E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

এমবিএ পাশ করা গৃহবধূ জেসমিনের গরুর খামার

২০২২ জুলাই ০৪ ১৮:২১:৩৮
এমবিএ পাশ করা গৃহবধূ জেসমিনের গরুর খামার

অরিত্র কুণ্ডু, ঝিনাইদহ : এমবিএ পাশ করে চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হয়ে সবাইকে চমকিয়ে দিয়েছেন জেসমিন। এখন তিনি গরুর খামারী। স্বামীর গচ্ছিত তিন লাখ টাকা আর শ্বশুর বাড়ির আটটি গরু দিয়ে খামার শুরু করেন জেসমিন। সংসার সামলে গরু পালনে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। এর পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। জেসমিন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ছোট ঘিঘাটি গ্রামের ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী। ছোট ঘিঘাটি গ্রামেই গড়ে তুলেছেন ফাতেমা এগ্রো অ্যান্ড ডেইরি ফার্ম নামে একটি গরুর খামার।

জেসমিন খাতুন জানান, সাত বছর আগে বিয়ে হয়। স্বামী সরকারি চাকরিজীবী। একটি কন্যাসন্তানও আছে তাদের। ২০০৯ সালে উত্তর নারায়ণপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০১১ সালে আবদুর রউফ ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। এর পর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগ থেকে বিবিএ ও এমবিএ শেষ করেন। ২০১৮ সালে বাড়িতে বসে কিছু একটা করবেন ভাবছিলেন। এর পর সিদ্ধান্ত নেন গরুর খামার গড়বেন। স্বামীর গচ্ছিত তিন লাখ টাকা দিয়ে চারটি গরু ও বাড়ির আটটি গরু দিয়ে শুরু করেন তিনি। বর্তমানে ফার্মটিতে ছোট-বড় বিভিন্ন প্রজাতির ৬০টি গরু আছে। এর মধ্যে ৪০টি কুরবানি ঈদে বিক্রি করবেন। বাকিগুলো থেকে দুধ সংগ্রহ করেন। এখ ফার্মটিতে প্রায় দেড় কোটি টাকার গরু আছে।

তিনি আরও জানান, এর আগে প্রতিদিন প্রায় ১৫০ লিটার দুধ সংগ্রহ করতেন। এখন ৯০ লিটার দুধ সংগ্রহ করেন। দুধ বিক্রি করে প্রতি মাসে দেড় লাখ টাকা আয় করেন তিনি। তার এই ফার্মে বর্তমানে সাতজন কাজ করেন। গরুর খাবার হিসেবে নিজের জমিতে লাগানো নেপিয়ার ঘাস, ভুট্টা, ধানের কুড়া, বিচলি, খইল, ভুসি ব্যবহার করেন। কিন্তু তিনি কোনো মোটাতাজাকরণের ওষুধ ব্যবহার করেন না। ফার্মের কাজে স্বামী-শ্বশুরসহ অনেকেই সহযোগিতা করেন। তিনি প্রতিদিন ফার্মে এসে সব কিছু দেখাশোনা করেন।

জেসমিন খাতুনের স্বামী ফরহাদ হোসেন জানান, স্ত্রীকে তিনি তিন লাখ টাকা দিয়েছেন গরুর খামার করার জন্য। এর পর থেকে আর আর্থিক সহযোগিতা করা হয়নি। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তার স্ত্রী এই ফার্মটি গড়ে তুলেছেন। চাকরি করার কারণে তেমন একটা সময় দিতে না পারলেও ছুটির দিনগুলোতে সহযোগিতা করি।

কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মামুন খান জানান, উপজেলার ছোট ঘিঘাটি গ্রামে একটি গরুর ফার্ম আছে। তবে তিনি ফার্মটি পরিদর্শন করতে পারেননি। ফার্মের মালিক গরু পালনে যে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে প্রাণিসম্পদ অফিসের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।

(একে/এসপি/জুলাই ০৪, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test