E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ভৈরবে কঠোর লকডাউনের ৭ দিনে ৩৪২ জনকে অর্থদণ্ড

২০২১ জুলাই ০৮ ১৭:০৫:৫৩
ভৈরবে কঠোর লকডাউনের ৭ দিনে ৩৪২ জনকে অর্থদণ্ড

মিলাদ হোসেন অপু, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) : সরকার ঘোষিত প্রথম দফায় এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউনে ভৈরবে ৩৪২ জনকে অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। সেই সাথে বিনামূল্যে ৩ হাজারের মতো মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে। করোনা সংক্রামণ ঠেকাতে দিনরাত বিরামহীন কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। বিনা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষগুলোকে এই অর্থদণ্ড করা হচ্ছে। 

উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার লুবনা ফারজানা ও উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিমাদ্রী খীসা নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে এক সপ্তাহে ৩৪২ জনকে ৯ হাজার ৭৩০ টাকা জরিমানা করেছেন। এতো জরিমানা করেও তাতে কোন কাজ হচ্ছে না। শহরের পাশাপাশি গ্রামেও ব্যাপক হারে করোনার সংক্রামণ বাড়ছে।

গ্রামের চায়ের দোকানের আড্ডাগুলো সংক্রামণ বাড়ার প্রধান কারণ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। শহরের মানুষগুলো মাস্ক বিহিন স্বাভাবিক চলাফেরা করছে। অনেকেই মাস্ক ব্যবহার করলেও মুখের থুতলিতে আবার কেউ নাক বের করে মুখে মাস্ক লাগিয়ে রাখছেন। প্রশাসন দেখে কেউ দৌঁড়ে পালাচ্ছে কেউবা মাস্ক পড়ে চলাচল করছে। উপজেলা ও পৌর শহরের অলি-গলিতে দোকানপাট খোলা রয়েছে। কাঁচা বাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকানগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়েও ক্রেতাদের ভীড় দেখা গেছে।

সরেজমিনে ভৈরব বাজার ঘুরে দেখা গেছে অলি-গলিতে মানুষের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। কেউ কর্মস্থলে সামনে দাঁড়িয়ে আছে, কাউকে দেখা গেছে দোকানের শাটার অর্ধেক খোলা রেখে পণ্য বিক্রি করছে। আবার কেউ ক্রেতাকে দোকানের ভেতরে ঢুকিয়ে শাটার লাগিয়ে কেনা বেচা করছে।

সুমন নামে বাজারের এক চা বিক্রেতা বলেন, বাজারে মানুষের আনাগোনা বেড়েছে। সকালে একটু বেশী বেচাকেনা হয়। পুলিশ আসলে কাস্টমাররা দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। তবে মানুষ বাজারে আছে বলেই চায়ের দোকান খুলে বসে আছি।
ভৈরবে প্রশাসনের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। কিন্তু জীবিকার তাগিদে মানুষের চলাচল বেশী দেখা গেছে। সড়কে রিকশার পাশপাশি বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাসসহ পণ্য ব্যবহারের নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন যান চলাচল করতে দেখা যায়।

ভৈরব বাজারে বাজার করতে আসা রিয়াদ মিয়া বলেন, মানুষজন সচেতন হচ্ছে না। প্রতিদিন ভৈরবে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইদানিং করোনায় মৃত্যুর খবরও পাচ্ছি। কিন্তু সাধারণ মানুষদের মধ্যে কোন সচেতনতা নেই। মানুষ মাস্ক ব্যবহারে অনীহা করছে। কেউ মাস্ক ব্যবহার করলেও তা সঠিকভাবে ব্যবহার হচ্ছে না।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিমাদ্রী খীসা বলেন, সারাদেশে করোনা আক্রান্তের পাশাপাশি ভৈরবেও ব্যাপকহারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। সরকারের দেয়া কঠোর লকডাউন বাস্তবায়ন করতে প্রশাসন অভিযান অব্যাহত রেখেছে। বিনাপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষগুলোকে জরিমানা করা হচ্ছে। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ যেন ঘর থেকে না বের হয় সেজন্য এ জরিমানা করা হচ্ছে। মানুষ স্বাস্থ্য সচেতন হলেই করোনা সংক্রামণ ঠেকানো সম্ভব।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার লুবনা ফারজানা বলেন, ভৈরবের মানুষের সচেতনতার অভাব রয়েছে। ইচ্ছে করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কাউকে জরিমানা করা হয় না। বাহিরে বের হওয়ার যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখাতে পারলে তাকে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে, আর যারা যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখাতে পারছে না তাদেরকেই জরিমানা করা হচ্ছে। ভৈরবে গত দু’দিনে দু’জনের মৃত্যুসহ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে অনেক মানুষ। মানুষ এখন স্বাস্থ্য সচেতন না হলে ভৈরবে ভয়াবহ রূপ নিবে করোনা।

(এমএ/এসপি/জুলাই ০৮, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test