E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

হাসপাতালে ভর্তি শিশুসহ শতাধিক রোগী 

শরণখোলায় বিশুদ্ধ পানির অভাবে ডায়রিয়ার প্রকোপ

২০২১ এপ্রিল ১০ ১৬:৩০:৪৯
শরণখোলায় বিশুদ্ধ পানির অভাবে ডায়রিয়ার প্রকোপ

বাগেরহাট প্রতিনিধি : বঙ্গোপসার উপকূলে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলায় চারিদিকে অথৈই পানি থাকলেও বিশুদ্ধ পানির অভাবে বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। গত ১ এপ্রিল থেকে এপর্যন্ত ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে শরণখোলা হাসপাতালে শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে শনিবারদুপুর পর্যন্ত শিশুসহ ৬২ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। বাকিরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। 

তবে, আক্রান্ত’র সংখ্যা প্রতিদিন বাড়েই চলেছে। এই হাসপাতালটিতে ডাইরিয়া ইউনিটে শয্যা সংখ্যা কম থাকায় রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে মেঝেতে রেখে। হাসপাতালে ভর্তির চেয়ে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশী। অনেকে হাসপাতারে বেড না পেয়ে বাড়িতে থেকে পল্লী চিকিৎসকদের কাছ থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে হঠাৎ করে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।

হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্থানীয়রা জানান, সুন্দরবন সংলগ্ন উপজেলা শরণখোলায় উপজেলায় নেই একটিও গভীর নলকুপ। যার কারনে নদী ও পুকুরের পানি পান করে তৃষ্ণা মেটাতে হয় এখানকার মানুষদের। আর এজন্যই পানিবাহিত ডায়রিয়া প্রকোপ বেড়েছে। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে অধিকাংশই উপজেলা সদরের রায়েন্দা বাজার, কদমতলা, ঝিলবুনিয়া, পূর্ব খাদা, আমরাগাছিয়া,রাজাপুর ও খোন্তাকাটা এলাকার। এসব এলাকায় বর্তমানে তীব্র বিশুদ্ধ পানির সংকট চলছে। প্রায় ২ লাখ লোকের জন্য সরকারী ৫০ শয্যা শরণখোলা হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে বেডের সংখ্যা ১০টি।

গত ১০ দিনে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে শুধু হাসপাতালে শতাধিক রোগী ভর্তি হলেও বর্তমানে চিকিৎসাধিন আছে ৬২ জন। হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা কম থাকায় অন্যান্য রোগী নিয়ে প্রায় তিনশত রোগী ভর্তি রয়েছে। যার মধ্যে অনেক রোগীর থাকতে হচ্ছে হাসপাতালের মেঝেতে। এর ফলে বিছানাসহ প্রয়োজনীয় জিনিপত্রের আভাবে নানা দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে রোগী ও তাদের স্বজনদের। গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিনই হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।

রায়েন্দা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিলন জানান, পানি সংকট সমাধানে কিছু পুকুর খনন ও পন্ড স্যান্ড ফিল্টার (পিএসএফ) স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। তবে উপকূলীয় এই এলাকার বিশুদ্ধ পানির সমাধানের জন্য টেকসই উদ্যোগ গ্রহনের জন্য সরকারের কাছে দাবী জানান তিনি।

শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফরিদা ইয়াছমিন জানান, শরণখোলা এমনিতেই লবনাক্ত এলাকা। এর মধ্যে চৈত্র-বৈশাখ মাসে পুকুরগুলোর পানি তলানিতে নেমে যায়। যে কারনে বাধ্য হয়ে মানুষ ওই দুষিত পানি পান করছে। ডায়রিয়া যেহেতু পনিবাহিত একটি রোগ, তাই এলাকার মানুষ বিশুদ্ধ পানি না পাওয়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে গেছে। হাসপাতালে ডাইরিয়া রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন জানান, বিশুদ্ধ পানির সংকট সমাধানে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের চিকিৎসা ও প্রকোপ বৃদ্ধি পেতে না পারে সে ব্যপারে পদক্ষেপ নেয়া চচ্ছে বলে তিনি জানান।

(এসএকে/এসপি/এপ্রিল ১০, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test