E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

উপজেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নিরব

নাগরপুর গণহত্যা দিবসে ৫৭ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানানোর কেউ নেই!

২০২১ অক্টোবর ২৫ ১৮:২৭:৩০
নাগরপুর গণহত্যা দিবসে ৫৭ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানানোর কেউ নেই!

মোঃ সিরাজ আল মাসুদ, টাঙ্গাইল : আজ ২৫ অক্টোবর নাগরপুর গণহত্যা দিবস । প্রতিবছর এই দিনে শ্রদ্ধা জানাতে উপজেলা প্রশাসন, বীর মুক্তিযোদ্ধা, নিহত বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও  গ্রামবাসী ছুটে যান এ গণকবরে। কিন্তু এ বছর ঘটেছে ব্যতিক্রম। হানাদার বাহিনীর বর্বরোচিত হামলা গ্রাম বাসীসহ ৫৭ জন শহীদ বীরমুক্তিযোদ্ধার স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর কেউ ছিলো না। শহীদদের জন্য দোয়া করারও  নেই কেউ। 

সাবেক বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোঃ সুজায়েত হোসেন বলেন, ২৫ অক্টোবর নাগরপুর গণহত্যা দিবস । প্রতিবছর এই দিনে শ্রদ্ধা জানাতে উপজেলা প্রশাসন, বীর মুক্তিযোদ্ধা, নিহত বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও গ্রামবাসী ছুটে যান । শহীদ বীরমুক্তিযোদ্ধার স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ শহীদদের প্রতি দোয়া করেন। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ পরিচালনার দায়িত্বে আছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার । আজকে কেন উপজেলা প্রশাসন থেকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেননি তা তিনিই ( উপজেলা নির্বাহী অফিসার) ভালো জানেন।

নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত-ই-জাহান এর সরকারী নাম্বারে বারবার ফোন করলেও তিনি নিজে ফোন রিসিভ করেননি। অন্য কাউকে দিয়ে ফোন রিসিভ করিয়ে জানিয়েছেন তিনি ব্যস্ত রয়েছেন।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক টাঙ্গাইল বলেন,ইউএনও কে বলেন।আমি জানি না ,আমাকে কেউ বলেনি। আমি জানি না তাই এটা নিয়ে কোন মন্তব্য করতে পারবো না।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের এই দিনে টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার গয়হাটা ইউনিয়নের বনগ্রামের রসুলপুর গ্রামে বর্বরোচিত হামলা করে হানাদার বাহিনী। হামলায় নিরীহ গ্রাম বাসীসহ ৫৭ মুক্তিযোদ্ধা কে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। বসতবাড়িতে করে অগ্নিসংযোগ। এতসব ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েও ক্ষ্যন্ত হয়নি পাকিস্তানি সেনারা। তারা ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে বহু গবাদিপশুও পুড়িয়ে মারে। হত্যযজ্ঞের পর হানাদার বাহিনী চলে গেলে গ্রামবাসীর সহায়তায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের বনগ্রামে গণকবর দেওয়া হয়। সেই থেকে প্রতি বছর এই দিনে শ্রদ্ধা জানাতে মুক্তিযোদ্ধা, নিহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও গ্রামবাসী ছুটে যান এ গণকবরে।

স্থানীয়রা জানান, ১৯৭১ সনের ২১ অক্টোবর বনগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান নিয়েছে এমন সংবাদ পেয়ে সিরাজগঞ্জ থেকে গানবোট নিয়ে পাক হানাদার বাহিনী বনগ্রাম আক্রমণ করে। শুরু হয় সম্মুখ যুদ্ধ। এ যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর ১ মেজরসহ ৩ জন নিহত হয়। পরবর্তী সময়ে পাক সেনারা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে ২৫ অক্টোবর রাতে কাপুরুষের মতো বনগ্রাম আক্রমণ করে। আবাল বৃদ্ধ, শিশু ও নারী কেউ রেহাই পায়নি হায়েনাদের হাত থেকে। হত্যা করে ৫৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে এবং ১২৯ টি বসতবাড়ীতে অগ্নিসংযোগ করে।

(এসএম/এসপি/অক্টোবর ২৫, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test