E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

২২ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ, দুশ্চিন্তায় হাজারো জেলে 

২০২২ অক্টোবর ১০ ১৫:৫৪:২৯
২২ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ, দুশ্চিন্তায় হাজারো জেলে 

সঞ্জিব দাস, গলাচিপা : প্রজনন মৌসুম নির্বিঘ্ন করতে ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শুরু হয়েছে। তাই উপকূলীয় পটুয়াখালীর  গলাচিপার  হাজারও কর্মহীন জেলের কপালে পড়েছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। জেলেরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞাকালীন তাদের বেকার সময় কাটাতে হবে। এসময় জেলেরা যে প্রণোদনা পান তা অপ্রতুল। প্রণোদনার চাল বিতরণ হয় নিষেধাজ্ঞার শেষ দিকে। অভিযোগ রয়েছে প্রকৃত অনেক জেলেই পাননা সেই সুবিধা।

পূর্ণিমা ও অমাবস্যাকে কেন্দ্র করে ইলিশের ডিম ছাড়ার আসল সময়। এ সময় মা ইলিশ ডিম ছাড়ার জন্য সাগরের লোনা পানি থেকে নদীর মিঠা পানিতে আসে। আবার ডিম ছেড়ে সাগরের নোনা পানিতে চলে যায়। মা ইলিশের নির্বিঘ্নে আসা-যাওয়া নিশ্চিতের জন্য প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার।

শুক্রবার (৭ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশসহ সব ধরণের মাছ শিকার বন্ধ থাকছে। এই নিষেধাজ্ঞার সময় বেকার থাকতে হবে উপকূলের জেলেদের। বিকল্প কোন কর্মসংস্থান না থাকায় জেলেদের পরিবার নিয়ে ভীষণ কষ্টে দিন কাটাতে হবে। তাই উপকূলীয় পটুয়াখালীর গলাচিপার প্রায় ২১ হাজার জেলের কপালে পড়েছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ।

জেলেরা জানান, এ বছর মৌসুমের শুরুর দিকে সাগরে কিছু ইলিশ মিললেও নদী ইলিশ শূন্য। মাছ না থাকায় জেলেরা হয়েছে ঋণগ্রস্ত। ক্ষতির মুখে পড়েছেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা। গত সেপ্টেম্বরের শেষদিকে সাগর ও নদীতে ইলিশ ধরা পড়া শুরু হলেও নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা আবারো ঋণগ্রস্ত হবেন, বলছেন জেলেরা।

উপজেলার গোলখালী ইউনিয়ন জেলে জাকির হাওলাদার (মাঝ) বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা চলাকালে সরকার সহায়তা হিসেবে চাল দিলেও তা অধিকাংশ জেলে পান না। অনেকে জেলে নন, তারাও এ সহায়তা পাওয়ায় প্রকৃত জেলেরা বঞ্চিত হচ্ছেন। এ নিষেধাজ্ঞাকালীন ধার-দেনায় জর্জরিত উপকূলের জেলেরা।’

উপজেলার পানপট্টি মৎস্য ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে ১৪৮ দিন মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা। এসময়ে বেকার থাকতে হয় জেলেদের। মৎস্য বিভাগের তথ্যানুযায়ী, গলাচিপায় নিবন্ধিত জেলে সংখ্যা ১২ হাজার ৭০ জন। এর বাইরেও অনিবন্ধিত প্রায় ৮ হাজার ৯ শত ৩০ জেলে রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে অনিবন্ধিত এসব জেলেরা সরকারি প্রণোদনা বঞ্চিত।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জহিরুন্নবী বলেন, ‘সরকার ঘোষিত নিষিদ্ধ সময়ে ইলিশ আহরণ, কেনা-বেচা, পরিবহন, বাজারজাত ও বিনিময় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।’

তিনি জানান, এবার নিষেধাজ্ঞাকালীন নিবন্ধিত জেলে প্রতি ২৫ কেজি করে ভিজিএফ চাল দেওয়া হবে।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ, একোয়াকালচার এন্ড মেরিন সায়েন্স অনুষদের বিভাগীয় চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, অনিবন্ধিত জেলেদেরকে নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে আসা জরুরি। পাশাপাশি অন্য পেশার লোকদের জেলের তালিকা থেকে বাদ দেয়া প্রয়োজন। চালও বিতরণ করা উচিত সঠিক সময়ে।

(এসডি/এসপি/অক্টোবর ১০, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test