E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

যমুনায় কমছে পানি ভাঙছে পাড়

২০২১ জুলাই ১২ ১৭:০৩:১৭
যমুনায় কমছে পানি ভাঙছে পাড়

ইমরান হোসাইন, সিরাজগঞ্জ : যমুনা নদীর পানি কমার সাথে সাথে সিরাজগঞ্জের চৌহালী ও শাহজাদপুরের নদী তীরবর্তী এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। ইতিমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে অন্তত ২০টি বসতভিটাসহ বিস্তীর্ন ফসলি জমি। ভাঙ্গনরোধে বালিভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হলেও তা কাজে আসছে না।

সরেজমিন জেলার চৌহালী ও শাহজাদপুরের ভাঙ্গন এলাকা ঘুড়ে, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, যমুনা নদীর পানি বাড়ার সাথে সাথে শুরু হওয়া জেলার চৌহালী উপজেলার নদী ভাঙ্গন পানি কমার সময়ে তীব্র আকার ধারন করেছে। উপজেলার খাসপুকুরিয়া থেকে বাগুটিয়া পর্যন্ত তিন কিলোমিটার নদী তীরবর্তী এলাকায় তীব্র নদী ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। গত তিন দিনের ভাঙ্গনে অন্তত ১৫টি বসতভিটা ও বিস্তীর্ন ফসলি জমি যমুনা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

ভাঙ্গনের ঝুকিতে রয়েছে বিনাইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরবিনাইন বাজার, হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও চরণাকালিয়া তাঁত কারখানা। ভাঙ্গন এলাকার মানুষেরা তাদের ঘড়-বাড়ি ভেঙ্গে অন্যত্র সড়িয়ে নিচ্ছে।
এদিকে ভাঙ্গন রোধে গত শনিবার (১০ জুলাই) ভাঙ্গন এলাকায় বালিভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু জিওব্যাগ ডাম্পিংয়েও থামছে না ভাঙ্গন।

স্থানীয় রমজান আলী জানান, একমাস হল শুরু হওয়া নদী ভাঙ্গন কিছুতেই থামছে না, বসতবাড়ি ভেঙ্গে অন্যত্র সড়িয়ে নিয়েছি। ভিটাটুকু ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে নদীতে বিলীন হয়েছে, কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ শুরু করলো না। গত তিনদিন আগে বস্তা ফেলা শুরু হয়েছে, কিন্তু এতে কাজ হচ্ছে না।

চৌহালী উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ ফারুখ সরকার জানান, বর্ষা মৌসুমের শুরুতে শুরু হওয়া নদীভাঙ্গনে বিস্তীর্ন এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। দেরিতে হলেও ভাঙ্গন রোধে কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ইতিমধ্যেই ভাঙ্গন কবলিত মিটুয়ানি উচ্চ বিদ্যালয় এলাকায় নদী তীরবর্তী ২০০ মিটার ও চরবিনাইনে ১০০ মিটার এলাকায় জিওব্যাগ নিক্ষেপ করা হয়েছে।

এদিকে গত মে মাসে তীব্র ভাঙ্গনের শিকার হওয়া শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের পাচিলে বিপুল পরিমান জিওব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধ করা হয়। ঐ এলাকায় রবিবার (১১ জুলাই) রাত থেকে আবারো শুরু হয়েছে নদী ভাঙ্গন। একদিনেই জিওব্যাগসহ অন্তত ৫টি বসতভিটা ও বিস্তীর্ন ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ফলে ঐ এলাকায় বিরাজ করছে ভাঙ্গন আতংক।

ভাঙ্গন এলাকার ইয়াছিন আলী জানান, ভাঙ্গনরোধে ফেলা বালিবর্তি জিওব্যাগসহ বির্স্তীন এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড কোন খবর নিচ্ছে না। দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহন করা না হলে ভাঙ্গন রোধ সম্ভব হবে না।

কৈজুরি ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম জানান, পাচিলে নদীভাঙ্গনে মানুষ সর্বস্ব খোয়াচ্ছেন অথচ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে ফোনে পাওয়া যায় না। ভাঙ্গন রোধে কি পদক্ষেপ গ্রহন করা হচ্ছে তা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমরা জানতে পারছি না। নামমাত্র জিওব্যাগ নিক্ষেপ করা হচ্ছে, এভাবে ভাঙ্গন রোধ সম্ভব নয়। আমরা চাই স্বচ্ছতার সাথে কাজ করুক পানি উন্নয়ন বোর্ড, যাতে ভাঙ্গন রোধ হয়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সিরাজগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, পাচিলসহ ঐ অঞ্চলে ভাঙ্গন রোধে জরুরি কিছু কাজ করা হয়েছে, তারপরও আবার ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। আমরা আবারো জরুরি কাজ শুরু করবো ভাঙ্গন নিয়ন্ত্রনে রাখার জন্য।

নির্বাহী প্রকৌশলী আরো জানান, ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী কাজ শুরু হবে অক্টোবর-নভেম্বরে, ঐ কাজটি করা গেলে আর ভাঙ্গন থাকবে না। এর আগে ভাঙ্গন রোধ করা কষ্টকর, তারপরও চেষ্টা করা হচ্ছে।

(আই/এসপি/জুলাই ১২, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test