E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সুবিধাবঞ্চিতদের টিকার নিবন্ধন করাতে গ্রামে গ্রামে ঘুরছে চেয়ারম্যান মিজানুর

২০২১ আগস্ট ১১ ১৮:০১:৪৭
সুবিধাবঞ্চিতদের টিকার নিবন্ধন করাতে গ্রামে গ্রামে ঘুরছে চেয়ারম্যান মিজানুর

অরিত্র কুণ্ডু, ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের বিনামূল্যে করোনার টিকার নিবন্ধন করে দিচ্ছে চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান খান। এসব মানুষকে টিকা নিশ্চিত করতে তিনি স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে যাচ্ছেন।গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত পাঁচ সহস্রাধিক মানুষের টিকার নিবন্ধন করেছেন তাঁরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইউনিয়নের ৯ টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ঘুরে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলে।নিবন্ধিতদের সঙ্গে সঙ্গেই প্রিন্ট করে টিকাকার্ড দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এসব মানুষ এই কার্ড নিয়ে নির্ধারিত কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নিতে পারবেন।

মঙ্গলবার বিকালে কুল্ল্যাগাছা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়,শতাধিক নারী-পুরুষ জড়ো হয়েছেন টিকার নিবন্ধন করতে।নিবন্ধনকারীদের মধ্যে দুজন নিবন্ধন করতে আসা নারী-পুরুষের আলাদা তালিকা করছেন, আরও দুজন তাঁদের নির্দিষ্ট সারিতে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছেন। চারজন তাঁদের ল্যাপটপ দিয়ে সুরক্ষা অ্যাপ থেকে তাঁদের নিবন্ধন করে দিচ্ছেন। আর দুজন একটি প্রিন্টারের মাধ্যমে তাঁদের টিকাকার্ড প্রিন্ট করে দিচ্ছেন। সেই সঙ্গে লোকজনকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা।

এ কার্যক্রমে চেয়ারম্যানকে সহযোগিতা করছেন মো: আক্তারুজ্জামান,নাসিম হোসেন,রিংকু হোসেন,মো: রাসেল হোসেন,ওলিয়ার রহমান, রোকনুজ্জামান,আমিরুল ইসলামসহ আরো অনেকে। তাঁরা সবাই এলাঙ্গী ইউনিয়নের ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী।

কর্মসূচির অন্যতম উদ্যোক্তা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কোটচাঁদপুর উপজেলা শাখার উপ-প্রচার সম্পদাক মো.রাসেল হোসেন জানান,আমাদের এলাকার মসজিদের মাইকে এবং নামাজ পড়তে আসা লোকজনক ও বিভিন্ন গ্রামে মাইকিং করে বিনা মূল্যে টিকা নিবন্ধনের খবর জানিয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া আশপাশের সব দোকানেও এই খবর পৌঁছে দেওয়া হয়। এরপর থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে লোকজন টিকা নিবন্ধনের জন্য আসতে থাকে।

কুল্ল্যাগাছা টিকার নিবন্ধন করতে আসা খয়বার আলী (৬৫) নামের এক ব্যক্তি বলেন, কীভাবে টিকার জন্য নিবন্ধন করতে হয়, জানতাম না। তারা আমাদের এলাকায় এসে টিকা নেওয়ার ব্যবস্থা করে দিল। এখন আর সমস্যা নেই, এই কার্ড নিয়ে গেলেই নাকি টিকা দিয়ে দেবে।

ফাতেমা বেগম (৬০) নামের এক নারী বলেন, শুনেছিলাম টিকার জন্য রেজিষ্ট্রেশন করতে নাকি কম্পিউটারের দোকানে যেতে হয়। আমি গরিব মানুষ, বিভিন্ন বাড়িতে কাজ করে খাই। টাকা দিয়ে টিকার জন্য নাম রেজিষ্ট্রেশন করা আমার পক্ষে সম্ভব না। তারা বিনামূল্য টিকার রেজিষ্ট্রেশন করে দিচ্ছে। তাই এখানে এসেছি।

এলাঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান খান জানান, তাঁরা যাঁদের টিকার নিবন্ধন করে দিচ্ছেন, তাঁদের সবাই নিম্নবিত্ত ও সমাজের অসচেতন অংশ। কেউ রিকশা চালান, কেউ চা-সিগারেটের দোকান চালান, আবার কেউ দোকানের কর্মচারী। তাঁদের অধিকাংশই জানেন না, কীভাবে টিকার জন্য নিবন্ধন করতে হয়। আবার নিবন্ধন করতে প্রয়োজনীয় কম্পিউটার বা স্মার্টফোন তাঁদের নেই। নিবন্ধন করতে না পারায় অনেকে করোনার টিকা নিতে পারছেন না। গণটীকা কর্মসূচির প্রথম ধাপে আমাদের ইউনিয়নে ৬০০ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহে ইউনিয়নের অনেককেই আবার টিকা দেওয়া হবে।তাই এসব ব্যক্তিকে সাহায্য করতে আমি নিজে ছাত্রলীগ,যুবলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।

(একে/এসপি/আগস্ট ১১, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test