E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মহেশখালীর ঘটিভাঙা গ্রাম

যেখানে শুকিয়ে মারা যাচ্ছে শত শত নারিকেল গাছ!

২০২২ জুলাই ২৯ ১৭:১৩:০২
যেখানে শুকিয়ে মারা যাচ্ছে শত শত নারিকেল গাছ!

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার থেকে ফিরে : কক্সবাজার জেলার একমাত্র পাহাড় সমৃদ্ধ দ্বীপ মহেশখালী উপজেলা। এ উপজেলার কুতুবজুম ইউনিয়নের ঘটিভাঙায় শত শত নারকেল গাছ শুকিয়ে মারা যাচ্ছে বলে স্থানীয়দের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ছত্রাকজনিত পোকা কিংবা মাকড়সায় আক্রান্ত কিনা জানা না গেলেও নারিকেল গাছের পাতা শুকিয়ে লাল বর্ণের হয়ে নিপাত হচ্ছে অহরহ নারিকেল গাছ। 

জানা যায়, গত কয়েক বছর ধরে ঘটিভাঙা গ্রামের পূর্বপাড়া, পশ্চিমপাড়া, ডেম্বনি এলাকা ও মধ্যম পাড়া গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে থাকা কয়েক যুগ আগের নারিকেল গাছগুলো শুকিয়ে মারা গেছে। এ বিষয়ে স্থানীয়রা চিন্তিত হলেও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানা যায়। ফলে, চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন গাছের মালিকরা। বর্তমানে বিভিন্ন উৎসব আয়োজনে পিঠা তৈরিতেও মিলছে না নারকেল। ফলে, সাড়ে ৭ কিলোমিটার দুরের বাজারে গিয়ে মহেশখালী পৌরসভা থেকে ৮০ থেকে ১০০ টাকায় নারকেল কিনে আনতে হচ্ছে।

সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি বাড়ির সামনেই অতীতে ৫-৭টি করে নারিকেল গাছ থাকলেও এখন তা শূন্য হয়ে গেছে। গ্রামবাসীরা জানান, প্রতিটি গাছেই সাদা ছত্রাক ও পোকা-মাকড়ে আক্রান্ত হয়ে ধীরে ধীরে মারা গেছে। যা সহজে দৃষ্টিগোচর হয়নি।

পশ্চিম পাড়া এলাকার তরুণ ব্যবসায়ি মোঃ শাহেদ খান ও মধ্যমপাড়ার আলমগীর মোহাম্মদ মাহাথির বলেন, গত কয়েক বছরে আমাদের বাড়িতে থাকা নারিকেল গাছগুলো কেমন জানি ঝিমিয়ে গেছে। কোন ডাব ও নারকেল ফলন দিচ্ছে না। পাতা সাদা সাদা হয়ে শুকিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। কোনও কিছু বুঝে উঠার আগেই নারকেল গাছ মরে গেছে। বাকি গাছগুলোরও একই অবস্থা। পাশের গ্রামের অনেকের নারিকেল গাছেরও একই অবস্থা।

পুর্বপাড়া গ্রামের আবুল কালাম জানান, তার বাড়িতে ৫টি নারিকেল গাছ ছিলো। ২-৩ মাস আগে হঠাৎ করেই তার ৫টি নারিকেল গাছেই মারা গেছে। এ অবস্থা দেখে অনেকেই বলছেন, মহেশখালীর মাতারবাড়িতে বিভিন্ন কয়লা ও তাপ ভিত্তিক প্রকল্পের বিরূপ প্রভাবে মারা যাচ্ছে এসব গাছ। তবে তার সত্যতা জানা যায়নি।

কক্সবাজার জেলার কৃষি কর্মকর্তা মোঃ কামাল উদ্দিন বলেন, ঘটিভাঙায় নারিকেল গাছের খুবই খারাপ অবস্থা। এর দুটি কারণ হতে পারে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে গাছের পাতায় সাদা মাছি নামক পোকার আক্রমণ। আরেকটি হলো ছত্রাকজনিত রোগ। এই দুটো রোগের চিকিৎসা যারা করেনি তাদের গাছগুলোর পাতাগুলো মরে গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। এই গাছগুলিকে যদি শীত যাওয়ার পরপরই সব ধরনের সার দেওয়া হতো ও কীটনাশক স্প্রে করা যেত তাহলে ভালো হয়ে যেতো।

উইকিপিডিয়ার তথ্য বলছে, নারিকেল, নারকেল বা ডাব এর বৈজ্ঞানিক নাম Cocos nucifera। পাম গাছের পরিবারের আরেকেসি সদস্য ও কোকোস জীবিত প্রজাতি। অন্যদিকে, রামায়ণ এবং শ্রীলঙ্কার ইতিহাস থেকে প্রাপ্ত সাহিত্যের প্রমাণ ইঙ্গিত দেয় যে, নারকেল খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতাব্দীর আগে ভারতীয় উপমহাদেশে উপস্থিত ছিল। প্রথম দিকের প্রত্যক্ষ বিবরণটি কপাস ইন্ডিকোপলসেটস তাঁর টোপোগ্রাফিয়া ক্রিস্টিয়ানাতে লিখেছেন প্রায় ৫৫৫ সালের দিকে, নারকেল "ভারতের মহান বাদাম" হিসাবে অভিহিত। নারকেলের আরেকটি প্রাথমিক তথ্য আরব্য রজনীর বিখ্যাত সিন্দাবাদে, যেখানে তিনি তাঁর পঞ্চম যাত্রার সময় একটি নারকেল কিনে এবং বিক্রি করেছিলেন।

(জেজে/এসপি/জুলাই ২৯, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test