আমার কি অপরাধ? আমার সরলতাই কাল হয়েছে। আমি যাদের সাথে ইতিপুর্বে ঘাট ইজারা নিয়েছিলাম, শুধু তারাই আমাকে মাঝে মাঝে সহযোগিতা করেছে। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। চেয়ারম্যান আমাকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।

নারুয়া খেয়াঘাটের ইজারাদারের প্রতিনিধি শরীফুল ইসলাম বলেন, আমি মনোরঞ্জন সিকদারকে কাকা হিসেবে জানি। সে পালিয়ে থাকার কারণে আমরা ঘাট ইজারা নিয়ে আসছি। তারপরও মোবাইলে যোগাযোগ করি ও সাধ্যমতো সহযোগিতা করি। তিনি এলাকায় ফিরতে চান, বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যানসহ এলাকার বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিদেরকে সাথে আলোচনা করেছি। সবাই আশ্বস্থ করেছেন। তবে এলাকায় ফিরে এসে খেয়াঘাট ইজারা নিতে পারে তার জন্যও আমরা তাকে সহযোগিতা করবো।

নারুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুস সালাম মাষ্টার বলেন, কয়েকদিন ধরে মনোরঞ্জন সিকদার আমাকে ফোনে এলাকায় ফিরতে চান বলে জানিয়েছেন। তবে সুদেকারবারীদের ভয়ে ফিরতে পারছেননা। তারপরও আমি আশ্বস্থ করেছি, আপনি এলাকায় আসেন, আপনাকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হবে। এছাড়াও ইতিপুর্বে নারুয়া খেয়াঘাট ইজারা নিয়ে যে ভাবে চলতো, এলাকায় ফিরে যাতে সেভাবে থাকতে পারে, তার জন্য সকলের সাথে কথা বলেছি।

(একে/এসপি/মার্চ ৩০, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test