E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

হবিগঞ্জ শহরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে শতাধিক আহত

২০১৪ সেপ্টেম্বর ১১ ১৫:১৯:৫৩
হবিগঞ্জ শহরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে শতাধিক আহত

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জে স্থানীয় একটি দৈনিক পত্রিকার অফিস ভাংচুর ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের উপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই এলাকাবাসীর সংঘর্ষে সদর মডেল থানার ওসিসহ শতাধিক লোক আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষ ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ দুই শতাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়াল সেল নিক্ষেপ করে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, বুধবার রাতে শায়েস্তানগর এলাকার কতিপয় যুবক ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা লোকালয় বার্তা অফিসে হামলা চালায়। এ সময় অফিসের আসবাবপত্র, কম্পিউটারসহ মালামাল ভাংচুর করা হয়। হামলাকারীরা পত্রিকাটির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এমদাদুল ইসলাম সোহেলকে কুপিয়ে আহত করে। হামলায় আহত হয় পত্রিকাটির বার্তা সম্পাদক শায়েল (২৬), পত্রিকার স্টাফ সোহাগ আহমেদ (২২), চারলি আহমেদ (২৪) ও আল-আমিন (১৬)। তাদেরকে গুরুতর আহত অবস্থায় সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ খবর সোহেলের গ্রামের বাড়ি শহরতলীর বহুলায় জানাজানি হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রাতেই উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেয়।

খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে ছুটে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এর জের ধরে বৃহস্পতিবার সকালে আবারও ফিকল, টেটা, বল্ল¬ম, লাঠিসোটাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে উভয়পক্ষ প্রস্তুতি নেয়। একপক্ষ শায়েস্তানগর ট্রাফিক পয়েন্টে এবং বহুলা গ্রামবাসী ঈদগাহ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান নিয়ে একে অপরকে ডাকাডাকি করতে থাকে। এ সময় তারা ইটপাটকেলও নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে বেলা ১১টায় ভয়াবহ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তারা। সংঘর্ষ চলাকালে বেশ কয়েকটি দোকানপাট ভাংচুর, লুটপাট করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ প্রথমে উভয়পক্ষকে বুঝিয়ে দাঙ্গা থামানোর চেষ্টা চালায়। এদিকে ক্রমেই সংঘর্ষ ভয়াবহ রূপ ধারণ করে।

শেষ পর্যন্ত অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৯২ রাউন্ড রাবার বুলেট ও ২৭ রাউন্ড টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। বেলা ১টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এসময় অন্তত ২০ জন গুলিবিদ্ধ হয়। সদর থানার ওসি নাজিম উদ্দিন, ওসি (তদন্ত) দেওয়ান মো. নূরুল ইসলাম, এএসআই আব্দুল লতিফ, কুসুম চন্দ্র সূত্রধর, কর্ণমনি, কনস্টেবল ইয়াসির আরাফাত, আনিছ, জাকির হোসেন, কৃষ্ণ এবং উভয় এলাকার আব্দুল্লাহ আল মামুন, আব্দুস ছাত্তার, বাবুল মিয়া, জাহাঙ্গীর আলম, গাউছ মিয়া, আব্দুল মালেক, সামছু মিয়া, জুয়েল, রুবেল রানা, আক্তার মিয়া, জীবন মিয়া, শাহীন মিয়া, রফিক মিয়া, জিতু মিয়া, ফজলুল হক, পারভেজ মিয়া ও আক্কল আলীকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। কিন্তু গ্রেফতার এড়াতে অধিকাংশই সদর হাসপাতালে আসেনি। স্থানীয়রা জানায়, সংবাদ ছাপা না ছাপা নিয়ে পৌর যুবদলের আহবায়ক সিতু মিয়ার সাথে বিরোধ দেখা দেয় সোহেলের। এর জের ধরে ওই হামলা, সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।


এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর থানার ওসি নাজিম উদ্দিন জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ফের সংঘর্ষের আশংকায় এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার সকালে পত্রিকা অফিস ভাংচুর ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এমদাদুর রহমান সোহেল এর উপর হামলার ঘটনায় মামলা দায়েরের কথা ছিল। কিন্তু তারা মামলা না করে পাল্টা হামলা চালিয়েছে। বুধবার রাতের ঘটনায় পুলিশ যুবদল নেতা সিতুকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালায় বলেও তিনি জানান।


এদিকে, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এমদাদুর রহমান সোহেল এর হামলার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন হবিগঞ্জ সাংবাদিক ফোরাম নেতৃবৃন্দ। এক বিবৃতিতে ফোরাম সভাপতি শাহ মশিউর রহমান কামাল ও সাধারণ সম্পাদক জিয়া উদ্দিন দুলাল হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানান।

(পিডিএস/এএস/সেপ্টেস্বর ১১, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test