E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

প্রকৃতিই এখন নদী পারের মানুষের শেষ ভরসা! 

২০২১ আগস্ট ০১ ১৫:৩৭:০৮
প্রকৃতিই এখন নদী পারের মানুষের শেষ ভরসা! 

আবুল কালাম আজাদ, রাজবাড়ী : রাজবাড়ী কৃষি প্রধান একটি জেলা, মোট ৫ টি উপজেলা নিয়ে এই জেলা গঠিত। তবে এই সকল উপজেলার সাথেই সংযোগ রয়েছে হয় পদ্ম অথবা গড়াই নদীর৷ 

প্রতি বছর বর্ষার মৌসুম আসলেই শুরু হয় নদী ভাঙন। বিলীন হয় বসত বাড়ি ও ফসলি জমি। তবে এই সকল মানুষের অভিযোগ রয়েছে কতৃপক্ষ তেমন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন না। অপরদিকে এই সকল ভাঙন এলাকা দেখিয়ে সরকারের কাছ থেকে আনে মোটা অংকের বরাদ্দ।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ পানি উন্নয়ন বোর্ড কিন্তু আমাদের অবস্থা দেখিয়ে ঠিকি বরাদ্দ আনে। তবে সেটা সঠিক সময়ে কাজ করে না।যখন পানি বৃদ্ধি পায় তখন কাজ শুরু করে। এতে করে অবশ্য একটা সুবিধা রয়েছে, কারণ এতে করে ১০% কাজ করলেই চলে। কেউ তো আর পানির নিচে গিয়ে দেখবে না কি পরিমাণ কাজ হলো।

চলতি বছরে রাজবাড়ীর সদর উপজেলার মিজানপুর ও বরাট ইউনিয়নের গোদারবাজার অংশে সিসি ব্লকের ১৫০ মিটার অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। যদিও ওই কাজ গত মাসেই শেষ করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। এই কাজের অনিয়মের অভিযোগ তোলে স্থানীয়রা বারবার, রাজবাড়ী জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা সেই সকল অভিযোগের তোয়াক্কা করেন নাই। এই ভাঙনের পর পানি উন্নয়ন বোর্ড রাজবাড়ীর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আহাদ অবশ্য নতুন করে বরাদ্দ চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন।

এর পরপরই শুরু হয় গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ফেরিঘাট এলাকায় দ্বিতীয় দফায় ভাঙন। কয়েক ঘন্টার ভাঙনে নদী তীরবর্তী প্রায় ৩০মিটার অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। হুমকির মধ্যে মধ্যে পরে শত শত বসতবাড়ি। ভাঙন আতঙ্কে নদীরপাড় থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয় তাদের ঘরবাড়ি।

এ সময় দৌলতদিয়া ইউনিয়নের মজিদ শেখের পাড়া থেকে আবু মেম্বার, আবুল মন্ডল, সোহেল মুন্সী, মোকছেদ মন্ডল, উজ্জল সরদারের বাড়িসহ বেশ কিছু বাড়িঘর সরিয়ে নেওয়া হয়।

অপর দিকে বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ও জঙ্গল ইউনিয়ন পড়েছে গড়াই নদীর ভাঙনের কবলে। এই দুই ইউনিয়নের নদী তীর ব্রতী মানুষের কষ্টো আর দুরদশার শেষ নেই। তাদের অভিযোগ বর্ষার মৌসুম আসলেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু লোক এসে কিছু বালুর বস্তা ফেলে চলে যায়। এতে আমাদের কোন উপকারে আসে না, অপরিকল্পিত কাজ করলে যা হয় আর কি।

বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের মরাবিলা গ্রামের বাসিন্দা চঞ্চল বিশ্বাস বলেন, আমার জন্মের পর থেকে এই এলাকা ভাঙতে ভাঙতে গ্রামটি বিলীন হওয়ার পথে। তবে আজ অব্দি দেখলাম না এই এলাকায় ভাঙন রোধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলো। আমি আমার এই ৫০ বছরের জীবনে ৫ বার বাড়ি সরিয়েছি। আমাদের যতটুকু ফসলি জমি ছিলো সেটা এখন গড়াই নদীতে। কয়েকটি গ্রামের অন্যতম ফসলি মাঠ সেটাও এই বছরই বিলীন হতে চলেছে।

অবশ্য এই জেলার প্রশাসনিক কর্তারা বারবার বলে যাচ্ছেন, পদ্মা ও গড়াই নদীর ভাঙন রোধে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

(একে/এসপি/আগস্ট ০১, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test