ফেসবুক মোবাইলে প্রেমের নামে একাধিক ব্যক্তির সর্বস্ব লুট, গ্রেফতার ৩

নূরুল আমিন খোকন, ফেনী : ফেনীর সোনাগাজীতে ফেসবুকে প্রেমের অভিনয়, পরবর্তীতে মুঠোফোনে ডেকে এনে মোঃ আইয়ুব খান (২৮) নামের এক এনজিও কর্মীকে জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে সর্বস্ব ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে তিন প্রতারককে আটক করেছে সোনাগাজীর পুলিশ। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাজেদা ফাউন্ডেশন নামক একটি এনজিওর চট্টগ্রামের ভুজপুর শাখার অফিস সহকারী ও ভুজপুর থানার জজখোলা মহানগর এলাকার বাসিন্দা আইয়ুবকে মোবাইল ফোনে ডেকে এনে সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয় সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। শুক্রবার (২৮ মে) সন্ধ্যায় সোনাগাজী-কাশ্মীর বাজার সড়কের পৌরসভার চর গনেশ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় শুক্রবার রাতেই ওই এনজিও কর্মী বাদী হয়ে সোনাগাজীর স্থানীয় ছাত্রলীগ কর্মী ইমাম হোসেন, মশিউর রহমান, ফখরুল ইসলাম, আবু বক্কর ছিদ্দিকসহ অজ্ঞতানামা কয়েকজনকে আসামী করে থানায় মামলা করেছেন।

রাতেই সোনাগাজী মডেল থানার পুলিশ ইমাম হোসেন, মশিউর রহমান ও ফখরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে, শনিবার (২৯ মে) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানায়, গ্রেফতার আসামিরা ফেসবুকে নারীর ছবি ব্যবহার করে বিভিন্নজনকে বন্ধু হওয়ার আমন্ত্রণ জানান। এরপর তাঁদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে মুঠোফোন নম্বর নেন। পরবর্তীতে মুঠোফোনে নারীকণ্ঠে কথা বলে একাধিক লোককে সোনাগাজীতে ডেকে এনে জিম্মি করে টাকা, মুঠোফোন ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে মারধর করে তাড়িয়ে দেন।
গতকাল আইয়ুবের সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটে, ফোনে কল পেয়ে আইয়ুব আসামিদের বলা জায়গায় গেলে ইমাম, মশিউর, ফখরুল, ছিদ্দিকসহ পাঁচ থেকে ছয়জন তাঁকে আটক করে বেদম মারপিট করেন। তাঁর কাছ থেকে নগদ টাকা, মুঠোফোনসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেন। তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে ইমাম ও মশিউরকে আটক করে পুলিশে সোর্পদ করেন। অন্যরা পালিয়ে যান। পরে আহত অবস্থায় আইয়ুবকে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

আইয়ুব খানের দাবি, তাঁকে জিম্মি করে ১২ হাজার ৪০০ টাকা, ১টি মুঠোফোনসহ তাঁর সঙ্গে থাকা গুরুত্বপূর্ণ কিছু জিনিস পত্র ছিনিয়ে নিয়েছেন আসামিরা। পরে তাঁকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে ফেলে চলে যান। বর্তমানে তিনি ফেনী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ ব্যাপারে সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুল মোতালেব চৌধুরী বলেন, গ্রেপ্তার তিনজন ছাত্রলীগের কর্মী। তবে তাঁদের কোনো পদ–পদবী নেই।

সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা একইভাবে আরও কয়েকজনের কাছ থেকে টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। শনিবার দুপুরে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে ফেনীর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

(এনকে/এসপি/মে ৩০, ২০২১)