E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫

আবারও নৌকার প্রার্থী হতে চান ফয়জুর রহমান বাদল

২০২২ জুলাই ২০ ১৬:১৫:০২
আবারও নৌকার প্রার্থী হতে চান ফয়জুর রহমান বাদল

গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসন থেকে আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও আওয়ামীলীগের প্রার্থী হতে চান আসনটির সাবেক আওয়ামীলীগ দলীয় সংসদ সদস্য ও বর্তমান নবীনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ফয়জুর রহমান বাদল। গতকাল মঙ্গলবার উত্তরাধিকার ৭১ নিউজকে দেয়া এক বিশেষ স্বাক্ষাৎকারে তিনি আগামি নির্বাচনে আবারও নৌকার প্রার্থী হতে ইচ্ছে পোষণ করেন। তবে নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেলে তিনি দল থেকে যাঁকে মনোনয়ন দেয়া হবে তাঁর পক্ষেই সর্বশক্তি নিয়ে কাজ করে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করারও দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষণা করেন। পাশাপাশি উপজেলা আওয়ামীলীগের আসন্ন সম্মেলনে 'সভাপতি' পদেও কোন ধরণের বিতর্কে না যেয়ে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত আছেন বলেও ঘোষণা দেন এই সাবেক সাংসদ।

আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও আসন্ন নবীনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অত্যন্ত খোলামেলাভাবেই উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের কাছে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের পক্ষ থেকে প্রথমেই তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, আপনাকে কেন আওয়ামীলীগ আগামি সংসদ নির্বাচনে আবারও মনোনয়ন দিবে? এমন প্রশ্নের জবাবে দেশের অন্যতম শিল্প উদ্যোক্তা তুসুকা, নভো এয়ার, নভো টেল, নভোকমসহ একাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার ফয়জুর রহমান বাদল বলেন, 'দেখুন, সেটি একজন প্রার্থীর সামগ্রিক গ্রহণযোগ্যতার ওপরই নির্ভর করে। সেক্ষেত্রে নির্বাচনী এলাকার জনগণই এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন যে, এলাকায় কোন্ প্রার্থীর কতটুকু যোগ্যতা রয়েছে!

তবে আমি ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এমপি থাকাকালীন বিগত ৫ বছর নবীনগরের সামগ্রিক উন্নয়ন ও কল্যাণে ১২০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছি। যারমধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরের সঙ্গে তিনটি বিশাল সড়ক নির্মাণ ও আশুগঞ্জ নৌ বন্দরের সঙ্গে একটি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনে কয়েকশ কোটি টাকার একাধিক মেঘা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি, যেসব কাজ এখনও চলমান।

তিনি আরো বলেন, আমার আমলেই সাধারণ মানুষ সবচেয়ে বেশী শান্তি ও নিরাপদে ছিলেন, এটি আমি দৃঢ়কণ্ঠে বলতে পারি। কারণ আমার সময় আইনশৃংখলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ছিলো। মানুষের জীবন ও জান মালের নিরাপত্তার কোন ধরণের সমস্যা হয়নি। কোন ধরণের রাজনৈতিক ক্ল্যাশও ছিলো না। সব শ্রেণির মানুষ নিশ্চিন্তে বসবাস করেছে। আমার বিশ্বাস, আওয়ামীলীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ দলীয় হাই কমান্ডের কাছে আমার এসব জনসম্পৃক্ত কর্মকান্ডের সব তথ্যই জমা আছে।

সুতরাং আমার ৫ বছরের কাজের মূল্যায়ন করে প্রিয় নবীনগরের আপামর জনগণের দোয়া ও ভালোবাসা থাকলে, আগামি নির্বাচনে আমি আবারও দলীয় মনোনয়ন পাবো ইনশাল্লাহ, এটি আমার বিশ্বাস।

এক প্রশ্নের জবাবে তিন বলেন, দেখুন, জনগণের কাছে একজন প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতার ওপরই মূলত নির্ভর করে কে জনপ্রতিনিধি হবে। সেক্ষেত্রে আমার দৃঢ় বিশ্বাস, নবীনগরের আপামর জনগণ লোক দেখানো নয়, একদম মন থেকে আমাকে ভালোবাসেন।'

এরপরও দল যদি আপনাকে মনোনয়ন না দেয়, সেক্ষেত্রে আপনি কি বিদ্রোহ করবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে স্পষ্টভাষী খ্যাত সাবেক এই সাংসদ বলেন, 'বিদ্রোহ করারতো প্রশ্নই আসেনা। সেটি করলে আগেই করতে পারতাম। আমি জাতির জনকের আদর্শের একজন কর্মী। সুতরাং নৌকা প্রতীকে দল যাঁকে মনোনয়ন দিবে, আমি আমার সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে সেই প্রার্থীর পক্ষেই কাজ করবো।

তিনি বলেন, দেখুন, আমি বঙ্গবন্ধু তথা জননেত্রী শেখ হাসিনার একজন সামান্য কর্মী। নেত্রীর একটি আদর্শ নিয়ে আওয়ামীলীগের রাজনীতি করি। সুতরাং নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে 'মোনাফেকী' করার আগেই যেন আল্লাহ আমার মৃত্য কবুল করেন।"

নবীনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের আসন্ন সম্মেলনে কি আবারও 'সভাপতি' পদে থাকতে চাচ্ছেন? এরকম এক প্রশ্নের জবাবে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামি, বঙ্গবন্ধুর সহচর সার্জেন্ট (অব) মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য পুত্র, বর্তমানে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ফয়জুর রহমান বাদল বলেন, 'দেখুন, সভাপতি পদ নিয়ে আমি কোন ধরণের বিতর্কে যেতে চাইনা। এটি আমার পরিষ্কার ম্যাসেজ। সেজন্য আমাকে যদি সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে হয়, আওয়ামীলীগের ঐক্যের স্বার্থে আমি সেটিই করবো। তবু সভাপতি পদ নিয়ে কোন ধরণের নোংরামীতে আমি যাবো না। আমি চাই, গ্রুপিং লবিং বাদ দিয়ে আওয়ামীলীগকে যেকোন মূল্যে ঐক্যবদ্ধ রেখে সমঝোতার ভিত্তিতে দলের 'সভাপতি' নির্বাচিত করা হোক। যদি এক্ষেত্রে আমাদের বর্তমান এমপি, আমার অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন বড় ভাই এবাদুল করিমও দলীয় সভাপতি হতে চান, আমি তাঁকে সর্বতভাবে সহযোগিতা করবো। কারণ, বুলবুল ভাইকে আমি সম্মান করি, শ্রদ্ধা করি।

কিন্তু 'সভাপতি' পদ নিয়ে দলের ভেতর কোন ধরণের সংঘাত, বিশৃংখলা, গ্রুপিং, নোংরামি আমি কখনও দেখতে চাইনা। এক্ষেত্রে আমার স্পষ্ট কথা দলের নেতাকর্মীরা যাঁকে সভাপতি পদে চাইবেন, তিনিই হবেন দলের পরবর্তী সভাপতি। এটিই আমার সাফ কথা। তবে যেকোন মূল্যে আওয়ামীলীগকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে ও দলের সার্বিক কল্যাণে আমি দলের একজন কর্মী হয়ে থাকতে চাই, দলকে আগামিতেও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় দেখতে চাই।

আর সেজন্য আমি আমার অভিভাবক ও আদর্শ বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একজন আদর্শের সৈনিক হিসেবে দলের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতেও সর্বদা প্রস্তুত আছি।"

(জিডি/এসপি/জুলাই ২০, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test