E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গোপালগঞ্জে স্কুল শিক্ষকের ধান কেটে নিল প্রতিপক্ষ

২০২২ মে ১৩ ১৭:২৮:১৬
গোপালগঞ্জে স্কুল শিক্ষকের ধান কেটে নিল প্রতিপক্ষ

তুষার কান্তি বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জে অবসরপ্রাপ্ত হিন্দু স্কুল শিক্ষক কানাই লাল বনিকের চাষাবাদ করা ধান জোর করে কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিপক্ষ পাশ্ববর্তী নিজড়া গ্রামের কামাল মিনার বিরুদ্ধে ওই শিক্ষক গোপালগঞ্জ সদর থানায় শুক্রবার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার বিকেলে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নিজড়া ইউনিয়নের নারিকেলবাড়ী গ্রামে।

নারিকেলবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কানাই লাল বণিক বলেন, ১১ বছর আগে একটি জমি কিনে চাষাবাদ করে আসছিলেন। কিন্তু জমির মালিক বিদেশে থাকায় তিনি জমি রেজিস্ট্রি করে দেন নি। সম্প্রতি জমির মালিক দেশে আসেন। পাশ্ববর্তী নিজড়া গ্রামের প্রভাবশালী ভূমিদস্যু হিসেবে পরিচিত কামাল মিনা প্রভাব খাটিয়ে জমি রেজিস্ট্রিতে বাধা দেয়। কিছু দিন আগে জমির মালিককে বেশি টাকা দিয়ে গোপনে কামাল মিনা জমি রেজিস্ট্রি করে নেন।

অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কানাই লাল বণিক আরো বলেন, ২ বছর আগে কামাল মিনা আমার একটা জমিতে জোর করে পুকুর কাটার চেষ্টা করেন। তখন প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তিনি সেটা বন্ধ করতে বাধ্য হন। পরবর্তীতে ঝামেলা এড়াতে ওই জমি নৌবাহিনীর একজন কর্মকর্তার কাছে বিক্রি করে দিলে কামাল মিনা আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হন। তারপর থেকে তিনি বিভিন্নভাবে আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে থাকে। প্রতিশোধ নিতে তিনি আমার টাকা দিয়ে কেনা জমি তার নামে রেজিস্ট্রি করে নেয়। এব্যাপারে নিজড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহমেদ আলী (ধলু মিনা) কে জানালে তিনি আমাকে আমার চাষাবাদ করা জমির ধান আমাকে কেটে নিতে বলেন। চেয়ারম্যানের নির্দেশে আমি ধান কাটি কিন্তু কামাল মিনা সেই ধান তার লোক দিয়ে নিয়ে গেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই। আমরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোক বলে সে যা ইচ্ছে তা করছে। কামাল স্বাস্থ্য সহকারী পদে সরকারি চাকরী করেন। কিন্তু এমন অপকর্মে লিপ্ত থাকেন সব সময়। এরআগে অন্যের সাথে এমন অপকর্ম করেছেন। বিষয়টি পুলিশকে জানালে গোপালগঞ্জের বৌলতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই লিয়াকত হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন।

বৗলতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই লিয়াকত হোসেন বলেন, ওই জমি কিছু দিন আগে কামাল মিনা কিনে নিয়েছেন। সে কারণে তিনি ওই জমির ধান কেটে নিয়ে গেছেন। এছাড়া জমিজমা নিয়ে তাদের মধ্যে আগে থেকেই বিরোধ ছিলো। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে। দু’ পক্ষই বিষয়টি নিজড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আহমেদ আলী ধলু মিনাকে অবহিত করেছে। তাই স্থানীয়ভাবে মিমাংসার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে নিজড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আহমেদ আলী ধলু মিনা বলেন, ওই জমি কানাই স্যার ১১ বছর আগে ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকায় মৌখিক ভাবে কিনেছিলেন। তখন বায়না বা রেজিস্ট্রি করে নেন নি। স্যার ও জমি ভোগ দখলে রয়েছে। এরমধ্যে জমির মালিক জমিটি কামালকে লিখে দিয়েছে। আমি ঢাকায় আছি। এলাকায় এসে বিষয়টি মিমাংসা করে দেব।

অভিযুক্ত কামাল মিনা বলেন, ওই জমি আমরা লিখে নিয়েছে। এখন জমির মালিকানা আমাদের। কানাই মাস্টার আমাদের ওই জমি বর্গা করেছে। তাই আমরা ভাগের ধান নিয়ে এসেছি। এ ব্যাপারে পুলিশকে আমরা আমাদের কাগজপত্র দেখিয়োিছ। কিন্তু কানাই মাস্টার কোন কাগজপত্র দেখাতে পারে নি।

(টিকেবি/এসপি/মে ১৩, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test