E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বহু অর্থ সম্পাদের মালিক হয়েও বিনা চিকিৎসায় মারা গেলেন কাপাসিয়ার ইরান

২০২১ অক্টোবর ২৮ ১৫:৫৯:৪৬
বহু অর্থ সম্পাদের মালিক হয়েও বিনা চিকিৎসায় মারা গেলেন কাপাসিয়ার ইরান

সঞ্জীব কুমার দাস, কাপাসিয়া (গাজীপুর) : গাজীপুরের কাপাসিয়া সদর বাজারের প্রায় পাঁচশত গজ দক্ষিণে কাপাসিয়া-বরুন-বানার হাওয়া গ্রামের  প্রায় ছয় কোটি টাকা মূল্যের জমি রেগে বিনা চিকিৎসায় মারা ড়েলেন শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী  মাহবুব হোসেন ইরানের। এ সম্পদই তার পরিবারের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। এ সম্পদের প্রতি প্রতিবেশী প্রভাবশালী মহলের লোলুপ দৃষ্টি পড়ায় ছলে বলে কৌশলে সমস্ত জমি দখল করে নেয় তারা। দীর্ঘদিন যাবত বিনা চিকিৎসায় থাকার পর গত মঙ্গলবার রাতে ইরান মারা যান। 

শারীরিক প্রতিবন্ধী মাহবুব হোসেন ইরানের স্ত্রী এমিলি আক্তার জানান, কাপাসিয়া বাজারসংলগ্ন বানার হাওলা ও খোদাদিয়া মৌজায় সিএস, এসএ ও আরএস রেকর্ড ও দলিল মূলে খাজনা খারিজ দিয়ে তার শ^শুর ৩১৫ শতাংশ জমি ভোগ দখল করে আসছিলেন। ২০১২ সালে তারা বসতভিটার একপাশে পাকা ঘর নির্মাণ শুরু করলে প্রায় ১২ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায় প্রভাবশালী এক প্রতিবেশী।

এ সময় পূর্বের ঘরটিও গুঁড়িয়ে দিয়ে তাদের উচ্ছেদ করে দেয় সে। তখন ন্যায় বিচারের আশায় ইরানের মা আদালতের স্মরণাপন্ন হলে আদালত মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জমি ও স্থাপনার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। কিন্তু সেই প্রতিবেশী ও তার লোকজন আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাতারাতি স্থাপনা নির্মাণ করে জমি দখল করে নেয়। ২০১২ সালে বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ হওয়ায় এবং জমি বেদখল হওয়ার শোক সইতে না পেরে স্ট্রোক করার এক পর্যায়ে অনেকটা বিনা চিকিৎসায় ২০১৫ সালে মারা যান ইরানের পিতা আবদুল মালেক ভূইয়া। এ সময় তার মা মল্লিকা নেছা পার্শ্ববর্তী গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে অসুস্থ হয়ে দীর্ঘ সময় দুঃখ কষ্টে থাকার পর ২০১৮ সালে মারা যান। তখন একমাত্র সন্তান মালয়েশিয়া প্রবাসী মাহবুব হোসেন ইরান দেশে ফিরে আসার কিছু দিনের মধ্যেই স্ট্রোক করলে শরীরের এক পাশ অবশ হয়ে পড়ে।

প্রথম দিকে অনেক কষ্টে চিকিৎসা করালেও এক পর্যায়ে দুই কণ্যা সন্তান নিয়ে তার স্ত্রী এমিলি আক্তার মানবেতর জীবনযাপন করায় স্বামীর চিকিৎসা করাতে পারেননি। ২০১২ সাল থেকে তার পরিবারের লোকজন আদালত ও সংশ্লিষ্ট নানা মহলে ধরণা দিয়েও কোন প্রতিকার পায়নি। বর্তমানে দুইটি কন্যা সন্তানসহ খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ইরানের স্ত্রী এমিলি আক্তার। ন্যায় বিচারের আশায় এখনও তিনি বিভিন্ন মহলে ধরনা দিয়ে যাচ্ছেন।

(এসকেডি/এসপি/অক্টোবর ২৮, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৩ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test