E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নীলফামারীতে অসহনীয় মাত্রায় শব্দদুষণ, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

২০২১ নভেম্বর ২২ ১৯:৩৮:১৫
নীলফামারীতে অসহনীয় মাত্রায় শব্দদুষণ, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

ওয়াজেদুর রহমান কনক, নীলফামারী : নীলফামারীতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উচ্চ-শব্দে মাইকের মাধ্যমে চালানো হয় প্রচার-প্রচারণা। এ উপজেলায় প্রতিদিন বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার প্রসঙ্গ নিয়ে প্রচারণায় মাইকিং ব্যবহারের দুঃসহ যন্ত্রণায় অতিষ্ট এলাকাবাসী। তাঁরা রিক্সা কিংবা ইজিবাইকে দুইটি মাইক বেঁধে, আবার কখনো ভ্যানে করে উচ্চশব্দে দিনরাত চালাচ্ছেন বিভিন্ন ধরনের প্রচার-প্রচারণা।

এসবের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের প্রচারণা, রয়েছে নতুন দোকান স্থাপনের প্রচারণা, নতুন ধানের জাত, শাক-সবজির বীজ, ঢাকাগামী পরিবহনের স্পেশাল সার্ভিস, বিশাল গরু-মহিষ জবাই, বিভিন্ন ব্যাটারী ক্রয়-বিক্রয়, মোটরসাইকেলের অফার, বিভিন্ন অফারের সিম বিক্রি, হোটেলের নতুন নতুন খাবার, কম মূল্যে লাইট বিক্রিসহ বিভিন্ন ধরনের প্রচার প্রচারণা।

চিকিৎসকের মতে, মানুষের জন্য শ্রবণের সহনীয় মাত্রা ৪০-৫৫ ডেসিবেল। তবে এই মাত্রা যদি ৭০ ডেসিবেলের অধিক হয় তাহলে তা শ্রবণ ক্ষমতার জন্য মারাত্মক ক্ষতিকরক।

এ প্রসঙ্গে নীলফামারী জেনারেল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিশেষজ্ঞ ডা. মো. আ. আউয়াল বলেন, ‘উপজেলায় প্রায় প্রতিদিন যে মাইকিং করা হয়, এসকল মাইকিংয়ের শব্দের মাত্রা মানুষের সহনীয় ক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি। এই অসহনীয় শব্দ বিশেষ করে শিশুদের জন্য খুব বেশি ক্ষতিকর। এভাবে উচ্চ শব্দে মাইকিং চলতে থাকলে, পর্যায়ক্রমে উপজেলার স্বাস্থ্য ঝুঁকি দিনদিন বৃদ্ধি পাবে। এক পর্যায়ে শ্রবণ সমস্যাসহ হতে পারে বিভিন্ন ধরনের রোগ।’

এদিকে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ যেসব স্থানে মাইকিং বন্ধ রাখার নিয়ম রয়েছে, তাও মানছে না কেউ। সরকারের বিধিমালা গেজেট আকারে বিভিন্ন জায়গায় সহনীয় ডেসিবেল এর মাধ্যমে মাইকিংয়ে প্রচার-প্রচারণার কথা বলা থাকলেও তারা কোন কিছুই না মেনে দিনরাত একইভাবে চালাচ্ছেন মাইকিং।

উপজেলার বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষক ও জনসাধারণের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বললে তারা জানান,নীলফামারীর সদরে মাইকিংয়ের প্রচার-প্রচারণা অনেক বেশি। মাইকিংয়ের উচ্চ আওয়াজের কারণে ক্লাসে পাঠদানে সমস্যা হয়। মাইকের শব্দে মুঠোফোনে ঠিকমতো কথাও বলা যায় না। নিয়মনীতি না মেনে মাইকিংয়ের এমন উচ্চ শব্দের প্রতিকার চেয়েছেন অভিজ্ঞ সচেতন নাগরিক ও শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিন ঘুরে প্রত্যক্ষভাবে একাধিক ভুক্তভোগীর অভিযোগে জানা যায়, উচ্চ-শব্দে মাইকিং ব্যবহারের কারনে দোকান-পাট, বাসাবাড়ি, ধর্মীয় উপাসনালয়, স্কুল-কলেজ, চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানসহ পথচারীরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন।

কেউ কেউ বাসায় বা হাসপাতালে অবস্থানরত বয়ষ্ক ও শিশুদের কথা বিবেচনায় সুধীমহলের দৃষ্টি আর্কষণ করেছেন।

এ বিষয়ে নীলফামারী সদর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা জেসমিন নাহার বলেন, সাধারণ জনগণের সমস্যা করে কোন প্রচার-প্রচারণা চালানো যাবে না। যারা নিয়ম না মেনে মাইকিং করে প্রচার-প্রচারণা করছে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(ওআরকে/এএস/নভেম্বর ২২, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test