E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শৈলকূপায় মনোনয়ন বাণিজ্য ও জালিয়াতির নেপথ্যে কারা?

২০২২ জানুয়ারি ১৫ ১৮:৪৫:৩৮
শৈলকূপায় মনোনয়ন বাণিজ্য ও জালিয়াতির নেপথ্যে কারা?

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : সপ্তম ধাপে অনুষ্ঠিত ঝিনাইদহের শৈলকুপার মনোহারপুর ইউনিয়নে মনোনয়ন জালিয়াতির খবর ফাঁস হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। মনোনয়ন বানিজ্য ও জালিয়াতির নেপথ্যে রাঘব বোয়ালদের খুজে বের করে সাংগঠিনিক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছন ওই ইউনিয়নে মনোনয়ন বঞ্চিত বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নু। এ বিষয়ে তিনি দলীয় সভাপতি ও মনোনয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে উপযুক্ত তথ্য প্রমান দিয়ে আবেদন করেছেন। 

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, সপ্তম ধাপে অনুষ্ঠিত শৈলকূপার মনোহারপুর ইউনিয়নের তফসীল ঘোষনার পর গত ২ জানুয়ারী জেলা আওয়ামলীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু যৌথ সাক্ষর করে এক নাম্বারে মনোনয়ন প্রত্যাশী মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নু ও দুই নাম্বার ক্রমিকে জাহিদুল ইসলাম জাহিদের নাম প্রস্তাব করে পাঠান। যৌথ স্বাক্ষরে মনোনয়ন প্রত্যাশী দুই ব্যক্তির নাম প্রস্তাবের একদিন পর শৈলকূপার সংসদ সদস্য ও জেলা সভাপতি আব্দুল হাই দুই নং ক্রমিকে থাকা জাহিদুল ইসলাম জাহিদকে ত্যাগী নেতা আখ্যা দিয়ে দলীয় সভাপতির বরাবর ডিও লেটার প্রদান করেন। কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের মাধ্যমে প্রেরিত ওই ডিও লেটারে আব্দুল হাই উল্লেখ করেন জাহিদুল ইসলামের পিতা হুজুর আলী ২০০১ সালে বিএনপি জামায়াতের হাতে খুন হন। ইউনিয়নে জাহিদের জনপ্রিয়তা ও গ্রহনযোগ্যতা বেশি। তাকে মনোনয়ন দিলে নৌকার বিজয় হবে।

অন্যদিকে একই তারিখে জেলা আওয়ামীলীগের প্যাড ব্যবহার করে সভাপতি হিসেবে আব্দুল হাই এমপি ও শৈলকুপা উপজেলা আওয়ামলীগের আবহায়ক মতিয়ার রহমান স্বাক্ষর করেন। জেলা আওয়মীলীগের প্যাডে আগেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যৌথ সাক্ষর করে মনোনয়ন প্রত্যাশী দুই প্রার্থীর নাম পাঠানোর পর পুনরায় শৈলকূপা উপজেলা আহবায়ক মতিয়ার রহমানের এহেন স্বাক্ষর সম্বলিত চিঠি কি ভাবে মনোনয়ন বোর্ডের কাছে গেলো এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এটাকে অনেকে মনোনয়ন বাজিন্য ও জালিয়াতি হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। এই জালিয়াতির সঙ্গে দলটির কেন্দ্রীয় অফিসে কর্মরত কেউ না কেউ জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ভাবে জালিয়াতির মাধ্যমে নিজ দলের কর্মী হত্যা মামলার আসামী জাহিদুল ইসলাম নৌকার মনোনয়ন হাতিয়ে নেন।

এদিকে জাহিদ নৌকার মনোনয়ন পাওয়ার পর জেলা আওয়ামলীগের সভাপতি সম্পাদকের পাঠানো তালিকায় ১নং ক্রমিকে থাকা মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নু মনোনয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে মনোনয়ন পুনঃ বিবেচনার জন্য লিখিত আবদেন করেন।

আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, জেলা আওয়ামলীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুর যৌথ স্বাক্ষরে করা প্রস্তাবটি না পাঠিয়ে জেলা আওয়ামলীগের প্যাডে শৈলকূপা উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক সাক্ষরিত প্রস্তবনার চিঠি পাঠানো হয়। যে তালিকায় একক ভাবে যুবলীগ কর্মী হত্যা মামলার আসামী জাহিদুল ইসলামের নাম রয়েছে। পরবর্তীতে তাকেই নৌকার মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নু জেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামলীগের পাঠানো রেজুলেশন অনুয়াযী মনোনয় পুনঃবিবেচনার দাবী জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামলীগের সভাপতি আব্দুল হাই'র ব্যক্তিগত ব্যবহৃত (০১৫৫২৩১৯৬৯৫) মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বিষয়টি নিয়ে কথা হলে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু জানান, সকল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমরা জেলা আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরম যাচাই-বাছাই করে কেন্দ্রে পাঠিয়ে থাকি। মনোহরপুর ইউনিয়নে আমরা দুইজনকে সিলেকশন করে কেন্দ্রে পাঠিয়েছিলাম। পরবর্তীতে জানতে পারলাম কেন্দ্রে একজনের নাম পৌঁছাছে। এটা একটা বিস্ময়কর ঘটনা। যে বা যারা করেছে কাজটি ঠিক করে নাই।

(একে/এসপি/জানুয়ারি ১৫, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test