E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ছাতকে ভণ্ডপীরের মাজারে সিজদা প্রথায় প্রতিবাদ

২০১৪ সেপ্টেম্বর ১৫ ১১:১৮:২০
ছাতকে ভণ্ডপীরের মাজারে সিজদা প্রথায় প্রতিবাদ

ছাতক প্রতিনিধি: ছাতকে ভণ্ডপীরের মাজারে সিজদা প্রথা আবিষ্কারে সর্বত্র প্রতিবাদের ঝড় বইছে। অবশেষে ভণ্ডপীর তোপের মুখে এক সপ্তাহের মধ্যে মাজার ভেঙ্গে ফেলার ঘোষণ দিয়ে আত্মরক্ষা করে।

শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর এলাকার আলেমগণ তার এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে সে এ ঘোষণা দেয়। সে নোয়ারাই ইউনিয়নের রাজারগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুস শহিদের পুত্র আব্দুল হামিদ (৩২)। বাড়িতে কথিত মাজারের স্ব-ঘোষিত পীর সেজে লোকজনের সাথে প্রতারণা করে প্রত্যহ হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা।

জানা গেছে, ৩ মাস পূর্বে ভণ্ডপীরের পিতা মারা গেলে সে পিতার গোর-কাফনে বাড়িতে উপস্থিত না হলে আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামবাসী তাকে দাফন করেন। গত জুলাই থেকে বাড়ির আঙ্গিনায় কথিত মাজার সাজিয়ে কৌশলে প্রতারণার আশ্রয় নেয় আব্দুল হামিদ। এ জন্য কিছু কতিপয় দালালের মাধ্যমে রোগী এনে ঝাড়-ফুঁক, তেলপড়া দিয়ে রোগীদের সাথে প্রতারণার ব্যবসা শুরু করে। এখন প্রতিদিন শতাধিক রোগী আসায় তাদের থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা। সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার রাতে রোগীদের নিয়ে হাজরাতের নামে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে সে। পাশাপাশি চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মাজারে সিজদা প্রদানে বাধ্য করে কথিত ভণ্ডপীর। বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা নিতে আসা নারী-পুরুষ হাজরাতের ফি বাবদ তাকে দিচ্ছেন ১ হাজার টাকা। এ নিয়ে তার নিজ গ্রামসহ এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে মাজারে রোগীদেরকে সিজদা প্রদানে বাধ্য করায় এলাকার আলেম সমাজ তার বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছেন। শনিবার স্ব-ঘোষিত পীর আব্দুল হামিদের বাড়িতে গিয়ে এসব দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায় এবং স্থানীয় লোকজন রাতে হাজরাতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। পীরের সাথে আলাপকালে জানা যায়, ৮ বছর পূর্বে সিলেটে হযরত শাহজালাল (রঃ) মাজারে ৪১দিন সাধনা ও কান্নাকাটি করে স্বপ্নের মাধ্যমে সে কামিয়াব হয়। বর্তমানে প্রতিদিন দূর-দুরান্ত থেকে তার কাছে আগত রোগীদের কাছ থেকে হাদিয়া স্বরূপ ১২৫ টাকা দান বাক্সের জন্য গ্রহণ করেন। কলা, মোমবাতি, আগর বাতি, গোলাপজল ইত্যাদি গ্রহণের পর সে তেলপড়া, পানিপড়া ও গাছের ডাল দিয়ে সবধরনের রোগের চিকিৎসা করে থাকেন। রাতের হাজরাত সম্পর্কে সে জানায়, দিনে বেশি রোগী থাকায় রাতের বেলা হাজরাত করে থাকি। মাজার সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি পাগল থাকাবস্থায় স্বপ্নযোগে মোকাম তৈরির নির্দেশ পেয়েছি। আব্দুল হামিদের চাচাতো ভাই নাছির উদ্দিন জানান, বাড়ির আঙ্গিনায় মোকাম বানিয়ে এ ধরনের চিকিৎসা আমি পছন্দ করি না। গ্রামের আসক আলী, মনির মিয়াসহ এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, আমরা বিভিন্ন লোকজনকে চিকিৎসা নিতে এসে দেখেছি। কিন্তু কারো কোন উপকার হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই।

এদিকে গত শুক্রবার বাদ জুম্মা রাজারগাঁওসহ এলাকার আলেমগণ তার এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে পীর এক সপ্তাহের মধ্যে মাজার ভেঙ্গে ফেলার আশ্বাস দেন।

(সিএম/এনডি/সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test