E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দাইনুর সীমান্তে নিহত তরুণের মরদেহ ৪ দিনেও ফেরত দেয়নি বিএসএফ

২০২২ সেপ্টেম্বর ১১ ১৮:৪৬:১৮
দাইনুর সীমান্তে নিহত তরুণের মরদেহ ৪ দিনেও ফেরত দেয়নি বিএসএফ

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : দিনাজপুরের দাইনুর সীমান্তে মিনহাজ ইসলাম মিনার (১৭) নামে নিহত বাংলাদেশি তরুনের মরদেহ নিয়ে ফটোসেশন করলেও ৪দিন অতিবাহিত হলেও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ এখনো ফেরত দেয়নি, সেই মরদেহ। বুধবার রাত ১০টায় বাংলাদেশের ওই তরুণ নিহতের পর ৪ দিন-ভোর অপেক্ষার পরও শূণ্যহাতে বাড়ি ফিরেছেন.নিহতের পরিবার। সীমান্তের ৩১৪/১ নম্বর মইেন পলিাররে কাছে শূণ্য রেখায় শনিবার বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠক হয়েছে, শুধু মরদেহ শনাক্তের। বিজিবি-বিএসএফ বৈঠকের পর দুপুর গড়িয়ে শনিবার সন্ধা হয়েছে, রোবারও দিন-ভোর অপেক্ষার পরও মরদেহ ছাড়াই শূণ্যহাতে বাড়ি ফিরেছে, নিহত মিনারের পরিবার। এখন মরদেহ ফেরতের বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, লাশ ফেরত দেয়ার বিষয়ে কোন তথ্য নেই,তাদের। কারণ,বিজিবি-বিএসএফ’র মাধ্যমে লাশ ফেরত আসলেও ভারতীয় পুলিশের লাশ হস্তান্তর করবে, বাংলাদেশের পুলিশের কাছেই। কিন্তু.লাশ কখন ফেরত দিবে,এমন কোন তথ্য নেই পুলিশের কাছে।

ওসি তানভিরুল ইসলাম আরো জানান,নিহত মিনারের মা মিনারা বেগম ৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। খানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণিতে পড়–য়া তার ছেলে মিনার প্রলোভনে ফেলে ডেকে নিয়ে গিয়ে পরিকল্পিত ভাবে বিএসএফের গুলিতে হত্যা করেছে। এ ঘটনার সাথে তার এক নিকটতম আত্মীয় আছে। মরদেহ ফেরত পাওয়ার পর বিয়টি নিয়ে পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবে।

এই ব্যাপারে আজ রোববার বিকেলে দিনাজপুর-২৯ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)এর অধিনায়ক লে.কর্ণেল আবেদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানায়, হেড কোয়ার্টারের পক্ষ থেকে এখনও এমন কোন নির্দ্দেশ আসেনি। অতঃএব বলা সম্ভব নয় মরদেহ কখন দিবে ভারত।

প্রসঙ্গতঃ বুধবার রাত সাড়ে ১০ টায় দাইনুর বিওপির ৩১৫ নাম্বার মেইন পিলারের সীমান্তের কাছে ওই বাংলাদেশি তরুণ’কে গুলি করে হত্যার পর মরদেহ নিয়ে গেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তার মরদেহ নিয়ে যায়,ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুরের হরহরিপুর বিওপি ক্যাম্পের অধীনে তেলিয়াপাড়া এলাকায়। নিহত বাংলাদেশি তরুনের মরদেহ নিয়ে ফটোসেশন করলেও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ। এমনি চিত্র ফুটে ওঠে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত এক রিপোর্টে। ভারতীয় গণমাধ্যম রিপোর্টে উল্লেখ করেছে, নিহতের কাছে, এক’শ বোতন কফ সিরাপ এবং ১০ কেজি কচ্ছপের শুটকি পাওয়া গেছে। উদ্ধারকৃত মালামাল ও নিহত তরুণের লাশ সামনে রেখে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী-বিএসএফ বিভিন্ন ভঙ্গীতে গণমাধ্যকে ফটোসেশন দেয়।

এদিকে ছেলের মরদেহ ফেরত না পাওয়ায় শোকের মাতম বইছে ওই পরিবারে। নিহত মিনার দিনাজপুর সদর উপজেলার ৯ নং আস্করপুর ইউনিয়নের খানপুর ভিতরপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে।

নিহতর পিতা জাহাঙ্গীর জানান, আমার ছেলেকে হত্যা করার পরও শোক মিটেনি, বিএসএফের। এখন লাশটি ফেরত দিতেও শয়তানি শুরু করেছে। আমি এর বিচার চাইবো কার কাছে ?। ঘটনার রাতে মিনারসহ তারা ৫ বন্ধু ভারতে গিয়েছিলো, মাছ ও কচ্ছপের শুটকি আনতে।

দিনাজপুরের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে কচ্ছপের শুটকি পাচারের ঘটনা বাড়ছে। ভারত থেকে কচ্ছপের শুটকি আনতে গিয়ে গত ১০ বছরে দিনাজপুরের বিভিন্ন সীমান্তে বিএসএফ’র গুলিতে নিহত হয়েছে.কমপক্ষে ৯ জন। এক জরীপে রেরিয়ে এসেছে, এমনি চাঞ্চল্যকর তথ্য।

আন্তর্জাতিক বাজারে কচ্ছপের শুটকির প্রচুর চাহিদা রয়েছে। কচ্ছপের প্রতিকেজি শুটকি বিক্র হয়, ১৮’শ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা কেিিজতে। তা দিয়ে অভিজাত রেস্তোঁরায় স্যুফ এবং হারবাল ওষুধ তৈরি হয় বলে সূত্রটি জানিয়েছে।

(এস/এসপি/সেপ্টেম্বর ১১, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২৩ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test