E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

অসময়ের বৃষ্টিতে কৃষকের স্বপ্ন জলে

২০২১ ডিসেম্বর ০৬ ২২:১৩:৪৮
অসময়ের বৃষ্টিতে কৃষকের স্বপ্ন জলে

এ কে আজাদ, রাজবাড়ী : দেশের অন্যতম কৃষি প্রধান জেলা রাজবাড়ী। এ জেলায় ধান, পাট, গম, পিয়াজ, রসুন সহ সকল প্রকারের শাক সবজি উৎপাদিত হয়ে থাকে। তবে অসময়ের টানা বৃষ্টিতে শীতকালীন সবজি সহ জমিতে কেটে রাখা পাকা আমন ধান, মুড়িকাটা পেয়াজ ও পিয়াজের চারা (দানা) হালি পেয়াজের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়েছে। তবে জেলা কৃষি বিভাগ বলছেন, কৃষকের কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা এখই বলা সম্ভব নয়।

পাঁচটি উপজেলা নিয়ে গঠিত এ জেলার মানুষ বেশিরভাগ কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল। দেশের ৩য় অবস্থানে রয়েছে এ জেলা পিয়াজ উৎপাদনে।

জেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, জেলায় এ বছর প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৪ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চলমান রয়েছে। যেখানে ক্ষতির ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।

এছাড়া জেলার প্রতিটি উপজেলা হয় পদ্মা নয় তো গড়াই নদীর তীরবর্তী হওয়ায় মুড়িকাটা পেয়াজ ভালো হয়। এ বছর জেলায় ৪ হাজার হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পিয়াজের আবাদ চলমান রয়েছে।যেহেতু মুড়িকাটা পেয়াজ আর কিছু দিনের মধ্যে কৃষক তুলবে সেহেতু অসময়ের বৃষ্টির কারণে ফলন তেমন ভালো হবে না, যার কারণে মুড়িকাটা পিয়াজের ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।

জেলার প্রতিটি মাঠে পিয়াজ চাষের জন্য কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে পিয়াজের বীজ (দানা) বপণ করা হয়েছে।তবে সেগুলো বিরতিহীন বৃষ্টির কারণে পানির নিচে তলিয়ে গেছে। জেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, এ বছর ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে পিয়াজের আবাদ লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে।

সরেজমিনে জেলার কয়েকটি মাঠে গিয়ে দেখা যায়, কোন কোন জমিতে কাটা ধান পানির উপর ভাসছে। আবার পিয়াজের বীজতলা (দানা) উপর স্রোত বইছে। মুড়িকাটা পেয়াজের ক্ষেতে পানি বন্দী। অন্য দিকে শীতকালীন সবজি ফুলকপি ও পাতাকফির গাছগুলো মাটিতে পড়ে রয়েছে। কোন কোন কৃষক জমির আইল কেটে পানি জমি থেকে বের করার চেষ্টা করছে।

নাম প্রকাশে একজন কৃষক বলেন, কৃষি অফিস কখনো কৃষকের কল্যাণে কাজ করে না। যদি তারা আমাদের সঠিক তথ্য জানাতো তবে আমরা আর কিছু পারি আর না পারি কাটা ধান বাড়িতে নিতে পারতাম।

পিয়াজের বীজতলা (হালি পেয়াজ) পাশে দাড়ি থাকা একজন কৃষক বলেন, আমরা পিয়াজ চাষ করে সারাবছর সংসার চালাই। গত বছর হালি পেয়াজ ২০/২২ হাজার টাকা করে কিনে লাগাতে হয়েছে পেয়াজ। এবার দানার দাম কম ছিলো। হালি (পেয়াজের চারা) ভালো হয়েছিল তাই সবার মনেই খুশি ছিলো। কারণ এবার পেয়াজ লাগাতে কম খরচ হবে। কিন্তু অসময়ের বৃষ্টির কারণে তা আর হলো না। আমাদের এলাকার কৃষক পেয়াজ লাগাতে না পারলে ক্ষেত পতিত পরে থাকবে। আর পতিত না রাখতে ধার দেনা করে পেয়াজ লাগাবে। যে অবস্থা হলো গত বছর থেকেও বেশি দামে হালি (পেয়াজের চারা) বিক্রি হবে।

(একে/এএস/ডিসেম্বর ০৬, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test