E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বিলাইছড়িতে অনুমতি ছাড়া বিদ্যালয়ের গাছ কাটলেন প্রধান শিক্ষক

২০২২ আগস্ট ১৯ ১৩:৫৯:৪২
বিলাইছড়িতে অনুমতি ছাড়া বিদ্যালয়ের গাছ কাটলেন প্রধান শিক্ষক

রিপন মারমা, রাঙামাটি : রাঙামাটি বিলাইছড়ি উপজেলা দীঘলছড়ি ১নং ইউনিয়ন ৪নং ওয়ার্ড সরকারি আবাসিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৩ টি গাছ আনুমানিক ১৫০ ফুট গাছ অবৈধভাবে কাটা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীঘলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সিমানা জায়গা ভিতরে ২ টি সেগুন, ১টি শিমুল ১০টি কৃষ্ণচূড়া মোট ১৩ টি গাছ অবৈধ ভাবে কেটে বিক্রির এমন অভিযোগ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক রঞ্জন তঞ্চঙ্গ্যা বিরুদ্ধে।ওই বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জ্যোতিময় চাকমা(চাদু) মুঠো ফোনে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন,বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অজান্তে এতো সুন্দর কৃষ্ণচূড়া,সেগুন,শিমুলসহ মোট ১৩ টি গাছ কেটে সাভার করে দিয়েছে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে।সেসময় তিনি আরো বলেন, প্রধান শিক্ষক'কে আমি জিজ্ঞেস করেছি তিনি আমাকে বলেছেন, বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আশেপাশে গাছগুলো না কাটলে সিমানা দেওয়াল করা সম্ভব নয় সেই কারণে গাছ গুলো কেটে ফেলা হয়েছে।মুলত বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক উদ্যোগে বিদ্যালয়ে সিমানা দেওয়াল করার জন্য গাছ গুলো কাঁটা হয়েছে দুই মাস আগে।

কিছুদিন আগে দীঘলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ প্রাঙ্গণে কত ভরপুর লাল রঙের কৃঞ্চচূড়া গাছগুলোর অনেক সুন্দর দেখা যেত। একদিন মাটি ফুঁড়ে মাথা তুলে দাঁড়ানো কৃষ্ণচূড়াগাছটি আবার মাটিতেই লুটিয়ে পড়ে যেন শোধ করল নিজের জন্মের দায় কৃষ্ণচূড়া গাছ কেটে রাখা হয়েছে। লন্ডভন্ড হয়ে মাটিতে ছড়িয়ে পড়ে গাছটির ভাঙা ডালপালা, ডালে থাকা পাখির বাসা আর কৃষ্ণচূড়া ফুলের রক্তিম সৌন্দর্য।

বিদ্যালয় সামনের অংশে থাকা কৃষ্ণচূড়াগাছটি অনেক বছর ধরে সৌন্দর্য ছড়িয়ে আসছিল। গাছটির ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে আসছিলেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী-দর্শনার্থীরা। তাঁদের অনেককেই বিগত বছরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই সৌন্দর্যের প্রশংসা করতে দেখা যায়।

গাছটি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার আবহ তৈরি করত। আশপাশের সবুজ গাছগাছালির বুকে এক খণ্ড লাল হয়ে ফুটে থাকত কৃষ্ণচূড়ার ফুলগুলো। এ ছাড়া গাছ থেকে মাটিতে ঝরে পড়া ফুলও অপার সৌন্দর্য হয়ে ধরা দিত।
এই অঞ্চলে এপ্রিল থেকে জুনে কৃষ্ণচূড়া ফুল ফোটে।

আর সৌন্দর্য ছড়াবে না বিদ্যালয়ের মল চত্বরের কৃষ্ণচূড়াগাছটি। তার জায়গায় হয়তো নতুন পাকা দেওয়াল আসবে কেটে দেয়া কৃষ্ণচূড়াগাছটির বয়স কমপক্ষে ৩০-৩৫ বছর হবে।

বিলাইছড়ি উপজেলা আঃলীগ সিনিয়র সহ-সভাপতি সাথোয়াই মারমা তিনি গণমাধ্যম'কে বলেন,গত সপ্তাহে রোববার দুপুরে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের সামনের অংশে অন্তত চারটি বড় গাছের ডালপালা কেটে গোড়ার অর্ধেক কাটা অবস্থায় রাখা। ৩০-৪০ হাজার টাকা মূল্যের দুটি গাছ শিকড় পর্যন্ত কেটে মাটি দিয়ে গর্ত ভরাট করে রাখা আছে।

বিদ্যালয়ের গাছ কাটতে হলে নিয়ম মেনে কাটতে হবে। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কোনো অনুমোদন না নিয়ে গাছগুলো কেটে অপরাধ করেছেন। গাছ কাটার বিষয়ে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।

এই বিষয় নিয়ে আরো জানার জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসার নিখিলেষ চাকমা'কে মুঠো ফোনে কল করা হলে তিনি এই বিষয় নিয়ে মুঠো ফোনে কথা বলতে রাজি হয়নি।

বন বিভাগের কার্যালয় সূত্র জানায়, সরকারি অফিসের কোনো গাছ কাটতে হলে সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে অনুমোদন নিতে হয়। এরপর বন বিভাগে আবেদন করতে হয়। সেই আবেদন সরেজমিন যাচাই-বাছাই করে গাছের মূল্য নির্ধারণ করে কাটার অনুমোদন দেয় বন বিভাগ। কিন্তু দীঘলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক নিজের খেয়াল খুশিমতো গাছ কেটে ফেলে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন আমি যেহেতু নতুন এসেছি আমি এই বিষয়ে নিয়ে কিছু জানিনা।বিদ্যালয়ে গাছ কাটা হয়েছে আমি এখানে না আসার আগে আমাকে কেউ এই বিষয় নিয়ে লিখিত ভাবে কেউ অভিযোগ দেয়নি।

তিনি আরো বলেন, সরকারি বিদ্যালয়ের গাছ এভাবে কাটার কোনো নিয়ম নেই। যদি কেউ আইনবহির্ভূতভাবে গাছ কেটে বিক্রি করেন, তাহলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(আরএম/এএস/আগস্ট ১৯, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test