E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পুলিশি অভিযানে ৩ ভাটা মালিক গ্রেফতার

লকডাউনেও সক্রিয় ঈশ্বরদীর লক্ষীকুন্ডার ইটভাটার মাটিখেকোরা

২০২১ এপ্রিল ২১ ১৪:৪৭:৩৫
লকডাউনেও সক্রিয় ঈশ্বরদীর লক্ষীকুন্ডার ইটভাটার মাটিখেকোরা

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : ঈশ্বরদীতে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ‘লকডাউন’ পরিস্থিতির মধ্যেও থেমে ছিল না চরাঞ্চলের ফসলী জমির মাটি-বালু লুট। দাপটের সাথেই পদ্মার চরাঞ্চলে মাটি লুটের মহোৎসবে মেতে উঠে অবৈধ ইটভাটার প্রভাবশালী চক্র। অনেকটা নির্বিঘ্নেই দিন-রাতে সমানতালে ড্রেজার ও খননযন্ত্রের (ভেকু) মাধ্যমে ফসলি জমির বুক চিরে অবৈধভাবে তোলা হচ্ছিল মাটি-বালু। এতে চরাঞ্চলের শত শত বিঘা ফসলী জমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কৃষিজমির সর্বনাশ করে কাটা মাটি যাচ্ছে লক্ষীকুন্ডার ইটভাটায়। মাটিভর্তি ভারী ট্রাক, ড্রামট্রাক ও ট্রাক্টর চলাচলের ফলে ইতোমধ্যেই নষ্ট হয়েছে লক্ষীকুন্ডা বিভিন্ন সড়ক।

ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, ‘লকডাউন’ পরিস্থিতির মধ্যেও থেমে ছিল না চরাঞ্চলের ফসলী জমির মাটি কেটে ইটভাটায় নিয়ে যাচ্ছিল মাটিখেকোরা। দিন-রাতে সমানতালে ড্রেজার ও খননযন্ত্রের (ভেকু) মাধ্যমে ফসলি জমির বুক চিরে অবৈধভাবে তোলা হচ্ছিল মাটি-বালু। এই অবস্থায় পাবনার পুলিশ সুপারের নির্দেশে ২০১০ সালের বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ১৫ (১) ধারার বলে মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) গভীর রাতে ৩ জন ইটভাটার মালিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রূপপুর ফঁড়ির ইনচার্জ আতিকুল ইসলামের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে রাত ২.৩০টার দিকে অবৈধ ইটভাটার মালিক জামাল উদ্দিন জয়, জামিরুল ইসলাম ও রাজা প্রামাণিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসআই আতিক জানান, বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে ঈশ্বরদী থানার এসআই আব্দুর রাজ্জাক গত ২০ এপ্রিল একটি মামলা দায়ের করেন। এদের বিরুদ্ধে পদ্মার চরাঞ্চলের ফসলী জমির মাটি কেটে ইটভাটায় সরবরাহের অভিযোগ রয়েছে। ২০১০ এর ১৫ (১) সহ ৪৩১/৩৪ পেনাল কোড ধারায় নিয়মিত মামলা রজু করে জেলা হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জনান তিনি।

ঈশ্বরদী পৌর শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে প্রত্যন্ত পদ্মা নদীর তীরে লক্ষীকুন্ডায় এক ইউনিয়নে গড়ে উঠেছে ৫৫টি অবৈধ ইটভাটা। স্থানীয়রা জানান, লক্ষীকুন্ডার তিনটি কামালপুর, দাদাপুর ও বিলকেদার গ্রামে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কৃষি জমির ওপর এসব ইট ভাটায় ইট পোড়ানো হয়। ভাটা নির্মাণের জন্য চিমনির উচ্চতা ও আনুষঙ্গিক যে নির্দেশনা রয়েছে তা অধিকাংশ ভাটা মালিকারা মানেননি। এদের মধ্যে মাত্র ১টি ‘মাক্স’ ইটভাটার পরিবেশের ছাড়পত্র রয়েছে। এখানে ২টি জিকজ্যাক (হাওয়া) বাদে সবগুলেই অটোফিস ভাটা। ভাটাগুলোতে জ্বালানি হিসেবে কয়লার পরিবর্তে কাঠ ব্যবহার হচ্ছে। এসব ভাটা দিয়ে নির্গত কালো ধোঁয়া অনবরত এলাকার পরিবশে দূষণ করছে।

ইটভাটার নিঃস্মরিত কালো ধোঁয়ায় ও ছাইয়ে আম-লিচু-কাঁঠালের বাগান এবং ফসলী জমির উপর প্রভাব পড়ছে। ভাটার মালিকরা ইট তৈরির জন্য অবৈধ উপায়ে পদ্মার চরঞ্চলের ফসলী জমি কেটে মাটি সংগ্রহ করে। সরকারকে ভ্যাট-ট্যাক্স কিছুই দেয় না ভাটার মালিকরা। ফ্রিতেই পরিবেশ দূষণ, ফসলী জমি বিনষ্ট করে অবাধে এই ইটভাটাগুলো অবৈধভাবে কয়েক বছর যাবত পরিচালিত হচ্ছে।

(এসকেকে/এসপি/এপ্রিল ২১, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test