E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দুর্গাপূজার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত প্রতিমা শিল্পীরা

২০২১ অক্টোবর ০৯ ১৭:৫৫:০৮
দুর্গাপূজার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত প্রতিমা শিল্পীরা

এ কে আজাদ, রাজবাড়ী : হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্ব বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শ্রী শ্রী শারদীয় দুর্গাপূজা। পুজার বাকি আর মাত্র ২ দিন। ইতিমধ্যে অনেক পূজা মন্দিরে শেষ হয়েছে সাজসজ্জার কাজ, আবার কিছু মন্দিরে চলছে। এরি মধ্যে রাজবাড়ী জেলার প্রতিমা তৈরির কারিগরেরা দিন রাত কাজ করে চলেছে। সেই সাথে রং তুলির ছোঁয়ায় সাজছেন দেবী দুর্গা।

রাজবাড়ী জেলার পূর্জা মণ্ডপগুলোতে দ্রুত চলছে আলোকসজ্জার কাজ। গত বছরের চেয়ে এবছর আয়োজনের কোন কমতি নেই। এবার জেলার ৪২ টি ইউনিয়ন ও ৩ টি পৌরসভায় মোট ৪৪১টি মণ্ডপে সামাজিক দুরুত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে শারদীয় দূর্গা পুজা অনুষ্ঠিত হবে।যা কি না গত বছরের ২৪ টি মণ্ডপে বেশি পূজা হচ্ছে। এ বছর জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলাতে সব চেয়ে বেশি ১৪৮ টি মণ্ডপে পূজার প্রস্তুতি চলছে। আর সব চেয়ে কম গোয়ালন্দ উপজেলাতে ২১ টি মণ্ডপে পূজার প্রস্তুতি চলছে।

সরজমিনে জানা যায়, করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছর প্রতিমার অর্ডার কম থাকলেও এবছর বেড়েছে প্রতিমা ও মণ্ডপের সংখ্যা। জেলার সদর, পাংশা, বালিয়াকান্দি, কালুখালি ও গোয়ালন্দের বিভিন্ন পূজামন্ডপে দেবী দূর্গার অনিন্দ্য সুন্দর রুপ দিতে রাত-দিন রং-তুলির মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিমা শিল্পীরা। খড় আর কাঁদামাটির প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ। পুরোধমে শুরু হয়েছে রং তুলির কাজ। রং তুলিতে সাজানো হচ্ছে প্রতিমার অপরুপ সৌন্দর্য। তবে অসুর নাশিনীর দেবী দুর্গাকে নানা রঙে রাঙালেও প্রতিমা তৈরির উপকরণ ও রঙের দাম বেড়ে যাওয়ায় ন্যায্য পারিশ্রমিক থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রতিমা তৈরীর কারিগররা। এজন্য অনেক প্রতিমা শিল্পীর মুখ ভার।

পঞ্জিকা মতে আগামী ১১ অক্টোবর (সোমবার) শুরু হয়ে ৫ দিনব্যাপী চলবে হিন্দু ধর্মের সব চয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা। যা কিনা ১৫ অক্টোবর শুক্রবার বিজয় দশমীর মধ্যে দিয়ে পূজার সমাপ্তি ঘটবে।

জেলার সদর উপজেলার কয়েকজন প্রতিমা তৈরির কারিগর জানান, দক্ষ কারিগর প্রতি বছর ৩৫/৪০টি প্রতিমা তৈরি করে থাকে। কিন্তু এ বছর জনপ্রতি সর্বচ্চ ২৫-৩০টি প্রতিমার কাজ করা হচ্ছে। গত দুই বছর আমাদের অনেকটাই প্রভাব ফেলেছে করোনা। অনেকে তৈরিকৃত প্রতিমার মধ্যে এখনো ১ সেট প্রতিমাও বিক্রি করতে পারেনি। যারা মণ্ডপে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত তারাও কাঙ্খিত পারিশ্রমিক পাচ্ছে না। অনেককে লোকসান গুনতে হবে বলেও তারা জানান।

পাংশা উপজেলার গোবিন্দ চন্দ্র পাল, কার্তিক পালসহ প্রতিমা তৈরীর শিল্পীরা বলেন, প্রতিমা তৈরির উপকরণ মাটি, খড় ও সুতলি-রঙের দাম বেড়ে যাওয়ায় আগের মতো প্রতিমা তৈরি করে আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রদীপ্ত চক্রবর্তী কান্ত বলেন, শারদীয় দূর্গা পূজাকে বরন করতে প্রায় সব ধরণের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। করোনা ভাইরাসের কারণে গত বছরের মতো এবারও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা করতে হবে। শুধু সাজসজ্জার সামান্য কাজ বাকি। সামনে যে সময় আছে তাতে আমরা সময় মত সব কাজ শেষ করতে পারবো। এ বছর জেলার ৫টি উপজেলার প্রায় ৪৪১টি পূজা মণ্ডপে দুর্গা পূজার আয়োজন চলছে। সব মিলিয়ে আমাদের এবারের পূজা আনন্দঘন ও জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে শেষ হবে বলে আশাবাদি।

জেলার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সুমন কুমার সাহা জানান, আসন্ন দুর্গা পুজায় যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোর জন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। সেই সাথে জেলার পালপাড়াগুলোতে পুলিশ নিয়মিত টহল দিচ্ছে। তবে করোনার প্রকোপ কমলেও প্রতিটি মণ্ডপে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক সাধ্য অনুযায়ী রাখতে হবে। প্রতিটি পূজামণ্ডবে সার্বক্ষনিক পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়াও আনছারসহ মোবাইলটিম সার্বক্ষনিক পূজামণ্ডবগুলো নজরদারী রাখবে। পাশাপাশি সবকটি পূজা মণ্ডপে গোয়েন্দা নজরদারিতে থাকবে বলেও তিনি জানান।

(একে/এসপি/অক্টোবর ০৯, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test