E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

চুয়াডাঙ্গায় খুঁড়ে রাখা রাস্তায় ধানের চারা লাগিয়ে এলাকাবসীর প্রতিবাদ!

২০২১ জুলাই ০৩ ১৬:৩৫:০০
চুয়াডাঙ্গায় খুঁড়ে রাখা রাস্তায় ধানের চারা লাগিয়ে এলাকাবসীর প্রতিবাদ!

স্টাফ রিপোর্টার : চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার হোগলডাঙ্গা গ্রামের মার্চ মাসে সড়কের নির্মাণকাজ শুরু হয়। তবে রাস্তা খুঁড়ে রাখলেও পরবর্তী ধাপের কাজ শুরু করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ফলে চলতি বর্ষা মৌসুমে সড়কের অর্ধেকেরও বেশি স্থানে জমেছে পানি। আবার কোথায় জমেছে কাদা। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

এদিকে সড়কের কাজ শুরু করার জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে তাগাদা দিয়েও কোনো লাভ হয়নি। তাই ক্ষুদ্ধ হয়ে ওই সড়কে ধানের চারা লাগিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন গ্রামের মানুষ।

বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সন্ধ্যার আগে ও শুক্রবার (২ জুলাই) সকালে সড়কের ওপর ধানের চারারোপণ করেন তারা। পরে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয় এ বিষয় নিয়ে।

গ্রামবাসীর অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কচ্ছপ গতিতে কাজ করার ফলেই সড়কের এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

গ্রামবাসীরা জানান, কাজ শুরু করার পর সড়কটি কেটে ফেলে রেখেছেন ঠিকাদারের লোকজন। পরবর্তীতে আর কোনো কাজ করা হয়নি। ফলে ১ কিলোমিটার সড়কের অর্ধেকেরও বেশি জায়গায় হাঁটুপানি জমেছে। রাস্তা পার হতে মাঝে মাঝে ব্যবহার করতে হচ্ছে ছোট নৌকা। এছাড়া রাস্তার কিছু যায়গায় হাঁটু সমান কাদা হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন কৃষকরা। মাঠ থেকে ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না তারা। অসুস্থ রোগীদের নিয়ে হাসপাতালে যেতেও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গ্রামবাসীকে। প্রয়োজনে অতিরিক্ত দুই কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে মানুষকে চলাচল করতে হচ্ছে।

হোগলডাঙ্গা গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রামের ভেতরের ১ কিলোমিটার সড়ক চার মাস আগে পাকা করার জন্য খুঁড়ে রাখা হয়েছে। কিন্তু এরপর আর কোনো কাজ করা হয়নি। ঠিকাদারের গাফিলতিতে চরম দুর্ভোগে পড়েছি আমরা। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আনার জন্য সড়কে ধানের চারারোপণ করেছেন গ্রামের কয়েকজন।’

একই গ্রামের আব্বাস উদ্দীন জানান, চলতি মৌসুমে রাস্তায় হাঁটু সমান পানি জমে কাদার সৃষ্টি হয়েছে। মাঠ থেকে মালামাল আনা-নেয়া করা যাচ্ছে না। মানুষ হেঁটেও চলাচল করতে পারছে না এ রাস্তা দিয়ে।

গ্রামের কৃষক মাজেদুর রহমান জানান, রাস্তা খুঁড়ে রাখার ফলে মাঠে পাওয়ার ট্রিলার নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। ফলে মাঠের ফসল বাড়ি আনার কোনো ব্যবস্থা নেই। বাধ্য হয়ে মাথায় করে আনতে হচ্ছে ফসল। এছাড়া ফসল বাড়ি থেকে বালজারে বিক্রি করতে নিয়ে যেতেও সমস্যা হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, হোগলডাঙ্গা নতুনপাড়া থেকে পুরাতনপাড়া কবরস্থান পর্যন্ত ১ কিলোমিটার সড়কটি পাকা করার জন্য চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দরপত্র আহ্বান করা হয়। কাজটি পায় জীবননগরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ওয়ান টু ওয়ান এন্টারপ্রাইজ। ৭৬ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়ক পাকা করার কাজ শুরু করার কথা ছিল ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে। আর এ কাজ শেষ হওয়ার কথা আগামী বছরের ৭ মার্চ।

চুয়াডাঙ্গার এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ সানা বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে সড়ক থেকে পানি নিষ্কাশন করে দ্রুত কাজ শুরুর জন্য বলা হয়েছে। আশা করি খুব দ্রুতই মানুষের দুর্ভোগ দূর হবে।’

এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ওয়ান টু ওয়ানের স্বত্বাধিকারী জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আলমডাঙ্গায় আমাদের একটি কাজ চলছে। সেটা দেখভাল করতে হচ্ছে। এ কারণে হোগলডাঙ্গা গ্রামের কাজটি করতে বিলম্ব হয়েছে। ওখানে এরইমধ্যে বালি ফেলা হয়েছে। পানি নিষ্কাশন করে কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে শ্রমিকদের। কিন্তু এ বৃষ্টির মধ্যে পুরোপুরিভাবে কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।’

(এস/এসপি/জুলাই ০৩, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test