E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দিনাজপুরে আবারও বেড়েছে চালের দাম!

২০২২ সেপ্টেম্বর ১৩ ১৮:৪১:৫২
দিনাজপুরে আবারও বেড়েছে চালের দাম!

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : দিনাজপুরে আবারও চালের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম। খুচরা ও পাইকারি বাজারে প্রায় সব রকম চালে কেজি প্রতি বেড়েছে ২ টাকা থেকে ৩ টাকা। বেড়েছে, ধানেরও দাম। এক সমপ্তাহের ব্যবধানে প্রকারভেদে প্রতিবস্তা (৭৭ কেজি) ধানের দাম বেড়েছে, দেড়’শ থেকে থেকে দুই’শ টাকা। সেই সাথে বেড়েছে, বস্তাপ্রতি চাল (৫০ কেজি) এক’শ থেকে দেড়’শ টাকা। খুচরা চালের বাজারে এর প্রভাবে প্রতিকেজি চালের দাম বেড়েছে. ২ টাকা থেকে ৩ টাকা।

এদিকে চালের দাম আবারও বেড়ে যাওয়ায়, পরস্পর’কে দোষারোপ করছেন,বিক্রেতা ও মিল মালিকেরা। ভারতে চাল রপ্তানিতে শুল্ক আরোপ করায় দেশে চাল আমদানি কমে গেছে এবং এর প্রভাব পড়েছে,ধান ও চালের বাজারে এমনটাই মন্তব্য করেছেন ধান ব্যবসায়ী ও মিল মালিকেরা।

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, আড়ত থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে চাল। আড়তদারের দাবি মিলারদের কাছে বেশি দামে চাল কিনতে হচ্ছে। আর মিলাররা বলছেন, ধানের দাম বেড়েছে। তাই, বেড়েছে খুচরা বাজারে চালের দাম।

জেলার সবচেয়ে বড় চালের মোকাম এমএন মার্কেট বাহাদুর বাজারে একাধিক চাল ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, ধানের দাম বৃদ্ধি’র অজুহাতে মিলাররা প্রতিবস্তা চালের দাম এক থেকে দেড়’শ টাকা বাড়িয়েছেন।
এদিকে জেলা চাল কল মালিক গ্রুপের সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন দাবী করেছেন, প্রতিবস্তা (৭৭ কেজি) ধানের দাম বেড়েছে, দেড়’শ থেকে থেকে দুই’শ টাকা। সেই অনুপাতে চালের দামও বেড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম হিলি স্থলবন্দর হিলি দিয়ে চাল আমদানি শূণ্যের কোঠায় নেমেছে।
এর কারণ হিসেবে হিলি স্থলবন্দর আমদানি ও রপ্তাণি কারক এসোসিয়েশনের সভাপতি ও হাকিমপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মো.হারুন-উর-রশীদ এ প্রতিবেদক জানিয়েছেন, ভারত সরকার চাল রপ্তানিতে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায়, আমদানিকারকেরা চাল আমদানি নিরুৎসাহিত হচ্ছে। অনেকেই আমদানি করছেন না চাল।

উত্তরের শষ্যভান্ডার খ্যাত ধানের জেলা দিনাজপুরে দেশের সিংহভাগ চাল উৎপাদন হয়। আর এই ধান-চালের জেলায় কয়েক দফা বেড়েছে চালের দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম বেড়েছে ২ থেকে ৩ টাকা। প্রকারভেদে বর্তমান খুচরা বাজারে বিআর-২৮ চাল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা, মিনিকেট চাল ৬৫ থেকে ৬৮ টাকা এবং মোটা গুটিস্বর্ণা চাল ৪৫ থেকে ৪৭ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

চালের দাম এমন উর্ধ্বমূখি হওয়ায় উদ্বেগ জানিয়েছে, ক্রেতারা। বিপাকে পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষেরা। তারা বলছেন, এভাবে দাম বাড়তেই থাকলে নির্দিষ্ট আয় দিয়ে তাদের পরিবারের ব্যায় নির্বাহ করা দুস্কর হয়ে পড়ছে।

বাহাদুরবাজারের পাইকারী চাল বিক্রেতা এরশাদ ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী এরশাদ আলী জানান, এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারী বাজারে বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) চালের দাম এক থেকে দেড়’শ টাকা বেড়েছে। মিল মালিকদের কাছ থেকে চাল এনে প্রতি বস্তাায় ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা লাভে চাল বিক্রে করেন তারা। মিল মালিকরা চালের দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় বাধ্য হয়েই তাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

দিনাজপুর চালকল মালিক সমিতির সভাপতি মোছাদ্দেক হুসেন জানান, বাজারে ধানের দাম বৃদ্ধি ও প্রাপ্যতা কমে যাওয়ার কারণেই চালের দাম বেড়েছে।

চাল ক্রেতা আইনুর আলম জানান, চাউলের দাম কমার পরিবর্তে বাড়ছেই। এর মধ্যে চক্রের কারসাজি রয়েছে। দায়িত্বশীলরা হয়তো দেখেও দেখেন না। আর বাজারের ব্যবসায়ীরাও ইচ্ছে মতো দাম বাড়াচ্ছেন।

প্রসঙ্গত, ধানের জেলা দিনাজপুরে প্রতিবছর চাল উৎপাদন হয়, ১৪ লাখ মেট্রিক টন। এই অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে প্রায় নয় লাখ মেট্রিক টন চাল রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রেরণ করা হয়।

(এস/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test