E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রবীণ আ. লীগ নেতাকে লাঞ্ছনার অভিযোগ

২০২১ জুলাই ১০ ১৩:৩৪:০৭
ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রবীণ আ. লীগ নেতাকে লাঞ্ছনার অভিযোগ

জাহেদ সরওয়ার, কক্সবাজার : বদর উদ্দিন! মহেশখালীর মাতারবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রবীণ ও দুঃসময়ের একজন ত্যাগী কর্মী। মহেশখালী মাতারবাড়ী ইউনিয়নে ৯নং ওয়ার্ডের মধ্যে সবচেয়ে ভালো ও নির্লোভ একজন আওয়ামীলীগার। ছিলেন ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। এক সময় বদর উদ্দিন কোম্পানি নামে পরচিতি ছিল। ছিলেন অনেক টাকার পয়সার মালিক!

আওয়ামী লীগের একসময়ের ডোনার ও মুজিব আদর্শে বিশ্বাসী ৭৪ বয়সী বদর উদ্দিন এ মানুষটি কিছুদিন আগে মাতারবাড়ির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ উল্লাহর হাতে লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

দূর্বল আর সচেতন পরিবার না হওয়ায় এতোদিন গোপন ছিল বিষয়টি। দলের জন্যে লাখ লাখ টাকা বিলিয়ে দিতে দিতে নিজের সহায় সম্পত্তিও উজাড় করে দিয়েছেন এই মানুষটি। সময়ের আবর্তে অর্থ সংকটে পড়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার (৫ জুলাই) ১০ কেজি চাল নিতে গিয়ে চেয়ারম্যান কর্তৃক কোন কারণ ছাড়াই লাইন থেকে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়, সাথে হেনস্থার শিকার হতে হয়! সহায়তা পাওয়ার বিপরীতে উল্টো বৃদ্ধের (বদর উদ্দিন) পকেট থেকে মাছ বিক্রির ৮হাজার টাকাও গোলযোগের ফাঁকে পড়ে যায়।

বদর উদ্দিন বলেন, মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ চেয়ারম্যান লাইনে এসে ধাক্কা দিলে আমি পড়ে যাই। দেখে শুনে ধাক্কাটা মারছে। চেয়ারম্যান আমাকে চিনে! চিনেও কেন আমাকে মাটি থেকে তুলেনি? কিন্তু মোহাম্মদ উল্লাহ চেয়ারম্যান বলেন উনাকে কেন আমি ধাক্কা দিব!সেটা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

এ বিষয়ে মহেশখালী উপজেলা আ. লীগের সভাপতি আনোয়ার পাশা বলেন, একজন প্রণোদনা গ্রহণকারী সে যে দলের হউক না কেন তাকে এভাবে লাঞ্চিত করা অন্যায়। যদি বদর উদ্দিনকে লাইন থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয় তাহলে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।

মাতারবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছমিউদ্দিন বলেন, বদর উদ্দিন আওয়ামী লীগের একজন ত্যাগী কর্মী। আওয়ামী লীগের সময়ে অসময়ে পাশে থেকে কাজ করে গেছেন। বদর উদ্দিনকে ধাক্কা দেওয়ার ঘটনা যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে এটা অত্যন্ত দুঃখজনক!

উনি সে বদর উদ্দিন! যার কাছে আওয়ামী লীগের দাওয়াত নিয়ে কেউ তাকে চিঠি দিলে ,চিঠি না খুলেই তাকে দুই - তিন হাজার টাকা দিয়ে দিতেন। অনুদান পেলে তা বিলিয়ে দিতেন।

মহেশখালী - কুতুবদিয়া সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক এমপি বলেন, বদর উদ্দিন এর ব্যাপারে যদি এ রকম ন্যাক্করজনক কিছু করা হয়ে থাকে তাহলে এ বিষয়ে স্থানীয়ভাবে সুরাহা করা হবে।আর উনার বিরুদ্ধে যদি অন্যায় অবিচার করা হয় তাহলে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় ৯নং ওয়ার্ড এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, এই বদর উদ্দিন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে, নিজের বাসায় পালিত সব চেয়ে বড় গরু জবাই করে খাওয়াতো আওয়ামী লীগের নেতা কর্মী ও সাধারণ জনগণের মাঝে। প্রতি মাসে চায়ের দোকানে বিল দিত! আজ তিনি আর্থিক সংকটে! বঙ্গবন্ধু প্রেমি এ রকম একজন মানুষকে যদি চেয়ারম্যান ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় তাহলে আওয়ামী লীগ পরিবারের জন্য এটা হতাশাজনক।

মাতারবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়জুল করিম বলেন, বদর উদ্দিন কোম্পানি যখন অনেক টাকার মালিক ছিলেন তখন অনেক চেয়ারম্যান প্রার্থী তাকে সামনে নিয়ে সোডাউন করতো। ১৫ই আগষ্ট সবাই কাঙ্গালীভোজ করে সরকারি নেতাদের টাকা নিয়ে ,নয়তো বা টাকা তোলাতুলি করে। কিন্তু বদর উদ্দিন নিজ খরচে করে এ কাঙ্গালীভোজের আয়োজন করতো! এ রকম একজন মানুষের প্রতি এমন আচরন সত্যি দুঃখজনক।

মাতারবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হায়দার বলেন, বদর উদ্দিনকে ঐ কার্ড আমি দিয়েছি। কারণ তিনি আওয়ামী লীগের একজন ত্যাগীকর্মী। ঘটনা যদি সত্যি হয় তাহলে সৎ ও নিবেদিত প্রবীণ আওয়ামী লীগের কর্মীর এমন নির্যাতনের শিকার বিষয়টি দলের জন্যে লজ্জাজনক ও দুঃখজনক।

(জেএস/এসপি/জুলাই ১০, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test