E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

দিনাজপুরের বাহাদুর বাজার নিয়ে তুঘলকি কারবার

২০২১ এপ্রিল ১৫ ১৭:৫৩:১৯
দিনাজপুরের বাহাদুর বাজার নিয়ে তুঘলকি কারবার

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : দিনাজপুরের ঐতিহ্যবাহী এন.এ.মার্কেট বাহাদুর বাজার নিয়ে তুঘলকি কারবার শুরু হয়েছে।সরকারি ইজারা বকেয়া থাকা সত্বেও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ আবারো নতুন করে ইজারা দেয়ার পায়তারা চালিয়ে আসছে।

এ নিয়ে দিনাজপুর আড়ৎদার সমবায় সমিতি লিঃ এবং এন, এ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সকল সদস্যদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও এই ঐহিত্যবাহী পুরাতন বাহাদুর বাজার, এন. এ.মার্কেটে প্রতি বছরই সমস্যা লেগেই আছে। চরম ভোগান্তিতে ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা।

দিনাজপুর আড়ৎদার সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি মোঃ লিয়াকত আলী মোল্লা অভিযোগে জানিয়েছেন,পৌর কর্তৃপক্ষ প্রতি বছর অমানবিকভাবে আমাদের কাছে কর আদায় করছেন। আমরা প্রথমত যারা মালিক পক্ষ রয়েছি তারা সরকারকে নিয়মিত, পৌরকর, ভূমিকর, আয়কর, ট্রেড লাইসেন্স এর কর দেই। তিনি আরও জানান, পৌরসভা কি কারণে আমাদের কাছ থেকে ডেলিভারি চার্জ বা কর চায়? যারা মৌমুসী ব্যবসায়ী কিংবা প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে পৌরসভার ফাঁকা জায়গায়/রাস্তায় কাঁচামাল বিক্রি করে মন প্রতি ১০ টাকা করে চাঁদা নির্ধারণ করেছে তাদের কাছ থেকে ডেলিভারী চার্জ নিলে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু আমরা সরকারকে এত ট্যাক্স দিয়েও কেন ডেলিভারী ট্যাক্স দিবো?

তিনি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করে বলেন, গত ২০২০ সালের এন এ মার্কেটের ইজাদার মোঃ শামীম (৫০) তার সরকারি বকেয়া রয়েছে প্রায় ৪২ লাখ টাকা। এই টাকা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত পৌরসভা কিভাবে শামীমের ছোট ভাই মোঃ আব্দুল কাদেরকে বাংলা নতুন বছর ১৪২৮ ইজারা দেয়ার পায়তারা করছে। উক্ত বাজারের সভাপতি আরও অভিযোগ করে বলেন, শামীম এবং তার ভাই আমজাদ সরকারি চাঁদার থেকে বাজারে বেশি করে চাঁদা আদায় করে থাকেন। আমরা ৫০জন আড়ৎদার রয়েছি সকল সদস্য মিলে এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

অপরদিকে দিনাজপুর পৌরসভাধীন এন এ মার্কেট ও এন এ মার্কেট শৌচাগারের ইজারার লক্ষ লক্ষ বকেয়ার টাকা রেখে ১৪২৮ সালে বৈশাখ মাস থেকে দরপত্রে প্রাপ্ত ইজারাদারকে কার্যক্রম শুরু করার অনুমতি প্রদান করতে যাচ্ছে পৌর কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, দিনাজপুর পৌরসভাধীন এন এ মার্কেট ও এন এ মার্কেট শৌচাগার প্রতি বছর খাতা কলমে মোটা অংকের টাকায় ইজারা প্রদান করলেও পৌরসভার তহবিলে ইজারার লক্ষ লক্ষ টাকা বকেয়া পরে থাকলেও কি এক অজ্ঞাত কারনে পৌর কর্তৃপক্ষ আবারও বাংলা ১৪২৮ সনে বৈশাখ থেকে নতুন ইজারাদারকে কার্যক্রম করার পায়তারা শুরু করেছে। আরও জানা গেছে ১৪২৬ সালে মেসার্স খন্দকার ট্রেডার্স প্রোপ্রাইটর মোঃ সোহাগ এন এ মাকের্ট ও এন এ মার্কেট শৌচাগার ইজারা নিলেও প্রায় ২৩ লক্ষ টাকা বাকী রেখে চলে যায়। ১৪২৭ সালে ইজারাদার মোঃ শামীম এন এ মার্কেট ও এন এ মার্কেট শৌচাগার দরপত্রের মাধ্যমে ইজারা পেলেও ভ্যাটসহ প্রায় ১০ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা বকেয়া রেখে চলে যায়।

পৌরসভার শর্তাবলী অনুযায়ী ইজারা পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে বকেয়া টাকা পরিশোধ করার নিয়ম থাকলেও ইজারাদার পৌর কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে টাকা পরিশোধ না করে তার মেয়াদ শেষ করে চলে যায়। পৌর নীতিমালা অনুযায়ী ইজাদারের নিকট বকেয়া ইজারা অর্থ পাওনা থাকলে তা এক যোগে পরিশোধ করে তিনি দরপত্রে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। অন্যথায় তার কিংবা তাদের দরপত্র বাতিল বলে গন্য হবে লিখা থাকলেও সুকৌশলে তারাই আবার বিভিন্ন নাম পরিবর্তন করে ১৪২৮ বাংলা সনের এন এ মার্কেট ভ্যাটসহ প্রায় ১ কোটি টাকার দরপত্র মঞ্জুর হলেও তার সাথে সংযুক্ত ২৫ লাখ টাকার পে অর্ডার ছাড়া এ পর্যন্ত অন্য কোন টাকা জমা দেয়নি।

এছাড়া এন এ মার্কেট শৌচাগারে ভ্যাটসহ ১০ লক্ষ টাকা দরপত্র প্রাপ্ত ইজারাদার মেসার্স আরাফ এন্টারপ্রাইজ নতুন বছরের অর্থাৎ ১৪২৮ সনের দরপত্রের কার্যক্রম শুরু করার জন্য পৌর র্কর্তৃপক্ষ অনুমতি প্রদানের পায়তারা করছে বলে জানা যায়। পূর্বে বকেয়া পরে থাকা মোটা অংকের টাকা আদায় না করে কার্যক্রম শুরু করার জন্য আগ্রহ বেশী দেখাচ্ছে পৌর কর্তৃপক্ষ। পৌর মেয়র স্বাক্ষরিত ১৪২৭ সালের একটি পত্রে যার স্মারক নং দিনাজ/পৌর/২০২০/৬৮২ ইজারাদার মোঃ শামীমকে ৪৪ লাখ ৭৮ হাজার ৮শত টাকা ৭ দিনের মধ্যে পরিশোধের পত্র দিলেও কি এক অজ্ঞাত কারনে তা লাল ফিতা দিয়ে বাঁধা ফাইলটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

এ ব্যাপারে গতকাল ১৩ এপ্রিল পৌরসভার মেয়র ও হাট বাজার শাখায় গেলে তারা মাসিক সমন্বয় সভায় উপস্থিত থাকলে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। পৌরবাসীর দেয়া ট্যাক্সের টাকা আদায়ের ব্যাপারে পৌর কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ভূমিকা গ্রহণ না করা পর্যন্ত নতুন ১৪২৮ সালে ইজারা বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরুর অনুমতি প্রদান না করতে অনুরোধ জানিয়েছে সচেতন পৌরবাসী।

(এস/এসপি/এপ্রিল ১৫, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test