E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

৩০ হাজার টাকায় সুদ তিন লাখ!

ইউপি সদস্যের সুদ ব্যাণিজ্যে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

২০২২ এপ্রিল ২৮ ১৮:২৪:৫৫
ইউপি সদস্যের সুদ ব্যাণিজ্যে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে দাদন ব্যবসায়ীরা। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এক দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে দেড় লাখ টাকা পরিশোধ করার পরও তিন বছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ টাকা। ওই টাকা না দিলে ঋণগ্রহীতাকে মামলায় জড়ানোর হুমকিও দিচ্ছেন দাদন ব্যবসায়ী। তার ভয়ে বাড়িছাড়া হয়েছেন কয়েকজন ভুক্তভোগী। এ ঘটনা উপজেলার জোড়াদহ ইউনিয়নের হরিশপুর, সাতব্রীজ, বেলতলাসহ বিভিন্ন এলাকার।

ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অন্তত ১০-১৫ জন ব্যক্তি আছেন যারা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, দিনমজুরসহ বিভিন্ন পেশায় জড়িত। তাদের কেউ করোনাকালে কর্মহীন হয়ে অভাবে পড়ে, কেউবা ব্যবসার পরিধি বাড়ানোসহ নানা প্রয়োজনে চড়া সুদে ওই গ্রামের সলোক মোল্লা নামে এক দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিলেন। তাদের কাছ থেকে কৌশলে স্বাক্ষর করা ফাঁকা চেক বইয়ের পাতা হাতিয়ে নেন ওই সুদে কারবারী। সারাদিন পরিশ্রম করে যা রোজগার হয় তা মহাজনের সুদ পরিশোধ করতেই শেষ হয়ে যায়। ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনযাপন করেণ তারা। একদিন সুদের টাকা না দিলে শুনতে হয় অকথ্য গালিগালাজ কিংবা মামলার হুমকি। কিন্তু সংসার চালাতে গিয়ে দুয়েকদিন সুদের টাকা বাকি পড়ে ঋণগ্রহীতাদের। ওদিকে মহাজনও চক্রবৃদ্ধিসহ নানা কূটকৌশলে বাড়াতে থাকে সুদের টাকার পরিমান। অভিযুক্ত দাদন ব্যবসায়ী সলোক মোল্লা উপজেলার হরিশপুর গ্রামের ইশা মোল্লার ছেলে ও জোড়াদহ ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য।

উপজেলার বেলতলা গ্রামের নাজমুল ইসলাম নামে এক ভুক্তভোগী জানান, তিন বছর আগে অভাবে পড়ে ওই দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলাম। এ পর্যন্ত জমি বিক্রি করে তাকে দেড় লাখ টাকা পরিশোধ করে আমি এখন সর্বশান্ত। এরপরও সলোক মোল্লা আমার কাছে আরও দেড় লাখ টাকা দাবি করছে। ওই টাকা না দিলে মামলা দিয়ে জেল খাটানোসহ নানা ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।

হরিশপুর গ্রামের রবু হোসেন নামে এক ব্যক্তি জানান, তিনিও সুদে কারবারী সলোক মোল্লার কাছ থেকে ১২ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। সুদ আসল মিলিয়ে ৭০হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন। এরপরও সলোক মোল্লা তার কাছে অতিরিক্ত আরও এক লাখ ২০ হাজার টাকা দাবি করছেন। এ টাকা আদায়ের জন্য সে কয়েক দফায় আমার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। তার ভয়ে জীবন বাঁচাতে তিন বছর ধরে আমি বাড়িছাড়া রয়েছি। অভিযুক্ত সলোক মোল্লার কাছে জানতে তার মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল দেওয়ার পরও তিনি তা রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে হরিণাকুণ্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, ভুক্তভোগীরা এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হরিণাকুণ্ডু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহা জানান, অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(একে/এসপি/এপ্রিল ২৮, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

১২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test