E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মধুখালীতে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত

২০২১ জুলাই ২৫ ১৬:৪৭:৩৭
মধুখালীতে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত

মনিরুজ্জামান মৃধা মন্নু, মধুখালী (ফরিদপুর) : ফরিদপুরের মধুখালীতে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ঘন্টার পর প্রায় ৪৮ ঘন্টা অতিবাহিত হয়ে গেলেও কোন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। আহত ওই সমবায় কর্মকর্তার নাম মো. হাবিবুর রহমান (৪০)। তিনি (হাবিবুর) মধুখালী উপজেলার পশ্চিম গাড়াখোলা মহল্লার মো. নূরুল ইসলামের ছেলে। বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার (২৩ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে হাবিবুর রহমান মশার কয়েল কিনতে পশ্চিম গাড়াখোলাস্থ বাসা থেকে পূর্ব গাড়াখোলা এলাকার জনৈক কাজল বসুর বাড়ির সামনে গেলে সানজিদ হাসান ওরফে সৌরভ (৩২) তার সহযোগী জনি মুন্সী (৩১)সহ অজ্ঞাতনামা আরও চারজন তার পথ রোধ করে লাঠি, লোহার রড ও ধারাল অস্ত্র দিয়ে তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। এ সময় তার পকেটে থাকা সাড়ে নয় হাজার টাকা নিয়ে যায়। তিনি চিৎকার দিলে এলাকাবাসীরা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান।

সানজিদ পূর্ব গাড়াখালা মহল্লার বাসিন্দা আলমগীর হোসেনের ছেলে। আলমগীর হোসেন মধুখালী পৌরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। বর্তমানে সানজিদের মা রেহানা বেগম ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। পলাতক এবং মুঠোফোন বন্ধ থাকায় এ ব্যাপারে সানজিদ হাসানের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে কথা হয়েছে তার (সানজিদ) মা কাউন্সিলর রেহানা বেগমের সাথে।

রেহানা বেগম বলেন, পূর্ব গাড়াখোলা মহল্লার কাজল বসুর বাড়ির সামনে যে এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে সেটি মাদক অধ্যুষিত এলাকা। ওই এলাকার বিভিন্ন দোকানে গাঁজাসহ নেশাজাতীয় দ্রব্য বিক্রি হয়। সানজিদ গাঁজা বিক্রেতা দোকানদারদের শাসাতে সেখানে গিয়েছিল। ওই সময় ওই কর্মকর্তাকে মোটরসাইকেলে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে সানজিদের সন্দেহ হয়। এ নিয়ে সানজিদ তাকে চ্যালেজ করে। তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটিও হয় এবং সানজিদ কিল ঘুষিও মারে। তবে তিনি যে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা তা সানজিত বুঝতে পারেনি।

রেহানা বেগম দাবি করে বলেন, তার ছেলে সানজিদ নেশাগ্রস্ত না। তিনি বলেন, ওই কর্মকর্তাকে শুধু কিল ঘুষি মারা হয়েছে, রড দিয়ে বাড়ি দেওয়া বা ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করা কিংবা টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার এ দাবিগুলি মামলা শক্ত করার জন্য যুক্ত করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে গত শনিবার (২৪ জুলাই) রাতে হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে মধুখালী থানায় উল্লেখিত ব্যাক্তিদের আসামি করে ‘খুন করার উদ্দেশ্যে মারপিট করে সাধারণ/গুরুতর জখম করে চুরি করা’র অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন।

হাবিবুর রহমান বর্তমানে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার শারীরিক অবস্থা জানতে চাইলে ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা কবির সর্দার বলেন, হাবিবুরের শরীর সন্তোষজনক রয়েছে। তাঁর শরীরে গুরুতর কোন জখম দেখা যায়নি। তবে তার ডান হাতের কব্জি ভেঙ্গে যেতে পারে। এক্স-রে করে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। তিনি বলেন, হাবিবুরের শরীরে ধারাল কোন অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি।

মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ওই রাতে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা নিজের এলাকার বদলে অন্তত এক কিলোমিটার দূরে মশার কয়েল কিনতে কেন গিয়েছিলেন সেটি তদন্তের দাবি রাখে। তিনি বলেন, তবে আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে। আসামি ধরা পড়লে ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটিত হবে।

(এম/এসপি/জুলাই ২৫, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test