E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ডিসেম্বরেই পাতাল জয়, খুলবে ‘বঙ্গবন্ধু টানেল’

২০২২ জুন ৩০ ১৫:১৩:১৪
ডিসেম্বরেই পাতাল জয়, খুলবে ‘বঙ্গবন্ধু টানেল’

জে. জাহেদ, চট্টগ্রাম : স্বপ্নের বঙ্গবন্ধুর টানেল চালু হলে কর্ণফুলী নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠবে সাংহাইয়ের মতো ওয়ান সিটি টু টাউন। কক্সবাজার ও দক্ষিণ চট্টগ্রামগামী গাড়িগুলোকে আর বন্দরনগরীতে ঢুকতে হবে না। চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড হয়ে টানেলের মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে। ফলে চট্টগ্রাম নগরে যানবাহনের চাপ কমে যাবে। টানেলকে ঘিরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের পর্যটনশিল্পের আরও বিকাশ ঘটবে।

বন্দরনগরী চট্টগ্রামকে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ মডেলে গড়ে তুলতে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ করছে সরকার। দেশের প্রথম এই সুড়ঙ্গপথের নামকরণ করা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’। এই মেগা প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। আগস্ট মাস পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক ভৌত অগ্রগতি ৭৫ শতাংশ। আশা করা হচ্ছে, ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই এই টানেলের কাজ শেষ হবে। স্বপ্নের এই টানেল দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

এখন যে ২৫ শতাংশ কাজ বাকি রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে এপ্রোচ সড়ক নির্মাণ, টানেলের অভ্যান্তরের সড়কে পিচ ঢালাই এবং ইউটিলিটি লাইন স্থাপন। সব ঠিক থাকলে ডিসেম্বরের মধ্যেই এসব কাজ শতভাগ সম্পন্ন হবে বলে টানেল নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসিএল) জানিয়েছে।

সিসিসিসিএল সূত্র জানায়, চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণের কাজ ডিসেম্বর মাসেই শতভাগ সম্পন্ন হবে। প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করতে দিন রাত কাজ করছেন চায়নার প্রকৌশলীরা। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে শুরু হওয়া এই টানেল নির্মাণের কাজ ৬০ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করার চুক্তি থাকলেও তার আগেই কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন নির্মাণকারী সংস্থাটি।

সিসিসিসিএল-এর উপ ব্যবস্থাপক হুয়াং ইউয়ে ছুয়ান বলেন ‘কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেলের মূল অবকাঠামো নির্মাণ শেষ হয়েছে। নদীর দুই প্রান্তে ডায়াডেক্ট নির্মাণ, বোর্ড পাইল কনক্রিট পিয়ার, কলার বিমসহ সব কাজ প্রায় শেষ। এখন নদীর দুই পাড়ে চলছে পিয়ার ক্যাপ ও ফেব্রিকেটেড বক্স গার্ডার নির্মাণসহ অন্যান্য কাজ।’

বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশীদ চৌধুরী বলেন, ‘ইতোমধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করতে বাংলাদেশ ও চায়নার ৩০০ প্রকৌশলীসহ ১০০০ কর্মী রাত-দিন কাজ করছে। বর্তমানে টানেলের সঙ্গে সংযোগের জন্য এপ্রোচ সড়ক নির্মাণ এবং টানেলের অভ্যান্তরে সড়ক নির্মাণের কাজ দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘টানেলের অভ্যান্তরে বিভিন্ন ইউটিলিটি লাইন স্থাপনের কাজও সম্পন্ন করা হচ্ছে। আশা করছি ডিসেম্বরের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনের জন্য শতভাগ প্রস্তুত হয়ে যাবে।’

বঙ্গবন্ধু টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। এর মধ্যে টানেলের প্রতিটি টিউবের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার এবং ব্যাস ১০ দশমিক ৮০ মিটার। প্রতিটি টিউবে দুটি করে মোট চার লেনের সড়ক নির্মিত হয়েছে। মূল টানেলের সঙ্গে পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযুক্ত সড়ক হচ্ছে। এছাড়া রয়েছে ৭২৭ মিটার দীর্ঘ একটি ওভারব্রিজ।

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে সংসদ নির্বাচনের আগে চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে এক নির্বাচনী সমাবেশে এই টানেল নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে এই টানেল নির্মাণের উদ্যোগ নেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৫ সালে বঙ্গবন্ধু টানেল প্রকল্পটি অনুমোদন হয়। ২০১৭ সালে শুরু হয় মূল টানেল নির্মাণকাজ।

(জেজে/এএস/জুন ৩০, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test