E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

চাঁদপুরের লক্ষ্মীপুরে ৪৬ গৃহহীনকে পাকা ঘর দিলেন চেয়ারম্যান সেলিম খান 

২০২১ জুন ০৪ ১৫:৪৬:৩৯
চাঁদপুরের লক্ষ্মীপুরে ৪৬ গৃহহীনকে পাকা ঘর দিলেন চেয়ারম্যান সেলিম খান 

উজ্জ্বল হোসাইন, চাঁদপুর : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী বা মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গীকার হচ্ছে ‘কোনো মানুষ ঘরছাড়া থাকবে না’। এর আলোকে ‘যার জমি আছে, ঘর নেই’ প্রকল্পের আওতায় দেশের ৬৪ জেলার তৃণমূল পর্যায়ে এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রশাসন থেকে শুরু করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মাঠে নেমে পড়েন। তেমনই একজন জনপ্রতিনিধি হচ্ছেন চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ সেলিম খান। তিনি তাঁর ব্যক্তিগত অর্থায়নে এবং তত্ত্বাবধানে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেন। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে তাঁর ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের ওয়ার্ড সদস্যদের মাধ্যমে ‘যার জমি আছে, ঘর নেই’ এমন তালিকা তিনি তৈরি করেন। তালিকা তৈরির পর কোনোরকম প্রচার-প্রচারণা ছাড়াই চেয়ারম্যান মোঃ সেলিম খান তাঁর ব্যক্তিগত অর্থায়নে গৃহহীন ৪৬টি পরিবারের জন্যে ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করেন।

ইতোমধ্যে লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৭টি ঘর নির্মাণ করে ১৭টি গৃহহীন পরিবারকে সেমিপাকা ঘর হস্তান্তর করেন চেয়ারম্যান সেলিম খান। বাকি ২৯টি ঘরের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে, যা দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন হলে গৃহহীন পরিবারকে বুঝিয়ে দেয়া হবে। শুধু ঘরই নয়, ওই সকল পরিবারকে বিদ্যুৎ মিটার থেকে শুরু করে সুপেয় পানির ব্যবস্থাও করে দেয়া হয়েছে।

এ প্রকল্পটি শুরুর আগে চেয়ারম্যান মোঃ সেলিম খান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্থানীয় সংসদ সদস্য শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির বরাবরে গৃহহীন পরিবারের মাঝে নিজস্ব অর্থায়নে ৪৬টি ঘর নির্মাণ করে দেবেন মর্মে লিখিতভাবে অবহিত করেন। যার অনুলিপি দেয়া হয়েছে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন ও সদর উপজেলা প্রশাসনকে। এরই আলোকে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন এক পত্রের মাধ্যমে চেয়ারম্যান মোঃ সেলিম খানের নিজস্ব অর্থায়নে ৪৬টি ঘর নির্মাণের অগ্রগতি সম্বন্ধে জানতে চেয়েছে। তার প্রেক্ষিতে ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সেলিম খান পত্রের মাধ্যমে ১৭টি ঘর নির্মাণ করে গৃহহীনদের বসবাসের জন্যে বুঝিয়ে দিয়েছেন মর্মে তার তথ্যাদি লিখিতভাবে জেলা প্রশাসনকে অবহিত করেন।

‘জমি আছে, ঘর নেই’ এ প্রকল্পের মাধ্যমে চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে ঘর পাওয়া পরিবারগুলো হচ্ছে : আমজাদ আখন (পিতা ইদ্রিস আলী আখন), ইসমাইল দেওয়ান (পিতা শাহাবুদ্দিন দেওয়ান), জাকির হোসেন ফরাজী (পিতা আশ্রাফ আলী ফরাজী), মমতাজ বেগম (পিতা ছাদিম হাওলাদার), বাদল হাওলাদার (পিতা ছাত্তার হাওলাদার), শাহাদাত খান (পিতা আজিজ খান), নাছির পাটওয়ারী (পিতা হাবিবুল্লাহ পাটওয়ারী), সুমন পাটওয়ারী (পিতা আবু সুফিয়ান পাটওয়ারী), আনিছুর রহমান মন্টু (পিতা আঃ জলিল মিয়া), জাকির হোসেন খান (পিতা ইউনুছ খান), মনির হোসেন খান (পিতা ইউনুছ খান), মমতাজ বেগম (পিতা আবুল খায়ের), হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া (পিতা মোহাম্মদ ভূঁইয়া), শাহিদা বেগম (পিতা ইব্রাহিম দর্জি), মহসিন খান (পিতা সিরাজুল ইসলাম), মাহমুদুল্লাহ্ গাজী (পিতা মনতাজ গাজী) ও মাহবুব খান।

উল্লেখিত পরিবারগুলো এখন চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সেলিম খানের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত সেমিপাকা ঘরে বসবাস করছে। বাকি ২৯টি গৃহহীন পরিবার খুব সহসাই সেমিপাকা ঘরে বসবাস করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন এসব ঘর নির্মাণ কাজের দায়িত্বে থাকা স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্যরা।

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য, তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি চাঁদপুর সদর-হাইমচর উপজেলার নদীর তীরবর্তী এলাকার মানুষকে নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষায় স্থায়ীভাবে বাঁধ রক্ষা এবং নদী ভাংতি ও গৃহহীন মানুষজনকে পুনর্বাসন করার বিষয়ে নির্বাচনী প্রচারণাকালে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

নির্বাচিত হওয়ার পর ডাঃ দীপু মনির দেয়া নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠনের সাথে সাথেই চাঁদপুর সদর-হাইমচরবাসীর কল্যাণে নদী ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের পাশাপাশি নদী ভাংতি গৃহহীন মানুষদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বেশ ক’টি আশ্রয়ন প্রকল্প নির্মাণ করে।

নির্মাণাধীন ওই সকল আশ্রয়ন প্রকল্পে লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের নদী ভাংতি ও গৃহহীন ২ হাজার পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়। নির্মিত ঘরসহ জমি চাঁদপুরের জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বুঝিয়ে দেয়া হয়। ওই সকল আশ্রয়ণ প্রকল্পে সাড়ে ৪ একর জমি ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সেলিম খান জনস্বার্থে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প বাস্তবায়নে দালিলিকভাবে সরকারকে বিনা অর্থে জমি দান করে দেন।

এ সকল আশ্রয়ন প্রকল্পে গৃহহীন ও নদী ভাংতি মানুষজনকে শুধু ঘর নয়, ঘরের পাশাপাশি বৈদ্যুতিক আলো থেকে শুরু করে সুপেয় পানি পান করার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়।

(ইউ/এসপি/জুন ০৪, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test