E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ফেনীর বক্সমাহমুদে আগুনে পুড়ে ছাই ১৭ দোকানির স্বপ্ন

২০২১ এপ্রিল ১৯ ১৮:৫৩:৫৫
ফেনীর বক্সমাহমুদে আগুনে পুড়ে ছাই ১৭ দোকানির স্বপ্ন

ফেনী প্রতিনিধি : চোখের সামনে সব পুড়ে ছাই হয়ে গেল, তাকিয়ে দেখা ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না হতভাগ্য দোকানিদের । আসন্ন ঈদ উপলক্ষে অনেকে ঋন আর ধারদেনা করে লাখ লাখ টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করে নতুন মালামাল মজুদ করেছিলেন, তিল তিল করে গড়ে তোলা সেই স্বপ্নও পুড়ে ছাই হয়ে গেল ! সব হারিয়ে একেবারে পথে বসে গেলাম- এভাবেই নিজেদের করুণ অবস্থার কথা বলছিলেন পরশুরামের বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের বক্সমাহামুদ বাজারে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা।

গত ১৮ এপ্রিল রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে পরশুরামের বক্সমাহমুদ বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে মুদি, ঔষধ, ফার্নিচার ও স্বর্ণ দোকানসহ প্রায় ১৭টি দোকান অগ্নিকান্ডে ভস্মিভূত হয়েছে । এতে প্রায় দেড় কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবী করছেন ক্ষতিগ্রস্ত দোকানীরা ।

সোমবার (১৯ এপ্রিল) সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল মজুমদার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াঙ্কা দত্তসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা, পরিদর্শন শেষে ক্ষতিগস্ত ব্যবসায়ীদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন ইউএনও ।

ইউএনও প্রিয়াংকা দত্ত জানান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) কে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করতে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে । এসময় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সার্বিকভাবে সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি ।

পরশুরাম ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার সারাং মারমা জানান, বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের পরশুরাম, ফুলগাজী, ছাগলনাইয়ার ৩ ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। ততক্ষণে সবকটি দোকান পুড়ে যায় ।

অগ্নিকান্ড সম্পর্কে ফেনী ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ সহকারি পরিচালক পূর্ণচন্দ্র মুৎসুদ্দী বলেন, দোকানগুলো ইউ সার্কেলের হওয়ায় পিছনের দিকে একটির সাথে আরেকটি লাগানো ছিল । এছাড়াও বৈদ্যুতিক লাইন, ইন্টারনেট এর লাইন দোকানের চালের উপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ।

আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের বেশ বেগ পেতে হয়েছে বলে জানান পূর্ণচন্দ্র মুৎসুদ্দী।

তিনি বলেন, ঘটনাস্থলের আশেপাশে পানির কোন উৎস ছিল না। দূরের একটি পুকুর থেকে পানির সংযোগ দেয়া হয়েছিল। দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে আশেপাশে থাকা ব্যাংকসহ অন্যান্য দোকানেও আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারত। অগ্নিকান্ডে ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে পূর্ণচন্দ্র মুৎসুদ্দী জানান, ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত অনুযায়ী ক্ষতির পরিমাণ সর্বোচ্চ ৩০ লক্ষ টাকা হবে ।

বক্সমাহমুদ ইউনিয়ন পরিষদ সচিব মো: আইয়ুব আলী জানান, বাজারের জিরো পয়েন্ট থেকে মসজিদ রোড় হয়ে ভিতরের বাজার পর্যন্ত ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে মামুন মেম্বারের দোকান, বাহার ফার্মেসি, কালুর ধান দোকান, জসিম পাটোয়ারির দোকান, রতন ডাক্তারের ফার্মেসি, ছতু মিয়ার ফার্নিচার দোকান, কাদেরের মুদি দোকান, খায়েরের মুদি দোকান, তাপসের মুদি দোকান, রাজুর মুদি দোকান, কবির সওদাগরের মুদি দোকান, আদি নারায়নের স্বর্ণ দোকান, সুনিলের মুদি দোকান, রফিকের পান দোকান, অহিদ মাষ্টারের কাপড় দোকানসহ ১৭টি দোকান পুড়ে গেছে ।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারের মামুন ও জসিম পাটোয়ারী মার্কেটে কবির সওদাগরের দোকানে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকান্ডের সূচনা ঘটে, ঘটনাস্থলে গিয়ে তারা দেখতে যান মামুন ও জসিম পাটোয়ারী মার্কেটে ভয়াবহ আগুন জিরো পয়েন্ট থেকে মসজিদ রোডের সবকটি দোকানে আগুন জ্বলছে ।

আশপাশে কোন পানির কোন উৎস না থাকায় আগুন নেভানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তারা, পরে ফায়ার সার্ভিস খবর দিলে তারা আসার আগেই সব দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায় ।

(এনকে/এসপি/এপ্রিল ১৯, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test