E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কঠোর লকডাউনে চরম দুর্ভোগে ঈশ্বরদীর মুচি সম্প্রদায় 

২০২১ আগস্ট ০১ ১৫:২২:২২
কঠোর লকডাউনে চরম দুর্ভোগে ঈশ্বরদীর মুচি সম্প্রদায় 

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : কঠোর লকডাউনে ঈশ্বরদীতে নিম্নআয়ের রবিদাস সম্প্রদায়ের (মুচি) জীবনে নেমে এসেছে চরম দূর্ভোগ । ঈশ্বরদী শহরের পুরাতন বাস ষ্ট্যান্ড এলাকার ফুটপাতে জুতা-স্যান্ডেল সেলাইয়ের কারিগর গোপাল, পাখি, সুশান্ত রবিদাস, মতিলাল, বিমলদাস, রামকৃষ্ণ ও লিটন কুমাররা বসে বসে অলস সময় পাড় করছেন। কর্মহীন হয়ে পড়ায় এসব নিম্নআয়ের মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে।

চলমান বিধি নিষেধে জরুরী প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না মানুষরা। নেই কোনো ছুটাছুটি, দৌড়ঝাপ। গাড়ি-ঘোড়াও চলছে না। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ছাড়া কেউ বাজারমূখি হচ্ছে না। তাই জুতা সেলাই করতে আসছেন না কেউ। জুতা-স্যান্ডেলের সেলাইয়ের জন্য দীর্ঘক্ষণ তারা অপেক্ষা করছেন। এই অবস্থায় কে আসবে জুতা-স্যান্ডেল সেলাই করতে। কাজের অভাবে আয় রোজগার নেই। কিন্তু পরিবার-পরিজনের পেট তো রয়েছে। নিম্নআয়ের এই মানুষদের দিন কাটছে অর্ধহারে-অনাহারে। জমানো পুঁজিও শেষ। মুচিদের সাথে কথা বলে লকডাউনে তাদের এই করুণ পরিস্থিতির কথা জানা গেছে।

রবিবার সরেজমিনে দেখা যায়, পুরাতন বাসষ্ট্যান্ড এলাকার ফুটপাতে চুপচাপ বসে আছে জুতা-স্যান্ডেল সেলাইয়ের কারিগর মুচিরা। কেমন আছেন জিজ্ঞাসা করলে মতিলাল জানান, কেমন আর থাকবো। আগে এখানে বসেই প্রতিদিন কাজ করতাম ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। করোনার কারনে কঠোর লকডাউনে ঈশ্বরদী জংশনে ট্রেন, বাস, সিএনজি, অটো সব বন্ধ। প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে আসে না। মানুষ জুতা-স্যান্ডেল, ব্যাগ সারাতে আসছেন না। তাই আয় রোজগার নেই বললেই চলে।

গোপাল জানান, সকাল ৭ টায় আইছি। এখন ১২টা। মাত্র ২০ টাকার কাজ হয়েছে। তিনটার পর জনমনুষ্যি শুণ্য হয়ে যাবে। বাড়িতে মা, বউ ও ২ ছেলেসহ ৫ জন পুষ্যি।

রাম কৃষ্ণের পরিবারে স্ত্রী সহ ৬জন সদস্য। ঈশ্বরদী সরকারি কলেজে এক ছেলে ডিগ্রীতে আর ১ মেয়ে আব্দুলপুর সরকারি কলেজে অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্রী। কাজ করেছেন মাত্র ৮০ টাকা।

ঈশ্বরদীর রেল গেটের দরিনারিচায়, স্কুলপাড়া এবং রহিমপুর এলাকায় এদের বসবাস। জুতা-সেন্ডেল-ব্যাগ সেলাই ছাড়া আয়ের আর কোন উৎস নেই। করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় লকডাউনে মানুষজন বাইর বের না হওয়ায় জুতা সেলাইয়ের কাজ অনেক কমে গেছে।

এরআগে প্রথম করোনাকালে উপজেলা প্রশাসন, পৌরসভা এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগে রবিদাস (মুচি) সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভিন্ন সহযোগিতা করা হলেও এবারে কেউই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়নি। এই পরিস্থিতিতে উপার্জন না থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা মানবেতর জীবন-যাপন করছে।

(এসকেকে/এসপি/আগস্ট ০১, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test