E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নানা সম্যসায় জর্জড়িত শতবর্ষী যুগ্নীতলা মন্দির ও শ্মশান ঘাট

২০২২ অক্টোবর ০২ ১৭:২১:০৩
নানা সম্যসায় জর্জড়িত শতবর্ষী যুগ্নীতলা মন্দির ও শ্মশান ঘাট

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগরে সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে প্রাচীনতম ঘাটাগন যুগ্নীতলা মন্দির ও মহাশ্মশান ঘাট এখন নানা সম্যসায় জর্জড়িত হয়ে পড়েছে। উপজেলার এই মন্দিরটি দীর্ঘ সময় সংস্কার কাজ না হওয়ায় সনাতন ধর্মালম্ভীদের ধর্মীয় কর্মকান্ড করতে গিয়ে নানান সমস্যার সম্মুখিন হতে হচ্ছে। এছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থা নাজুক হওয়ার কারণে যুগ্নীতলা মন্দির সবচেয়ে প্রাচীনতম হওয়া সত্বেও হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ পূজা ও আত্মীয়-স্বজনদের মৃত দেহ সৎকার  করতে এসে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। যোগাযোগ ব্যবস্থা ও মন্দিরটি সংরক্ষণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান ওই এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।  

জানা গেছে, উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২৪কিলোমিটার পূর্ব-উত্তর কনে সীমান্ত ঘেষা একডালা ইউনিয়নের ঘাটাগন গ্রামের যুগ্নীতলা মহাশশ্মান মন্দিরটি নাগর নদের পাড়ে অবস্থিত। ঘাটাগন ১৭ শতক জায়গার ওপর মন্দির শ্মশান ঘাট অবস্থান হলেও ৯০ দশকের শেষ দিকে হঠাৎ করে জমির কাগজপত্র নিয়ে কিছু বিরোধ তৈরি হলে ধর্মীয় কর্মকান্ড স্বাভাবিক রাখতে একই গ্রামের অনিল চৌধুরী, শষ্ঠী, বরেন, গোপাল বেশকিছু জমি মন্দিরের নামে দানপত্র করে দেন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারি সহযোগীতা না পাওয়ায় দিনদিন মন্দিরটি তার সৌন্দর্য হারাতে বসেছে। বছরের প্রতিটি পূজা-পার্বন অনুষ্ঠানে ব্যাপক লোকের সমাগম হলেও সার্বিক ব্যবস্থাপনা ভুঙ্গুর হওয়ার কারণে পূণ্যার্থীরা এসে নানা ভোগান্তির কবলে পড়েন।

মহাদেবের পূজা ও বিশেষ করে এই মন্দিরে সন্ন্যাস ঠাকুরের পূজা প্রতি বছরের পৌষ মাসের ৪ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়। এই পূজায় ওই এলাকার সনাতন ধর্মের নারী-পুরুষদের ঢল নামে, আনন্দ সবার সাথে ভাগাভাগি করার লক্ষ্যে নানান উৎসবে তারা মেতে ওঠেন। কিন্তু পিছু ছাড়ে না তাদের ভোগান্তি। ঘাটাগন গ্রামের মোড় থেকে মন্দির পর্যন্ত প্রায় ২কিলোমিটার মেঠো পথ আর কাদা-পানির কারণে অনেক দর্শনার্থীরাই ধীরে ধীরে এখানে আসা থেকে দিনদিন মুখ ফিরে নিচ্ছে। স্যানিটেশন ব্যবস্থা এবং বসার মত ভাল পরিবেশ না থাকায় এই মন্দিরের সুনাম দেশব্যাপী থাকলেও দিনদিন তা পিছিয়ে পড়ছে।

এলাকাবাসীর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় উৎসব গুলো পরিচালিত হলেও আর্থিক সংকটের কারণে তা থমকে যেতে বসেছে। জরুরি ভিত্তিতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি, মন্দির সংরক্ষণসহ স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়নের একান্ত প্রয়োজন। মন্দির কমিটির দাবি, এলাকার উন্নয়নে সরকারের অনেক প্রকল্পই আসে। মন্দিরটি উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন হেলালের কাছে প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

ঘাটাগন গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা রবিন্দ্রনাথ রায় জানান, শতবর্ষীয় এই যুগ্নীতলা মন্দির ও মহাশ্মশন দীর্ঘ দিন ধরে অবহেলিত। আমাদের ধর্মীয় কর্মকান্ড পরিচালনা করতে নানা সমস্যার সম্মুখিন হতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মন্দিরটির উন্নয়নে ব্যবস্থা করলে আমরা সনাতন ধর্মের লোকজনরা অনেক খুশি হবো।

একডালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ইঞ্জি: মো: শাহজাহান আলী জানান, ওই মন্দির ও শ্মশান ঘাটটি অনেক পুরাতন। দীর্ঘদিন ধরে এখানে হিন্দু ধর্মের লোকজনদের ধর্মীয় কর্মকান্ডসহ প্রতি বছরেই সুন্যাস পূজার বড় আয়োজন হয়। এই প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নে আগামীতে আমার পরিষদ থেকে একটি বরাদ্দের জন্য চেষ্টা করবো। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন বলেন, উন্নয়নকল্পে আবেদন পেলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমস্যাগুলো সমাধান করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

নওগাঁ- ৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের এমপি আলহ্জাব মো. আনোয়ার হোসেন হেলাল বলেন, আমি ওই মন্দির ও শ্মশানের সমস্যাগুলো আগে থেকেই জানি। আমি উপজেলা প্রশাসনকে এগুলোর উন্নয়ন করতে একাধিকবার বলেছি। আমার কাছে আবেদন দিলে আমি দ্রুত এই বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশনা প্রদান করবো।

(বিএস/এসপি/অক্টোবর ০২, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test