E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

তালাক দেওয়া স্ত্রীর খাবার খেয়ে অসুস্থ স্বামীর মৃত্যু

২০২১ এপ্রিল ২৯ ১৫:৩৫:৫২
তালাক দেওয়া স্ত্রীর খাবার খেয়ে অসুস্থ স্বামীর মৃত্যু

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর পত্নীতলায় হামিদুর রহমান  নামে এক কৃষকের মৃত্যু নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি লাশ দাফন নিয়েও দিনভর পরিবারের দু’পক্ষের মধ্যে টানা হেঁচড়ার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের সঙ্গে একটি পক্ষের নানা নাটকীয় ঘটনা এলাকা জুড়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে।

জানা গেছে, স্ত্রীর সঙ্গে বিবাদ মেটাতে ওই কৃষক ক’দিন আগে থানায় অভিযোগ করেছিলেন। নেহায়েত স্বামী-স্ত্রীর ওই বিবাদটি সমঝোতা করে দেয়। সেই সূত্র ধরে ঘটনার ৩দিন পর তাদের বাড়িতে মৃত্যুর কারন হিসেবে পুলিশের দিকে তীর ছুঁড়ছেন অনেকে। এঘটনাটি যেন ‘উদোর পিন্ডি বুধোর ঘারে, চাপানোর চেষ্টা বলে স্থানীয় সচেতন মহল দাবী করেছেন।

নিহতের প্রতিবেশী ও গ্রামবাসী সূত্র জানায়, ওই কৃষকের স্বামী-স্ত্রীর বিরোধের জের ইতোপূর্বে কয়েকবার তাদের যুবক দুটি ছেলে মার পক্ষ নিয়ে বাবাকে মারপিটও করে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে হামিদুর তার স্তীকে তালাক দেয়। স্থানীয়রা জানান, ওইদিন তালাক দেয়া স্ত্রীর দেয়া খাবার খেয়ে হামিদুর অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর পর তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

জানা গেছে,পত্নীতলা উপজেলার কাঁটাবাড়ি গ্রামের কৃষক হামিদুর মঙ্গলবার অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে তাকেপত্নীতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে সে মারা যায়। হামিদুরের মৃত্যুর পর এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন জন ষ্ট্যাটাস মেন।

হামিদুরের প্রতিবেশীরা জানান, মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) হামিদুর ও তার তালাক দেয়া স্ত্রী ফাহিমা বিবি ছাড়া বাড়িতে আর কেউ ছিল না। দুপুরে হঠাৎ হামিদুর চিৎকার করে ওঠে। তার চিৎকার শুনে পার্শ্ববর্তী লোকজন ছুটে গিয়ে দেখেন, মাটিতে গড়াগড়ি করছে হামিদুর। এসময় সে (হামিদুর) বলেছিল, “আমাকে কি খাওয়াইল।আমার বুকটা জ্বলে যাচ্ছে।”

এসময় হামিদুরের মুখ দিয়ে লালা পড়ছিল বলে গ্রামবাসী জানান। দ্রুত শারীরীক অবস্থার অবনতি দেখে উপস্থিত গ্রামবাসী সকলে মিলে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। প্রতিবেশীদের ধারনা, হামিদুরের তালাক দেয়া স্ত্রী উদ্দেশ্যমুলকভাবে হামিদুরকে বিষাক্ত কিছু খাওয়ানোর কারনেই সে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল।

এদিকে মৃত্যুর পরদিনহামিদুরের কতিপয় আত্মীয় অভিযোগ করে বলেন, স্বামী-স্ত্রীর বিবাদ মেটাতে গিয়ে সমঝোতার সময় পুলিশ হামিদুরকে চড়-থাপ্পর দেয়। এতে দু’দিন পর অসুস্থ হয়ে মারা যায় সে। যা নেহায়েত কল্পনা হিসেবে দাবী করেছেন সচেতনরা।

এ বিয়য়েপত্নীতলা থানার অফিসার ইনচার্জ শামসুল আলম শাহ্ জানান, হামিদুর ও তার স্ত্রী ফাহিমার মধ্যে প্রায় ঝগড়া বিবাদ ও মারপিটের ঘটনা ঘটতো।স্ত্রীর বিরুদ্ধে মারপিটের অভিযোগ এনে হামিদুর গত ১৫ এপ্রিল থানায় একটি অফিযোগ করেন। এনিয়ে দুইপক্ষকে ডেকে বুঝানোর পর তাদের মধ্যে সমঝোতা হয়। এবং তারা বাড়িতে চলে যায়। এর কয়েকদিন পর তার স্ত্রী এবার স্বামী হামিদুরের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ দিতে থানায় আসে। এরপর আবারো তাদেরকে সমঝোতার পরামর্শ দিয়ে বাড়িতে পাঠানে হয়। কাউকে কোন মারপিট বা চড়-থাপ্পর দেয়ার ঘটনা ঘটেনি। পরে বুধবার শোনা যায়, হামিদুর অসুস্থ হয়ে মারা যায়। এ নিয়ে মৃতের কয়েক আত্মীয় অস্বাভাবিক মৃত্যু দাবী দাবী করায় ওইদিনই মৃতদেহের সুরতহাল ও ময়না তদন্ত করা হয়। বিকেলেই তার স্বজনরা লাশ দাফন করে। এব্যাপারে থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে।

(বিএস/এসপি/এপ্রিল ২৯, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test