E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

আ.লীগ নেতা রাসেলের নারী কেলেংকারীর একাধিক ছবি ভাইরাল

২০২২ জুন ১৫ ১৮:২৫:২৪
আ.লীগ নেতা রাসেলের নারী কেলেংকারীর একাধিক ছবি ভাইরাল

সোহেল সাশ্রু, কিশোরগঞ্জ : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আওয়ামী লীগ নেতা মুফতি ইলিয়াস মাহমুদ কাসেমী রাসেলের নারী কেলেংকারীর একাধিক ছবি ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল হওয়া ছবি এবং ‘মো. সৌরভ আহম্মেদ’ নামের ফেসবুক আইডি থেকে লেখা “রোমাঞ্চ রে........ফুল.! কুলিয়ারচর বাজার কমিটির কলঙ্কিত সভাপতি, কুলিয়ারচর পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক, কুলিয়ারচরের সকল অপকর্মের মাস্টারমাইন্ড, বিচার সালিশ নামের প্রহসন করা এই রাসেল (মুফতি রাসেল) এর বিচার চাই মাননীয় সংসদ সদস্য জননেতা নাজমুল হাসান পাপন সাহেবের কাছে। আর কত হয়রানির শিকার হবে এই কুলিয়ারচরবাসী। আওয়ামী লীগ থেকে দ্রুত আজীবন বহিস্কারসহ শাস্তি দাবি করছি। বিচার চাই, বিচার চাই, বিচার চাই।” এমন লেখা দেখে স্থানীয় কুলিয়ারচর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, আলেম সমাজসহ সাধারণ জনগণের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। তার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারাও চটেছেন। তারা প্রকাশ্য সমাবেশে মুফতি রাসেলের নানা অপকর্ম তুলে ধরছেন। 

গত ১২ জুন রোববার থেকে মো. সৌরভ আহম্মেদ ও Shoriful Islam Pradhan নামের ফেসবুক আইডিসহ বিভিন্ন আইডি থেকে কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর শহর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক, জামিয়া আরাবিয়া নূরুল উলূম কুলিয়ারচর মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল এবং কুলিয়ারচর বাজার ব্যবসায়ী সমিতি পরিচালনা কমিটির সভাপতি মুফতি ইলিয়াস মাহমুদ কাসেমী রাসেলের নারী কেলেংকারীর বেশ কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

মুফতি ইলিয়াস মাহমুদ কাসেমী রাসেল কুলিয়ারচর পৌরসভার প্রয়াত মেয়র আলহাজ্ব আবুল হাসান কাজলের জামাতা ও কুলিয়ারচর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র ইমতিয়াজ বিন মুছা জিসানের ফুফাতো ভাই এবং চাচাতো বোনের স্বামী। এছাড়া কুলিয়ারচরের অহংকার আওয়ামী লীগের প্রয়াত উপদেষ্টা আলহাজ্ব মো. মুছা মিয়া (সিআইপি)র ভগ্নিপতি।

জানা যায়, গত ১১ জুন শনিবার বিকালে কুলিয়ারচর পৌর এলাকার পালটিয়া-মাসকান্দি ঈদগাহ মাঠে পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি সৈয়দ হাসান সারওয়ার মহসিনের সভাপতিত্বে সামাজিক শৃঙ্খলা বাস্তবায়ন কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এক সভায় প্রধান অতিথি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নির্বাহী সদস্য আলহাজ্ব ইয়াছির মিয়া ও বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কালামসহ বিভিন্ন বক্তা মুফতি ইলিয়াস মাহমুদ কাসেমী রাসেলকে জমি দখলবাজ, চাঁদাবাজ, দুর্নীতিবাজ আখ্যায়িত করে বলেন, রাসেল কুলিয়ারচর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদসহ জামিয়া আরাবিয়া নূরুল উলূম কুলিয়ারচর মাদ্রাসার টাকা লুটপাট করে আসছেন। কুলিয়ারচর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ হয়ে গেছে ব্যবসার জায়গা।

এখানে যত অন্যায়, যত অত্যচার যত জুলুম সব এই মসজিদ মাদ্রাসায় হয়। বিচারের নামে এই মাদ্রাসায় টর্চার সেল বানিয়েছেন তিনি। সন্ধ্যার পর এই মসজিদ ও মাদ্রাসায় বিচারের নামে প্রহসন করা হয়। কেউ তার ডাকে সারা না দিলে তাকে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ধরে আনা হয় এখানে। এই মসজিদ মাদ্রাসায় বহু দোকান আছে। এসব দোকান থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আসছে, কিন্তু হিসাব নেওয়ার কেউ নেই। তিনি প্রথমে ছিলেন জামায়াতপন্থী, পরে হয়ে যান হেফাজত নেতা। বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করেছেন। তিনি অন্য জেলা থেকে কুলিয়ারচর এসে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন উল্লেখ করে বক্তারা আরো বলেন, বহিরাগত কুলাঙ্গারদের কর্তৃক শান্ত কুলিয়ারচরকে আর অশান্ত করতে দেওয়া হবে না। সময় থাকতে কুলিয়ারচর ছাড়, তা না হলে কালী নদী পার হতে দেওয়া হবেনা। এমন বক্তব্য দেওয়ার পরদিন মুফতি ইলিয়াস মাহমুদ কাসেমী রাসেলের নারী কেলেংকারীর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

অপরদিকে মুফতি রাসেলের অনুসারী মো. সারোয়ার আলমসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, মুফতি রাসেলের যে ছবিগুলো আপলোড করা হয়েছে, সব এডিট করা, ষড়যন্ত্রমূলক, মিথ্যা ও বানোয়াট। আমরা এর বিচার চাই।

এ ব্যাপারে মুফতি ইলিয়াস মাহমুদ কাসেমী রাসেলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমারই রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কুলিয়ারচর শাখার একটি অংশ আমার বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার করে যাচ্ছে। এছাড়া নারী কেলেংকারীর মতন ঘটনাও প্রচার করছে। আমি যেন কুলিয়ারচর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের কাছে ও জনগণের কাছে হেয়প্রতিপন্ন হই, তাই আওয়ামী লীগের একটি অংশ এ ধরণের ভিত্তিহীন অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। আমি এসব ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। এছাড়া যারা এসব অপকর্ম আমার বিরুদ্ধে ছড়িয়ে যাচ্ছে, আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এ প্রতিনিধির সাথে কথা বলার সময় তিনি বলেন, ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া আমার সাথে যে নারীটি আছে তাকে আমি ওইরকমভাবে চিনি না। ওই মহিলা একদিন আমার কাছে যে কোন ঘটনার বিচার প্রার্থী হয়ে কয়েকবার এসেছিলেন। এর বেশী আমি কিছুই জানি না। কিন্তু তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ওই নারীর সাথে ছবি যোগ করে ফেসবুকে ভাইরাল করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে কুলিয়ারচর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ইমতিয়াজ বিন মুছা জিসান এর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর ০১৭৭১৭৭৭৭৭৭ যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি। তাই বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

(এস/এসপি/জুন ১৫, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test