E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

মই দিয়ে উঠতে হচ্ছে ব্রীজে, চার বছরেও শেষ হয়নি নির্মাণ কাজ

২০২২ মে ১৫ ২০:০৮:৩৮
মই দিয়ে উঠতে হচ্ছে ব্রীজে, চার বছরেও শেষ হয়নি নির্মাণ কাজ

বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার হুড়কা ইউনিয়নের বগুড়া নদীর উপর নির্মানাধীন বগুড়া খেয়াঘাট ব্রীজটির কাজ গত চার বছরেও শেষ হয়নি। এর ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই জীবনের ঝুকি নিয়ে র্নিমানাধীন ওই ব্রীজটি দিয়ে পারাপার হচ্ছে ১০ গ্রামের প্রায় ৭ হাজার মানুষ। তবে, রামপাল উপজেলা প্রকৌশলী বলছেন করোনা মহামারির ও ব্রীজটির সংযোগ সড়কের জায়গা নিয়ে স্থানীয় দুই ব্যক্তির করা মামলার কারনে দুই দফায় ব্রীজটির নির্মান কাজের সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, এলজিইডি’র অর্থায়নে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে নির্মাণ কাজ শুরু হয় বগুড়া খেয়াঘাট ব্রীজটির। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আইটি এন্ড জেই এই ব্রীজটির নির্মাণ কাজ শুরু করে। ৬০ মিটার দৈর্ঘের ওই ব্রীজটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৯২ লাখ ৫১ হাজার ১৩৩ টাকা। ইতিমধ্যে ব্রীজটির ৯৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে জনসাধারণের চলাচলের জন্য ব্রীজটি উম্মুক্ত করে দেয়ার কথা বলা হলেও সেটি সম্ভব হয়নি। নতুন করে মেয়াদ বাড়িয়ে আগামী জুন মাসে ব্রীজটি উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ।

সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হুড়কা ইউনিয়নের বেলাই, ভেকটমারী, গাজিখালী, কাঠামারী, নলবুনিয়া, গজগজিয়া, হুড়কা, চাড়াখালী ও ছিদামখালী গ্রামের প্রায় ৭ হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র সহজ মাধ্যম এই ব্রীজটি। ব্রীজটির সংযোগ সড়কের কাজ এখনো শেষ হয়নিয়। সংযোগ সড়কের কাজ না থাকায় বাঁসের মই দিয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে যাতায়াত করছে স্থানীয়রা।

স্থানীয় অমল দাস বলেন, ‘কয়েক বছর ধইরে দেখতিছি এই ব্রীজটার কাজ হচ্ছে, কাজ কবে যে শেষ হবে তার তো ঠিক ঠিকানা নেই। রামপাল সদর, মোংলা ও বাগেরহাট যাওয়ার জন্যই আমাগো এই নদী পার হয়ে যেতে হয়। এছাড়া আমাগো তো আর কোন উপায় নেই, তাই বাধ্য হয়ে ব্রীজের ওই মই বেয়ে যাতি হয়। আমরা বা কি করবো, আমাগো তো কোন উপায় নেই’।

সুজন মজুমদার বলেন, হুড়কা ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র। তারা কৃষিকাজ, মৎস্য ও মোংলা ইপিজেড এ শ্রমিক হিসাবে কাজ করেন। বগুড়া নদী পার হয়ে, তাদের শহরের যাতায়াত করতে হয়। এছাড়া যাতায়াতের বিকল্প যে পথটি রয়েছে, সেটি প্রায় ১০ কিলোমিটার ঘুড়ে যেতে হয়। তাই হাজার হাজার মানুষের যাতায়াতের সহজ মাধ্যম এই ব্রীজটি দ্রুত মানুষের চলাচলের উন্মুক্ত করার দাবি জানাই।

হুড়কা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তপন কুমার গোলদার বলেন, ২০১৮ সালের শেষের দিকে বগুড়া খেয়াঘাট ব্রীজটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রথম দিকে ব্রীজটির নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে চললেও একটা সময় করোনা মহামারি ও জমি অধিগ্রহন সংক্রান্ত মামলার কারনে ব্রীজটির কাজ থেমে যায়। ম‚ল ব্রীজটির নির্মান কাজ শেষ হয় অনেক আগেই। সমস্যা হচ্ছে ব্রীজটির একঅংশের সংযোগ সড়ক নিয়ে। সংযোগ সড়কটির কিছু অংশ ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি থাকায় স্থানীয় বাসিন্দা খিরোজ দাস ও প্রতাপ রায় নামের দুই ব্যাক্তি মামলা করে। ওই মামলার কারনে ব্রীজটির সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। জমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপ‚রন বাবদ খিরোজ দাসকে দুই লাখ ও প্রতাপ রায়কে এক লক্ষ ২৫ হাজার দেয়ার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সংযোগ সড়কের কাজ শেষ করে গুরুত্বপূর্ণ এই ব্রীজটি জনগণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।

রামপাল উপজেলা প্রকৌশলী মো. গোলজার হোসেন বলেন, করোনা মাহামারি ও সীমানা জটিলতায় মামলা কারনে বগুড়া খেয়াঘাট ব্রীজটি কাজ দুই দফা পিছানো হয়েছে। ইতি মধ্যে ব্রীজটির ৯৫ শতাংস কাজ সম্পন্ন হয়েছে, এখন সংযোগ সড়কের কাজ চলছে। আশা করছি আগামী জুন মাসে ব্রীজটি জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। সীমানা জটিলতায় যারা মামলা করেছিলো, তাদের জমি অধিগ্রহণ বাবদ ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে দ্রুত গতিতে সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ চলছে।

(এসএকে/এএস/মে ১৫, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test