E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম 

ঘটনার ১৬ দিন পরে আদালতে মামলা, এজাহারের আদেশ

২০২২ সেপ্টেম্বর ০১ ১৭:৪৫:৪২
ঘটনার ১৬ দিন পরে আদালতে মামলা, এজাহারের আদেশ

আমতলী বরগুনা : আমতলী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি, সাবেক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ সভাপতি মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন খাঁনকে কুপিয়ে গুরুতর জখমের ঘটনার ১৬ দিন পর বৃহস্পতিবার আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

মোয়াজ্জেম হোসেন খাঁনের ভাইয়ের ছেলে মোঃ কবির খাঁন বাদী হয়ে উপজেলা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি সবুজ ম্যালকারকে প্রধান আসামী করে উপজলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) পৌর মেয়র মোঃ মতিয়ার রহমান, তার বড় ভাই উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ মজিবুর রহমানসহ ৮ জনের নামে আদালতে হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেছেন। আদালতের বিচারক মোঃ আরিফুর রহমান মামলাটি আমলে নিয়ে আমতলী থানার ওসিকে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহন করে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছেন।

জানাগেছে, গত ১৬ আগষ্ট রাতে আমতলী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন খাঁনকে আল হেলাল মোড়ে প্রকাশ্যে জনসম্মুখে উপজেলা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি সবুজ ম্যালাকার, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ইসফাক আহম্মেদ তোহা, রাহাত মৃধা, ছাত্রলীগ সদস্য শাহাবুদ্দিন সিহাব ও সন্ত্রাসী রুহুল আমিন ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতারি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার হাত, মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম হয়। সন্ত্রাসীদের এমন কর্মকান্ডে পৌর শহরের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক মোঃ সুমন বিশ্বাস তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরন করেছেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ত্যাগী আওয়ামীলীগ নেতা ন্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতিকে কুপিয়ে গুরুতর জখমের ঘটনায় তাৎক্ষনিক আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও শ্রমিকলীগ নেতাকর্মীরা সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার দাবীতে পৌর শহরে বিক্ষোভ করে।

ঘটনার ১৬ দিন পর বৃহস্পতিবার মোয়াজ্জেম হোসেন খাঁনের ভাইয়ের ছেলে মোঃ কবির খাঁন বাদী হয়ে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উপজেলা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি সবুজ ম্যালকারকে প্রধান আসামী করে উপজলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) পৌর মেয়র মোঃ মতিয়ার রহমান, তার বড় ভাই উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ মজিবুর রহমানসহ ৮ জনের নামে হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেছেন। আদালতের বিচারক মোঃ আরিফুর রহমান মামলাটি আমলে নিয়ে আমতলী থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গ্রহন করে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে ত্যাগী আওয়ামীলীগ নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন খাঁনের ওপর এমন বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার দাবীতে বুধবার রাতে উপজেলা শহর ও গ্রামাঞ্চলে পোষ্টার সাটানো হয়েছে।

মোয়াজ্জেম হোসেন খাঁনের ছোট ভাই সেলিম খাঁন বলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) পৌর মেয়র মোঃ মতিয়ার রহমান ও তার ভাই উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে গত তিন বছরে বেশ কয়েকবার আমার ভাইয়ের উপরে হামলা করেছে। ত্যাগী আওয়ামীলীগ নেতা আমার ভাইকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিয়েই হত্যার উদ্দেশ্যে তাদের পালিত সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে কুপিয়েছে। তিনি আরো বলেন, পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান ও তার ভাই মজিবুর রহমান এক সময়ে বিএনপি রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। রাতারাতি বিএনপি রাজনীতি ছেড়ে আওয়ামীলীগের বড় নেতা হয়ে অপরাধের রাজত্ব কায়েম করে আসছে। দুই ভাইয়ের এমন অপরাধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আমার ভাই প্রায়ই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখি করতো। আমার ভাইয়ের কন্ঠ রোধ করতেই এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তারা। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) পৌর মেয়র মোঃ মতিয়ার রহমান বলেন,
আমাকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানী করতেই মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানান তিনি।

মোয়াজ্জেম হোসেন খানের আইনজীবি মোসাঃ জাকিয়া আক্তার বলেন, মোয়াজ্জেম হোসেন খাঁনকে কুপিয়ে জখমের বর্বরোচিত ঘটনায় আমতলী পৌর মেয়র মোঃ মতিয়ার রহমান ও তার বড় ভাই মোঃ মজিবুর রহমানসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে আমতলী থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গ্রহন করে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছেন।

আমতলী থানার ওসি একেএম মিজানুর রহমান বলেন, মামলার আদেশের নথি পাইনি। আদালতের আদেশের প্রাপ্তি সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য ২০১৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি মোঃ মজিবুর রহমান ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন খাঁন প্রতিদ্বন্ধিতা করেন। ওই নির্বাচনে মজিবুর রহমান জয়ী হন। এরপর থেকেই স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতির সাথে তার বিরোধ চলে আসছে। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও তার ভাই উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) পৌর মেয়র মতিয়ার রহমানের রোষানলে পড়ে বেশ কয়েকবার হামলার স্বীকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন হামলার শিকার মোয়াজ্জেম হোসেন খাঁন।

(এএসন/এসপি/সেপ্টেম্বর ০১, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test