দৌলতদিয়ায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে প্যানেল চেয়ারম্যান নিহত

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি : গতকাল ৩১ শে মার্চ বুধবার রাত ১০টা২০ মিনিটের সময় রাজবাড়ী জেলা গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প‍্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুর গনি মন্ডল ৪ নং ওয়ার্ডের মেম্বার তার নিজ বাড়ীর সামনে থেকে দুর্বৃত্তদের হাতে  গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুত্ব আহত অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ঢাকা -খুলনা মহাসড়ক দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটু এগিয়ে তার নিজ বাড়ীর সামনে এঘটনা ঘটে। দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের গেটের পাশে দোকান থেকে চা খেয়ে বাড়ী ফেরার পথে মোটরসাইকেল যোগে সস্ত্রাসীরা আতর্কিত ভাবে তাকে উদ্দেশ্য করে গুলি করেটি পেটের এক পাশে বিদ্ধ হয়ে তিনি মাটিতে লুটে পরেন। স্হানীয়রা তার চিৎকারে এগিয়ে আসলে সস্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এ সময় স্হানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গোয়ালন্দ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যান এবং অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্হানান্তর করা হয়।

এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডাঃ নিতাই কুমার ঘোঘ জানান, পেটের বামপাশে একটি ক্ষত চিহ্ন রয়েছে।আর কোথাও কোনো ক্ষত চিহ্ন নেই। পেটের বাম পাশে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। পেটের মধ্যে গুলি এখনো রয়েছে কিনা সেটি সঠিক বলা যাচ্ছে না। এক্সরে করলে হয়তো নিশ্চিত হওয়া যাবে।আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। প্রচুর রক্তক্ষরন হওয়ায় ও ভিতরে কোনো গুলি রয়েছে কিনা সেজন্য উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার অবস্থা আরো গুরুতর হয়ে গেলে তার অস্ত্র পাচারের জন্য তাকে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দোলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান এর মৃত্যু হয় বলে জানান তাদের পরিবার।

মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পর পরিবারের লোক ও স্থানীয় লোকজন মহাসড়কে বিক্ষোভ অবরোধ করার চেষ্টা করেন পরবর্তীতে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।

ছেলে আলম মণ্ডল আরও বলেন, তাঁর বাবাকে সাভারের এনাম মেডিকেলে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা দ্রুত অস্ত্রোপচার করে পেট থেকে গুলি বের করেন। তবে জ্ঞান ফিরে না আসায় তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাবার মৃত্যুসংবাদ জানানো হয় তাঁদের।

তিনি আরো বলেন, আমার বাবার তেমন কোনো শত্রু ছিল না। কিভাবে এই ঘটনাটি ঘটলো আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না। এ হত্যাকাণ্ডের সাথে যে জড়িত থাকুক আমরা তাদের শাস্তি চাই। আইনের লোকদের বলব আপনারা দ্রুত আমার বাবার হত্যাকারীদের শাস্তির ব্যবস্থা করুন।

উল্লেখ্য, একই পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান মন্ডল কে বারো দিন আগে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি কোপানো হয়। তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখনো আছেন।

স্থানীয় সাধারণ মানুষ বলছেন দৌলতদিয়া ঘাট শান্ত পরিবেশ থেকে কারা অশান্ত করছে। তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানান ।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল তায়াবীর বলেন, ঘটনা সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত কিছু জানতে পারা যায়নি। কে বা কারা তাঁকে গুলি করেছে, পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে। তবে আমরা চেষ্টা করছি আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যেই আসামিকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করবার।

(এইচ/এসপি/এপ্রিল ০১, ২০২১)