E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ভৈরবে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগে স্বামী শ্বশুর দেবর আটক

২০২২ নভেম্বর ২৩ ১৫:০৯:৩৬
ভৈরবে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগে স্বামী শ্বশুর দেবর আটক

মিলাদ হোসেন অপু, ভৈরব : ভৈরব পৌর শহরের বাতাসাপট্টি এলাকায় তানজিনা ইসলাম (২৭) নামে এক গৃহবধূকে ৩ তলা বাসা থেকে ফেলে দিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিজ বাড়ির ৩ তলা বাসা থেকে স্বামী মাসুদুর রহমান তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্বামী, শ্বশুর ও দেবরকে আটক করা হয়েছে।  

গতকাল মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে ভৈরব বাজারের বাতাসাপট্টি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গৃহবধূ তানজিনার পরিবারের দাবী হত্যা, কিন্তু স্বামীর পরিবারের দাবী আত্মহত্যা। তানজিনা পৌর শহরের চণ্ডিবের এলাকার মৃত মাজহারুল ইসলামের মেয়ে ও অভিযুক্ত স্বামী মাসুদুর রহমান পৌর শহরের বাতাসাপট্টি এলাকার আবুল খায়ের’র ছেলে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালে দুপক্ষের সম্মতিতে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তানজিনাকে নানানভাবে অত্যাচার করছে স্বামী মাসুদুর রহমানসহ তার পরিবার। দীর্ঘ ১০ বছরের সংসারে ৫ বছরের ছেলে তাহমিদ ও ২ বছরের মেয়ে তাসলিম নামে দুটি সন্তান রয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১টায় পরিবারের কাছে এলে তারা অসুস্থ্য তানজিনাকে ডাক্তার দেখিয়ে দেয় বলে জানায় পরিবার। শ্বশুর বাড়ি ফিরে যাওয়ার পর দুপুর আড়াইটার দিকে পরিবার জানতে পারে তানজিনা ৩ তলা বারান্দা থেকে পড়ে গিয়েছে। পরে পরিবার খবর পেয়ে আনোয়ারা জেনারেল হাসপতালে গিয়ে আমার বোনকে মৃত দেখতে পায়। তারপর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসি।

এ বিষয়ে তানজিনার মাতা শাহনোয়ারা জানান, ১০ বছর আগে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। নানান অত্যাচার ও অভিযোগের পরও অনেক কষ্টে মেয়ে আমার সংসার করে যাচ্ছে। আমার ছেলেরা জোর করে আমার মেয়েকে এ কষ্টের সংসার করতে বাধ্য করেছে। আমি আমার ছেলেদেরকে বলেছি আমার মেয়েকে তারা মেরে ফেলবে। আজ তাই সত্যি হলো, আমার বুক খালি হলো। কান্নায় জর্জড়িত মা দাবী করে বলেন, আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে।

তানজিনার ভাই জামিল মিয়া জানান, আজ মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে আমার বোন তানজিনাকে চিকিৎসা করতে হাসপাতালে নিয়েছিলাম। কিন্তু তার স্বামী মাসুদুর রহমানকে বলে না আসায় সে ফোন দিয়ে হুমকি দিচ্ছে বাড়িতে গেলে তাকে মেরে ফেলবে। চিকিৎসা শেষে আমার বোনকে শ্বশুর বাড়িতে পাঠানোর পর ঘণ্টাখানেক পর জানতে পারি সে আত্মহত্যা করেছে। তার স্বামী আগেই আমার বোনকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল। আমার বোন আত্মহত্যা করতে পারেনা। আমার বোনকে হত্যা করা হয়েছে।

ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ইসমত তাহমিনা জানান, হাসপাতালে আনার পর তাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। তার মাথার মধ্যে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নাক-মুখ দিয়ে রক্ষা বের হচ্ছে।

স্বামী মাসুদুর রহমান বলেন, আমাকে না বলে বাবার বাড়িতে গিয়েছিল এ প্রশ্ন করায় আমার সাথে বাকবিত-া হয়। পরে সে রাগের মাথায় ৩ তলা বারান্দা থেকে লাফ দিয়ে নিচে পড়ে যায়। তখন আমি আমার বাবা ও ভাই তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার স্ত্রীকে মৃত ঘোষণা করে।

ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মাকছুদুল আলম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আমি নিজেই গিয়েছি এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তানজিনার স্বামী, শ্বশুর ও তার ভাইকে আমাদের হেফাজতে আনা হয়েছে। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(এম/এসপি/নভেম্বর ২৩, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test