E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

টিকটকে স্কুলছাত্রীর আপত্তিকর ভিডিও, মামলা না নেয়ায় আত্মহত্যার হুমকি

২০২১ সেপ্টেম্বর ২৫ ১৪:৫৪:১৭
টিকটকে স্কুলছাত্রীর আপত্তিকর ভিডিও, মামলা না নেয়ায় আত্মহত্যার হুমকি

পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি : বরগুনার পাথরঘাটায় একটি স্কুলের ৮ম শ্রেণিতে অধ্যায়নত ছাত্রীর জোরপূর্বক আপত্তিকর ভিডিও মুঠোফোনে ধারণ করে ভিডিও শেয়ারিং এ্যাপ টিকটকে ছড়িয়ে দিয়েছে একই সহপাঠি নাঈম। ছাত্রী অভিভাকদের অভিযোগ, এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশের সহযোগীতা পাওয়া যায়নি। বিচারে সহযোগীতা না পাওয়ায় আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছে ঐ ছাত্রী।

বখাটে নাঈম উপজেলার সদর ইউনিয়নের হাজির খাল গ্রামের সৌদি প্রবাসী সগির খানের ছেলে। সগীর খানের স্ত্রী ছেলে নাঈমকে নিয়ে পৌর শহরে ভাড়া বাসায় থাকেন।

ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী জানান, একই স্কুলের সহপাঠি নাঈম দির্ঘদিন ধরে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে পথে ঘাটে উত্যক্ত করত ওই। এরপর গত বুধবার স্কুল ছুটির পর ক্লাস থেকে বের হওয়ার আগেই নাইম ওই ছাত্রীর স্কুল ব্যাগ নিয়ে বাহিরে বের হ যায় নাঈম। শ্রেণিকক্ষ থেকে বের হয়ে সে নাইমের কাছে ব্যাগ আনতে গেলে জড়িয়ে ধরে চুমু খায়। এই দৃশ্য পাশ থেকে একই শ্রেনীর সবুজ গোপনে ভিডিও করে। যা পরবর্তীতে ফেসবুকে ছেড়ে দেয় নাঈম।

ছাত্রী বলেন, বিষয়টি লজ্জায় কাউকে জানাইনি। কিন্তু শুক্রবার সকালে আমার এক প্রতিবেশী ভিডিওটি আমাকে দেখালে বিষয়টি আমি মাকে জানাই।"

ছাত্রীর মা জানান, নাঈম তার মেয়েকে বিভিন্ন সময় মেয়েকে উত্যক্ত করে আসছে। এ নিয়ে এক বছর আগে নাঈমের মামা ইউসুফ এর কাছে নালিশ করেও কোন সমাধান পাইনি। এরপরে গত দুদিন আগে আমার মেয়েকে নিয়ে একটি আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে। এই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখার পর আমার মেয়েকে মারধরও করি। এরপর বিষয়টি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে জানালে তিনি বিচার করবেন বলে আমাদের সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন। প্রধান শিক্ষক নাঈমের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে ব্যার্থ হওয়ার পর শুক্রবার রাত নয়টার দিকে পাথরঘাটা থানার গিয়ে বিষয়টি ওসি আবুল বাশারকে জানাই। এবং মামলা দায়ের করার জন্য বলি‌। কিন্তু ওসি দীর্ঘক্ষণ আমাদের বসিয়ে রেখে "পরে আসতে বলে" পাঠিয়ে দেন। এরপর আমি আবারও মামলা করার কথা জানালে তিনি ফিরিয়ে দিয়ে বলেন, "পরে যোগাযোগ করেন।'

স্কুল ছাত্রীর মা বেগম আরো জানান আমার মেয়ের সম্মান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই বখাটে নাঈম ছড়িয়ে দিয়েছে। আমি এই বিষয়টি নিয়ে থানায় গিয়ে যদি আইনের আশ্রয় নিতে না পারি তাহলে আমি যাব কোথায়? সমাজে মুখ দেখানোর উপায় নেই। এখন আমাদের আত্মহত্যা ছাড়া আর কোন পথ নেই।

প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান স্কুল ছুটির পরে স্কুল গেটের বাইরে এ ধরনের একটি অপ্রীতিকর ঘটনা কথা শুনেছি। এই বিষয়ে নাইনের পরিবারকে অবহিত করলে তারা নাইমকে হাজির করতে পারেনি। সে কারণে আমরা বিষয়টি নিয়ে সমাধানে যেতে পারেনি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায় নাঈম বখাটে এবং উৎশৃংখল প্রকৃতির ছেলে। বিভিন্ন সময়ে তাঁর বিরুদ্ধে ইভটিজিং সহ মারামারি অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে পাথরঘাটা কেএম সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকেও তার নাম বহিষ্কার করা হয়েছে। এর পরে তিনি ওই স্কুলে এসে ভর্তি হন।

এ ব্যাপারে নাঈমের মায়ের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি।

এ বিষয়ে পাথরঘাটা থানার ওসি আবুল বাশার জানান, রাতে স্কুলছাত্রী ও তার মা থানায় এসে বিষয়টি জানিয়ে গেছেন। তারা মামলা করার জন্য আসেন নি বরং মৌখিক অভিযোগ করতে এসেছেন বলে জানিয়েছেন।তারা যদি লিখিত অভিযোগ দেয় তাহলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এটি/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test