E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ফরিদপুরে বিআরটিসির বাস বন্ধ করলো মালিক সমিতি

২০২২ আগস্ট ১০ ১৬:০৪:২৭
ফরিদপুরে বিআরটিসির বাস বন্ধ করলো মালিক সমিতি

দিলীপ চন্দ, ফরিদপুর : প্রথম দিনই ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া বিআরটিসি বাস বন্ধ করে দিয়েছে মালিক সমিতি। এ নিয়ে বোয়ালমারীবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দেয়।

বুধবার (১০ আগস্ট) সকাল ৭টায় ভাঙ্গা বাস টার্মিনালের পৌঁছালে বিআরটিসি বাসটি আটকে দেয় জেলা বাস মালিক সমিতি।

এদিকে বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধ করায় বোয়ালমারী উপজেলায় জেলা বাস মালিক সমিতির রাজধানী পরিবহনের বাস প্রবেশ বন্ধ করে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে বাস চলাচলের ব্যবস্থা করে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ফরিদপুরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে দাবি ওঠে বিআরটিসি বাস চলাচলের। সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ ফরিদপুর ও নগরকান্দা থেকে বাস চালু করে।

গত মঙ্গলবার বোয়ালমারী পৌর সদর থেকে বিআরটিসি বাস চালু করে কর্তৃপক্ষ। উদ্বোধনের পর প্রথম দিন বুধবার সকাল ৭টায় বোয়ালমারী বাস টার্মিনাল থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকা গুলিস্তানের উদ্দেশে রওনা হয় বাসটি। পথে ভাঙ্গা বাস টার্মিনালের কাছে বাসটি আটকে দেয় বাস মালিক সমিতি। বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় সব যাত্রীদের। ফলে চরম বিপাকে পড়েন বাসটির যাত্রীরা।

বাসে থাকা একাধিক যাত্রী জানান, ভাঙ্গার টার্মিনালে আসার পর বেশ কয়েকজন বাসচালকের কাছ থেকে চাবি ছিনিয়ে নেয়। তারা বাসচালক ও হেলপারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং মারধর করেন।

বিআরটিসি বাসের সুপারভাইজার তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বিআরটিসি বাসটি সকাল ৭টায় ভাঙ্গা বাস টার্মিনালের কাছে পৌঁছালে আটকে দেওয়া হয়। আমাকে মারধর করা হয়। এদিক দিয়ে বাস চালালে হাত পা কেটে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়।’

এ বিষয়ে বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মোরতুজা আলী তমাল ও সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত সিদ্দিকী বলেন, ‘বোয়ালমারী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া বিআরটিসি বাসটি ভাঙ্গার মোড়ে (ভাঙ্গা হাইওয়েতে) আটকে সব যাত্রীদের নামিয়ে দেয় ফরিদপুর বাস মালিক সমিতি। এ সময় বিআরটিসির সুপারভাইজারকে মারধর করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রলীগ। আমার নেতা আব্দুর রহমানের সঙ্গে কথা বলে বোয়ালমারী-আলফাডাঙ্গাবাসীর জন্য দুটি বিআরটিসি এসি বাস সার্ভিস এনে দিয়েছিলাম। সার্ভিসটি চালু করার সময় অনেক বাধা এসেছিল। সেগুলো মোকাবিলা করে বাস নিয়ে আসি। বিআরটিসি বাস চলুক বা না চলুক আমাদের ব্যক্তিগত কোনো লাভ-ক্ষতি নেই। আমরা ছাত্রলীগ করি ব্যবসা করি না।’

এ বিষয়ে বিআরটিসির (কুমিল্লা ডিপো) ম্যানেজার (অপারেশন) মো. কামরুজ্জামান বলেন, বিআরটিসির বাস বন্ধ করার ফরিদপুর জেলা বাস মালিক গ্রুপের কোনো এখতিয়ার নেই। পরিবহন সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সরকার বদ্ধপরিকর। সেই হিসাবে বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধ করা ঠিক হয়নি। যা নিন্দনীয়।

এ ব্যাপারে ফরিদপুর জেলা বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান বলেন, বিআরটিসি সারাদেশের ২৩ রুটে পারমিট দিয়েছে। সেখানে কোনো উপজেলার অনুমতি নেই। এছাড়া জেলা বাস মালিক গ্রুপ থেকেও কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। ফলে আমরা বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছি।’

এ বিষয়ে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, বাস চলাচলের বিষয়ে একটি ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। বিআরটিসির পক্ষ থেকেও কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আশা করছি শিগগির এ সমস্যার সমাধান হবে।

(ডিসি/এএস/আগস্ট ১০, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test