E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ঝিনাইদহ পৌরসভার সেকেন্ড মেয়র কে এই হাবিব?

২০২২ মে ১১ ১৭:৫৬:৪৭
ঝিনাইদহ পৌরসভার সেকেন্ড মেয়র কে এই হাবিব?

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : হাবিবুর রহমান হাবিব কার্যসহকারী পদে চাকুরী করেন ঝিনাইদহ পৌরসভায়। কিন্তু ক্ষমতার দাপট মেয়রের মতো। পৌরসভার কর্মচারী এমনকি কর্মকর্তারাও তটস্থ থাকেন তার ভয়ে। কার্যসহকারী পদে চাকরী করে নামে বেনামে গড়েছেন অঢেল সম্পত্তি। ব্যাংকে আর বাড়িতে গচ্ছিত নগদ টাকা। শহরের বিভিন্ন স্থানে জমি আর আলীশান বাড়ি। চাকচিক্য ও বিত্ত বৈভবের কমতি নেই হাবিবের। মেয়র পদে যেই আসুক হাবিব নামে টাকা কামানোর মেশিনের কাছে সবাই ধরা। পৌর এলাকায় বাড়ি করতে হলে জমির প্ল্যান পাশ ও জমি মাপজোখের খবরদারী হাবিবের হাতে। জমির আপত্তি নিস্পত্তি বিচার শালিস হাবিব ছাড়া অচল। এই বিভাগে টাকার ছড়াছড়ি। টাকা নিয়ে জমির মাপজোখ সামন্য হেরফের করে দিলেই কাড়ি কাড়ি টাকার হাতছানি। এছাড়া রয়েছে দোকান বরাদ্দের একক ক্ষমতা। তিলকে তাল আর নয়কে ছয় বানানের কৌশল জানা হাবিব তাই প্রতিটি মেয়রের কাছেই আস্থাভাজন ও ক্ষমতাধর হয়ে ওঠেন। গড়ে তোলেন সিন্ডিকেট। ঝিনাইদহ পৌরসভার সবস্ত অবৈধ আয়ের আদায়কারী হচ্ছে এই হাবিব। 

সম্প্রতি ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের অভিযানে পৌরসভার অবৈধ মার্কেট উচ্ছেদ হওয়ার পর হাবিবের অবৈধ ব্যাবসা তথ্যভিত্তিক ভাবেই ফাঁস হয়ে পড়ে। দোকান মালিকদের কাছ থেকে তিন’শ টাকার ননজুডিশয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তি করে লাখ লাখ টাকা আদায় করেছেন কার্যসহকারী হাবিব। কিন্তু এই টাকা পৌরসভার ফান্ডে জমা হয়নি। সমুদয় টাকা তিনি সিন্ডিকেট তৈরী করে পকেটস্থ করেছেন।

শহরের পাগলাকানাই, ট বাজার, নতুন হাটখোলা, আরাপপুর, ট্রাক টার্মিনালসহ গুরুত্বপূর্ন স্থানে মার্কেট বানিয়ে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ সব ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৮/১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জমানত হিসেবে নিয়ে ভাগাভাগী করা হয়েছে বলে কথিত আছে। আরাপপুরের এক দোকান ব্যবসায়ী জানান, জেলা পরিষদের কাছ থেকে কম টাকায় জমি লীজ নিয়ে পৌর মার্কেট বানিয়ে তাদের কাছ থেকে ১০/১৫ লাখ টাকা করে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ঝিনাইদহ নতুন হাটখোলার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, তাদের কাছ থেকে ৪/৫ লাখ টাকা করে নিয়ে মাত্র ২০ হাজার টাকার রশিদ দিয়েছে হাবিব। অথচ ওই জমি হাটের এবং জেলা প্রশাসকের মালিকানাধীন। আসাদুজ্জামান নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, তার কাছ থেকে বাড়ির প্ল্যান পাশ করার জন্য ঘুষ নেন হাবিব। তিনি আরো বলেন, চাহিদা মাফিক ঘুষ দিলে জমির প্ল্যান পেতে মাত্র ২৪ ঘন্টা লাগে হাবিবের কাছে।

এদিকে আদর্মপাড়ার মামুন নামে এক যুবক অভিযোগ করেন, তার জমি নিয়ে বিচার ছিল পৌরসভায়। সেখানে হাবিব প্রতিপক্ষের কাছ থেকে মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে উল্টো প্রতিবেদন দেয়। এতে তিনি ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হন।

হাফিজুর রহমান নামে এক নাগরিক জানান, ঝিনাইদহ পৌরসভার নাগরিকদের নাজেহাল করে ছাড়েন হাবিব। পৌরসভায় কাজে আসা প্রতিটি মানুষ তার প্রতি ক্ষুদ্ধ। এমন একজন দুর্নীতিবাজ ব্যক্তির কি করে চাকরি থাকে তা নিয়ে তিনি উস্মা প্রকাশ করেন।

পাহাড়সম অভিযোগের বিষয়ে কার্যসহকারী হাবিবুর রহমান বলেন, দোকান বরাদ্দের টাকা দিয়ে ঘর তৈরী করে দেওয়া হয়েছিল। সে কারণে এই টাকা পৌরসভার ফান্ডে নেই। তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ করা হচ্ছে তার কোন সত্যতা নেই। আমার কোন অবৈধ সম্পদ নেই। এ সব আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ছাড়া কিছুই না।

(একে/এসপি/মে ১১, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test