E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বৃষ্টি উপেক্ষা করে মণ্ডপে মণ্ডপে দর্শনার্থীদের ভিড়

২০২১ অক্টোবর ১৪ ১৮:০৮:১০
বৃষ্টি উপেক্ষা করে মণ্ডপে মণ্ডপে দর্শনার্থীদের ভিড়

অরিত্র কুণ্ডু, ঝিনাইদহ : হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা বিজয়া দশমী আগামীকাল শুক্রবার শেষ হচ্ছে। আজ বাজছে বিদায়ের সুর। দেবী এসেছে ঘোটকে, যাবে দোলায়। আজ মহানবমীর সন্ধ্যায় আরতি শেষে দেবীর বন্দনায় প্রতিটি পূজামণ্ডপে বিষাদের সুর বাজতে শুরু করে।

মহানবমীতে আজ পূজা শুরু হয় সকাল এগারটায়। সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় আরতি প্রতিযোগিতা। দিনভর চলেছে চণ্ডীপাঠ আর ভক্তদের কীর্তনবন্দনা। ঝিনাইদহের অনেক স্থানে বৃষ্টি উপেক্ষা করে মহানবমীতে বিভিন্ন মন্দির ও মণ্ডপে ছিল ভক্ত ও দর্শনার্থীর উপচেপড়া ভিড়। নবমী পূজা শেষে অশ্রুসজল নয়নে ভক্তরা দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গার পায়ে অঞ্জলি দিয়েছে।

হিন্দু শাস্ত্রমতে, নবমী তিথিতে রাবণ বধের পর শ্রী রামচন্দ্র এই পূজা করেছিলেন। নীলকণ্ঠ ফুল, যজ্ঞের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয় নবমী বিহিত পূজা। নবমী পূজার মাধ্যমে মানবকুলে সম্পদলাভ হয়।
শাস্ত্র অনুযায়ী- আজ শাপলা, শালুক ও বলিদানের মাধ্যমে দশভুজা দেবীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পূজা শুরুর পর ভক্তরা প্রার্থনা করতে থাকে দেবীর উদ্দেশে। নীল অপরাজিতা ফুল নবমী পূজার বিশেষ অনুষঙ্গ। নবমী পূজায় যজ্ঞের মাধ্যমে দেবী দুর্গার কাছে আহুতি দেয়া হয়। ১০৮টি বেল পাতা, আম কাঠ, ঘি দিয়ে এই যজ্ঞ করা হয়। পূজা শেষে যথারীতি অঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।

আগামীকাল শুক্রবার মা দুর্গার বিদায়। তাই আজ শেষবারের মতো দেবীর আশীর্বাদ কামনায় নারী, পুরুষ, শিশু-কিশোর সব বয়সের ভক্ত নিবিষ্ট মনে প্রার্থনা করে। প্রতিটি মণ্ডপেই কয়েক দফা করে পুষ্পাঞ্জলি দেয়া হয়। বিদায় বেলায়ও চলেছে ঢাক আর শঙ্খধ্বনি, টানা মন্ত্র পাঠ, উলুধ্বনি, অঞ্জলি, ঢাকের বাজনার সঙ্গে ছিল ধুনচি নৃত্য। সন্ধ্যায় আরতির পাশাপাশি মণ্ডপে মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হয়েছে আলোচনাও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

নবমীর দিন দুপুরের পর থেকে কম-বেশি বৃষ্টি ছিল। বৃষ্টি উপেক্ষা করে মণ্ডপে মণ্ডপে ছিল ভক্ত ও দশনার্থীর ভিড়। ঝিনাইদহ শহরের বারোয়ারি তলা ও হামদহ কালী মন্দিরের পাশাপাশি শৈলকূপার কবিরপুর দূর্গা মন্দির,রানীনগর দূর্গা মন্দির,ফুলহরি গ্রামের গৌর গোবিন্দ মন্দির,সার্বজনীন কালীবাড়ি, দক্ষিণ পাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির,মহব্বতপুর সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরে দর্শনার্থীদের সমাগম ছিল বেশি।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি ও ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কনক কান্তি দাস বলেন, এবার জেলায় ৪৫২টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পূজা মণ্ডপে কোন মেলার মাঠ বসানো হয়নি । স্বাস্থ্যবিধি, মাদকমুক্ত পরিবেশ ও ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে আমরা সেই মোতাবেক কাজ করে যাচ্ছি।

পূরাণ মতে, রাজা সুরথ প্রথম দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন। বসন্তে তিনি পূজার আয়োজন করায় দেবীর এ পূজাকে বাসন্তী পূজা বলা হয়। কিন্তু রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধার করতে লংকা যাত্রার আগে শ্রী রামচন্দ্র দেবীর পূজার আয়োজন করেছিলেন শরৎকালের অমাবস্যা তিথিতে, যা শারদীয় দুর্গোৎসব নামে পরিচিত। দেবীর শরৎকালের পূজাকে এজন্যই হিন্দুমতে অকাল বোধনও বলা হয়।

(একে/এএস/অক্টোবর ১৪, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test