E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শৈলকুপায় নারীকে দিয়ে প্রতারণার ফাঁদ

অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ধান্ধা একটি চক্রের

২০২২ অক্টোবর ১১ ১৭:৫০:৫৯
অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ধান্ধা একটি চক্রের

শেখ ইমন, শৈলকুপা : ঝিনাইদহের শৈলকুপায় এক নারী কে দিয়ে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে একটি চক্র। উপজেলার বাহির রয়েড়া গ্রামে চক্রটি সামাজিক বিরোধ সহ হয়রানী ও প্রতারণার নানা কৌশল এঁটেছে । এই ফাঁদে পড়ে পুলিশের ভ’মিকাও বিতর্কিত হয়ে পড়েছে। বাহির রয়েড়া গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে মিরন ও কালাম বিশ্বাসের ছেলে সবুজ । মিরন কমিউনিটি ক্লিনিকে চাকুরী করে আর সবুজ একজন ড্রাইভার। 

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে তাদের বিরুদ্ধে নেই কোন অভিযোগ বা এলাকায় নেই কোন খারাপ কাজ-কর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ । তবে তাদের সামাজিক প্রতিপক্ষ গ্রামটির এক সহজ-সরল নারী কে দিয়ে ধর্ষণ, ভিডিও ধারণ এবং সেই নারীর কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মর্মে গুজব ছড়িয়ে দিয়েছে। এমনকি ঐ নারী কে দিয়ে শৈলকুপা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। এতে করে গ্রামটিতে সামাজিক বিরোধ, পরিবারে অশান্তি সহ হানাহানির আশংকা দেখা দিয়েছে ।

মিরন ও সবুজের সাথে আলাপ কালে তারা জানান, তাদের এক প্রতিবেশী সৌদি আরব প্রবাসী । আর তার স্ত্রী ও আত্মীয় স্বজন এলাকায় থাকে। এই প্রবাসী ও তার স্ত্রী-স্বজনদের সাথে মিরন ও সবুজ বা প্রতিবেশীদের কোন বিরোধ নেই। তবে হঠাৎ করে তারা জানতে পারে তাদের সামাজিক প্রতিপক্ষ একটি মহল সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী কে দিয়ে ধর্ষণ, ভিডিও ধারণ ও ৫লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়ার মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। অথচ স্পর্শকাতর এমন সব ঘটনার কোন তথ্য-প্রমাণই নেই। আচমকা বলা হচ্ছে গত রমজান মাসে ধর্ষণ করা হয়েছে, অথচ হাসপাতালে ভর্তি, ডাক্তারি পরীক্ষা বা কোন ধরণের আলামত নেই তাদের কাছে। এমন কি প্রতিবেশী বা কোন মানুষ এসব খবর আগে শোনেনি। আবার এসব ভিডিও ধারণের কথা বললেও সেসব তথ্য-ভিডিও নেই কারো কাছে। ঐ নারীর কাছ থেকে ৫লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়ার কথা বলা হলেও সেসবেরও নেই কোন প্রমাণ। সবশেষে এসব আজগুবি মিথ্যা তথ্য যখন স্থানীয় এলাকাবাসী স্বাভাবিকভাবে নেয়নি তখন ঐ নারী কে বাড়ি থেকে সরিয়ে দিয়েছে টাকা হাতিয়ে নেয়ার ধান্ধাকারী চক্রটি।

সৌদি প্রবাসী যুবকটির সেই স্ত্রী কে বাড়িতে না পেলেও তার শাশুড়ী ও স্বজনরা জানিয়েছেন চাঞ্চল্যকর তথ্য । তারা জানান, তাদের বাড়িতে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি, কোন ধর্ষণ, ভিডিও ধারণ বা ঐ যুবকদ্বয়ের বিরুদ্ধে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার কোন ঘটনা ঘটেনি। এমন গুজব ছড়িয়ে দেয়ায় তারা সামাজিকভাবে হেয় হচ্ছেন বলে জানান।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, কমিউনিটি ক্লিনিকে চাকুরী করা মিরনের পিতা আলাউদ্দিন একজন প্রবাসী। আর গ্রাম্য প্রতারক চক্রটি এই সুযোগই বেছে নিয়েছে। এমন সব অভিযোগ দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার পাশাপাশি সামাজিকভাবে হেয় করতেই এই ফাঁদ বলে জানা গেছে।

এদিকে থানা পুলিশের ভুমিকাও এই ঘটনায় বিতর্কিত হয়ে পড়েছে। পুলিশ দফায় দফায় গ্রামটিতে গিয়ে পায়নি ঐ নারীর অভিযোগের কোন সত্যতা। তবুও বারবার তাদের বাড়িতে গিয়ে নাজেহাল করার অভিযোগ উঠেছে, এছাড়া থানায় ডেকে হুমকি-ধামকি দেয়া হয়েছে, বলা হয়েছে আপোষরফা করে নিতে । গ্রাম্য প্রতারক চক্রের ফাঁদে পুলিশও পা দিয়েছে বলে গ্রামের সাধারণ মানুষ অভিযোগ করছে ।

মিরন ও সবুজের সামাজিক প্রতিপক্ষ বাহির রয়েড়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তিনি ঐ নারীর পক্ষে একটি চক্রের সাথে এমন প্রতারণায় মাঠে নেমেছেন। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করছেন সাইফুল ইসলাম। তিনি বলছেন, ঘটনাটি সত্য কি না মিথ্যা তা জানিনা। তবে তিনি বলেন ঐ নারী গ্রাম্য সম্পর্কে আত্মীয় হয়, সে আমার কাছে এমন অভিযোগ করেছে।

এসব ঘটনার ব্যাপারে থানার এসআই সাইফুল ইসলাম জানান, কাউকে হয়রানী করা হয়নি, একটা লিখিত অভিযোগের ঘটনায় এলাকায় যাওয়া হয়। ধর্ষণের অভিযোগ দেড় বছর আগের আর টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে যা বলা হয়েছে তার পক্ষে দালিলিক বা তথ্য-প্রমাণ মেলেনি, এ ঘটনায় থানায় কোন মামলা দায়ের হয়নি।

(এসআই/এসপি/অক্টোবর ১১, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

১০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test