E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাঁধে অবরুদ্ধ আড়িয়াল খাঁ এখন বদ্ধ জলাশয়! 

২০২২ এপ্রিল ০৫ ১৫:০৭:৩৫
বাঁধে অবরুদ্ধ আড়িয়াল খাঁ এখন বদ্ধ জলাশয়! 

কটিয়াদী প্রতিনিধি : কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলা সদরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত আড়িয়াল খাঁ নদ। এক সময়ে আশেপাশের বহু এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারের মূল চালিকাশক্তি ছিল এই নদ। যে নদের বুক বয়ে চলত শত শত যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌকা। সেই নদের বুক চিরে নির্মাণ করা হয়েছে একাধিক বাঁধ। বাঁধে অবরুদ্ধ খরেস্রাতা আড়িয়াল খাঁ এখন বদ্ধ জলাশয়ে পরিণত হয়েছে। 

স্থানীয়রা জানান, আড়িয়াল খাঁ নদের বুকে প্রথম বাঁধ নির্মাণ করা হয় আশির দশকে। কটিয়াদী থানার সামনে থেকে ঝাকালিয়া পর্যন্ত একটি বাঁধ নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে প্রায় ২০ বছর পর পৌর এলাকার বীরনোয়াকান্দি থেকে চরনোয়াকান্দি এলাকায় আরেকটি বাঁধ দেওয়া হয়। এই বাঁধদ্বয়ের জেরই, কার্যত স্রোত হারিয়ে ফেলে আড়িয়াল খাঁ। সর্বশেষ বছরখানেক আগে ভরাদিয়া থেকে ফেকোমার আশ্রয়ণ প্রকল্প সংলগ্ন এলাকায় আরও একটি বাঁধ দেওয়া হয়। যা পরবর্তীতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে গত মার্চ মাসে অপসারণ করা হয়। বাঁধগুলো কটিয়াদী সদরের সঙ্গে জালালপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন অংশকে যুক্ত করেছে।

এলাকার মানুষের অভিযোগ, উন্নয়নের নামে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির উদ্যোগে এসব বাঁধ নির্মাণ করা হলেও নদটি এখন মরে গেছে। বর্তমানে নদটি দখল করে একের পর এক গড়ে উঠছে স্থায়ী-অস্থায়ী নির্মাণ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কটিয়াদী থানার সামনে থেকে ঝাকালিয়া ও বীরনোয়াকান্দি থেকে চরনোয়াকান্দি প্রান্তকে সংযোগকারী বাঁধ দুটির ওপর পাকা সড়ক নির্মিত হয়েছে। সড়ক দিয়ে চলছে ছোট-বড় যানবাহন। বাঁধের দু’পাশে কংক্রিটের নির্মাণ তৈরি হয়েছে। বর্তমানে কোথাও নদটির তলদেশে চাষ হচ্ছে বোরো ধান, কোথাও সামান্য জলাধার, কোথাও কচুরিপানায় আবদ্ধ।

এ সময় ফেকামারা আশ্রায়ণ প্রকল্পের বাসিন্দার বাবুল মিয়া, পলাশ, ময়নাসহ অনেকে জানান, আশ্রায়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারসহ ফেকামারা গ্রামবাসীকে জীবিকার তাগিদে ও ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়ার জন্য প্রতিনিয়ত আড়িয়াল খাঁ নদ পেরিয়ে উপজেলা সদরে যেতে হয়। তাই অপসারিত বাঁধের স্থানে দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি সেতু নির্মাণের দাবী জানান তারা। পাশাপাশি নদটিকে বাঁচাতে পুরানো বাঁধ দু’টিকে অপসারণ করে সেতু নির্মাণের দাবী জানান তারা। তাদের আশা, নদটি বেঁচে উঠলে এলাকার অর্থনীতিরও হাল ফিরবে।

কয়েক যুগ ধরে আড়িয়াল খাঁ নদকে নিবিড় ভাবে দেখছেন স্থানীয় শিক্ষক এম এ কুদ্দুছ জানান, একসময় আড়িয়াল খাঁ খরস্র্র্রোতা ছিল। তখন কটিয়াদী উপজেলার বাজারগুলোতে পাটের ব্যবসা রমরমা ছিল এ নদকে ঘিরে। ময়মনসিংহ, ভৈরব, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এই নদ দিয়ে নৌপথে যোগাযোগ ও মালামাল পরিবহন হতো। এই নৌপথে পণ্যবাহী বজরা, যাত্রী নৌকা, লঞ্চ, জেলে ডিঙি সবই চলত। বাঁধের কারণে আড়িয়াল খাঁ এখন মৃতপ্রায়। এখন এই নদে পানি প্রবাহ নেই।

কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতিশ্বর পাল বলেন, সর্বশেষ নির্মিত বাঁধটি জেলা প্রশাসনের নির্দেশে ইতোমধ্যে অপসারণ করা হয়েছে। পুরনো বাঁধগুলোর বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

(ডিআরডি/এসপি/এপ্রিল ০৫, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test