E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ফেসবুকে দুর্নীতির পোস্টে কমেন্ট করায় যুবককে হত্যার হুমকি!

২০২১ জুন ০৫ ২৩:১৭:২৩
ফেসবুকে দুর্নীতির পোস্টে কমেন্ট করায় যুবককে হত্যার হুমকি!

ইমাম উদ্দিন সুমন, নোয়াখালী : নোয়াখালী হাতিয়ায় দুর্নীতি নিয়ে ফেসবুক পোস্টে কমেন্ট করায় রাসেল নামের এক যুবককে হত্যার হুমকি দিলেন হাতিয়া তমররুদ্দিন ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড মেম্বার বদি!  

শুধু তাইনয় তার বাবাকে সন্ত্রাসী কায়দায় উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ইউনিয়ন পরিষদে সেখানেও চেয়ারম্যান ফখরুদ্দিনের রোষানলের শিকার হন যুবকের বাবা আমির হোসেন। ছেলেকে হত্যার হুমকি গালমন্ধ করেন এবং তার একমাত্র আয় রোজগারের ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানটি ধন্ধ রাখার নির্দেশ দেন ফখরুদ্দিন চেয়ারম্যান ও ১ নং ওয়ার্ড মেম্বার বদি আলম (বদি)।

ঘটনাটি ঘটে ৪ জুন (শুক্রবার) সন্ধ্যা ৫টায় নোয়াখালী হাতিয়া উপজেলার তমরুদ্দিন ইউনিয়নের তমরুদ্দিন গ্রামে। ভুক্তভোগি যুবক রাসেল উদ্দিন (২৬) হাতিয়া উপজেলার ৭নং তমরুদ্দিন গ্রামের ব্যবসায়ী আমির হোসেনের পুত্র ।

বাবাকে ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ডিবি স্টাইলে তুলে নিয়ে যাওয়ার খবর শুনে সে প্রতিবাদে নিজের ফেসবুকে থেকে লাইবে এসে পুরো ঘটনার বিবরণ তুলে ধরেন, ভিডিওতে দেশের শীর্ষ স্থানীয় সকল টিভি চ্যানেল এবং গণমাধ্যম কর্মদের সহযোগিতা চান রাসেল, মুহুর্তেই লাইভ ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়। শত শত শেয়ার এবং কমেন্টে প্রতিবাদের ঝড় উঠে, লাইভ শেষ করার পর তার বাবাকে চেয়ারম্যান ছেড়ে দেয় বলে দাবী করেন রাসেল।

যুবক রাসেল একজন ফেসবুক এক্টিভিস্ট এবং ভোলা জেলার গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থাতে কাজ করছেন। বর্তমানে তিনি ভোলায় কর্মরত আছেন এবং সেখান থেকেই ফেসবুক লাইভ করেন। তাকে কাছে না পেয়ে সেজন্যই তার বাবাকে উঠিয়ে নিয়ে যায় চেয়ারম্যান মেম্বারের সাঙ্গপাঙ্গরা।

রাসেল অভিযোগ করে বলেন, গত ৩১ মে ফজলুল আজিম নামের একটি ফেসবুক আইডিতে রোহিঙ্গারা নোয়াখালী জন্য ক্ষতিকর এবং বিগত ৩০/৪০ বছরে হাতিয়ায় কোন উন্নয়ন হয়নি, হাতিয়ায় বিদ্যুৎ সমস্যা, বেঁড়িবাঁধ এবং নানা দূর্নীতির বিষয়ে উল্লেখ করে সংক্ষেপে একটি কমেন্ট করেন।কমেন্টটি হাতিয়ার বিভিন্ন মহলে বেশ প্রশংসিত হয়। কিন্তু এই কমেন্টটি স্থানীয় সংসদ সদস্য বিরুদ্ধে বলে মনে করেন বদি আলম মেম্বার। পরে তিনি সন্ধ্যা ৫টায় রাসেলের ব্যবহারিত নাস্বারে ফোন করে হুমকি প্রদান করেন এসময় বদি আলম রাসেলকে উদ্যেশ্য করে গালমন্ধ করে বলেন, তুই লঞ্চে উঠ তার পর কি হয় দেখবি, তোরে লঞ্চের সাথে পিষে মারুম, তোর এসব বিষয়ে মাথা ঘামানোর দরকার কি? বলে হত্যার হুমকিসহ অকত্যভাষায় গালমন্ধ করেন।

তার পর সন্ধ্যায় ৭টায় তমরুদ্দিন বাজারে বাবা-মা স্টোর থেকে স্থানীয় সাহাব উদ্দিন নামের এক যুবক রাসেলের বাবাকে হোন্ডা যোগে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে গেলে চেয়ারম্যানের রোষানলে পড়েন আমির হোসেন। এসময় আমির হোসেনকে গালমন্ধ করে ফখররুদ্দিন চেয়ারম্যান এবং ৫/৭ দিন দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশন দেয় বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগির পিতা আমির হোসেন।

তিনি আরো বলেন, ‘চেয়ারম্যান বলেছে আমার ছেলেকে শাস্তি পেতে হবে, আমি ভয়ে আছি, আমাকে চেয়ারম্যান দোকান বন্ধ করতে বলেছে আমি দোকান বন্ধ করে বাড়ীতে চলে এসেছি।’

এ বিষয়ে বদি মেম্বারর সাথে আলাপ কালে তিনি হত্যার হুমকি দেন বলে অস্বিকার করে বলেন, আমি তাকে তুই তোকারিও করিনি, তাকে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, সে কমেন্টের কথা অস্বিকার করায় আমার মেজাজ খারাপ হয়ে গেছিলো, পরে তার বাবাকে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে এনে আমরা বুঝিয়ে দিয়েছি, তার দোকান বন্ধ রাখার বিষয়ে আমরা কিছু বলিনি, তার দোকান সে খোলা রাখবে বন্ধ রাখবে সেটা তার ব্যাপার।

ফখরুদ্দিন চেয়ারম্যান বলেন, আমি কাউকে ডেকে আনিনি ছেলের বাবা নিজেই এসেছিলেন পরিষদে পরি আমি তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে বলে বাড়ীতে পাঠিয়ে দিয়েছি।

এবিষয়ে হাতিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল খায়ের বলেন, ‘এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি, কেউ অভিযোগ করলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’

(এস/এসপি/জুন ০৫, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test