E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ঝিনাইদহে নারিকেল গাছে ওঠা নারী ছিল সিজোফ্রেনিয়া রোগে আক্রান্ত

২০২১ জুন ২৬ ১৫:৫৬:৩৫
ঝিনাইদহে নারিকেল গাছে ওঠা নারী ছিল সিজোফ্রেনিয়া রোগে আক্রান্ত

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বেগমপুর গ্রামে নিজের অজান্তেই নারিকেল গাছের মাথায় উঠে বসেন তহমিনা খাতুন (২২) নামে এক নারী। কিছুক্ষণ পর বিষয়টি পরিবারের লোকজনদের ডাকলে ফায়ার সার্ভিসের মাধ্যমে তাকে নিচে নামিয়ে আনা হয়। তহমিনা খাতুন ওই গ্রামের হাসান আলীর স্ত্রী। গত কয়েকদিন এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন পত্রিকায় ব্যাপক আলোচনা হয়।

তহমিনার স্বামী হাসান আলী জানান, রাতে আমি বাজারে চা খেতে যাই। বাজারে যাওয়ার পর আমার বাড়ি থেকে ফোন করে বলা হয় আমার স্ত্রীকে পাওয়া যাচ্ছে না। বাজার থেকে বাড়িতে এসে খোঁজাখুজি শুরু করি। কিছুক্ষণ পর নারিকেল গাছের মাথা থেকে আমার স্ত্রী আমার মেয়ের নাম ধরে ডাকছিল। ডাকার শব্দ শুনে লাইট দিয়ে দেখতে পাই গাছের মাথায় বসে আছে। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে তারা এসে আমার স্ত্রীকে উদ্ধার করে।

তাহমিনার প্রতিবেশী ও যশোর এমএম কলেজের শিক্ষার্থী আফসানা শারমিন জানান, সে সিজোফ্রেনিয়া রোগে আক্রান্ত।কয়েকবছর আগে আমি তাকে যশোর কুইন্স হাসপাতালে নিয়ে ডাক্তার দেখাইছিলাম। সে কখন কি করে আমরা বুঝে উঠতে পারি না। কিছুদিন আগে তাকে আম গাছ উঠে আম পাড়তে দেখে আমি তার স্বামীকে অনেক বকাবকি করেছিলাম। টাকা পয়সার অভাবের কারণে তার স্বামী এখন পাশের এলাকায় এক কবিরাজের দিয়ে তাকে চিকিৎসা করায়।

মহেশপুর ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার রমেশ কুমার সাহা জানান, গত বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বেগমপুর গ্রাম থেকে জানানো হয় এক নারী নারিকেল গাছে মাথায় উঠে আর নামতে পারছে না। এমন খবরে ৬ জনের একটি টিম প্রায় ১ ঘণ্টার চেষ্টায় তাকে নারিকেল গাছ থেকে নামাতে সক্ষম হয়। নারিকেল গাছটির উচ্চতা আনুমানিক ৫৫ থেকে ৬০ ফুট।

এ বিষয়ে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জমির মো. হাসিবুস সাত্তার জানান, এগুলো সিজোফ্রেনিয়া রোগের লক্ষণ। এ সমস্যার কারণে কখনো কখনো রোগীর অবচেতন সত্তা মনে করে, তাঁর শরীরে অনেক শক্তি ভর করেছে। তখন অকুতোভয় হয়ে ওঠেন। এই মানসিক শক্তির জোরে ওই নারী গাছের ওপরে উঠে গেছেন। আর গ্রামের মেয়ে, গাছে ওঠার অভ্যাস আগে থেকে থাকতে পারে। পরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলে বুঝতে পারেন, দুঃসাধ্য কাজ করে ফেলেছেন। তখন সাধারণ ভয়ভীতি ফিরে আসে। এসবকেই গ্রামের লোকজন কুসংস্কারবশত জিন-ভূতের আসর বলে প্রচার করেন। এগুলোর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।

(একে/এসপি/জুন ২৬, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test